বাংলাহান্ট ডেস্ক: পাকিস্তানে (Pakistan) ভাল নেই হিন্দুরা। কাঁটাতারের ওপার থেকে বারবার এপারে ভেসে এসেছে সংখ্যালঘু হিন্দুদের আর্তনাদ। তাঁরা সেখানে অত্যাচারিত, অবহেলিত। কখনও তাঁরা হন জবরদস্তি ধর্মান্তকরণের শিকার। কখনও বা অপহরণ ও জোর করে বিয়ে হয়ে যায় তাঁদের। কিন্তু পাক সরকারের এ নিয়ে কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই। আজ তাদের অর্থনীতির বেহাল অবস্থা। কিন্তু দেশে সংখ্যালঘুদের খারাপ অবস্থা নিয়ে কোনও সরকারেরই ভ্রুক্ষেপ ছিল না। তাই চলতি মাসের শেষে বড়সড় আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তানের হিন্দু সমাজ। সিন্ধ প্রদেশের সংসদের বাইরে প্রতিবাদে সরব হবেন তাঁরা।
৩০ মার্চ সিন্ধ প্রদেশে একটি আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন সেখানকার হিন্দু (Hindu) নেতারা। পাকিস্তান দারাওয়ার ইত্তেহাদ বা পিডিআই দ্বারা এই বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের অধিকার পাইয়ে দিতে লড়াই করছে পিডিআই। হিন্দুদের বিরুদ্ধে হওয়া নানা অত্যাচারের বিরুদ্ধেই এই আন্দোলনটি হবে বলে জানানো হয়েছে। দলের সভাপতি শিব কুচি জানিয়েছেন, সচেতনতার প্রচারে এর আগেও গোটা প্রদেশজুড়ে মিছিল বের করা হয়েছে।
পাকিস্তানে সংখ্যালঘুরা যে সমস্যার সম্মুখীন হন, তার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণের উদ্দেশ্যেই এই আন্দোলন হবে বলে সূত্রের খবর। সিন্ধ সংসদে জোরপূর্বক ধর্মান্তকরণ ও বিবাহের বিরুদ্ধে একটি বিল পাশ করানোর দাবিতে এই আন্দোলনে শামিল হবেন সেখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের অধিকাংশ হিন্দু সিন্ধ প্রদেশে থাকেন। এমনিতে শান্তিতে বসবাস করলেও মাঝে মধ্যেই উগ্রবাদীদের দ্বারা সাধারণের নিপীড়নের ঘটনা সামনে আসে। গত মাসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
সেখানে বলা হয়েছে, বিপুল সংখ্যক পাকিস্তানি হিন্দু ভারতে আসতে চান। কিন্তু পাকিস্তান সরকার তাঁদের বাধা দিচ্ছে। গত মাসে ১৯০ জন হিন্দুকে ওয়াঘা সীমান্তে আটকে দেয় পাক সরকার। তাঁদের ভারতে আসতে দেওয়া হয়নি। সিন্ধু প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় হিন্দু মেয়েদের জোরপূর্বক ধর্মান্তর ও বিয়ের প্রসঙ্গ ২০১৯ সালে বিধানসভায় তোলা হয়েছিল। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এই অত্যাচার রুখতে একটি বিল পাশ করানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু সেই বিল আজও পাশ হয়নি।
পাকিস্তানে বসবাসকারী হিন্দুদের অধিকাংশই গরিব। প্রশাসনিক স্তরেও তাঁদের তেমন প্রতিনিধিত্ব নেই। একটি রিপোর্ট অনুসারে, পাকিস্তানে প্রায় ২২ লক্ষ হিন্দুর বাস। যা পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১.১৮ শতাংশ। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে আগেও প্রশ্নের মুখে পড়েছে পাকিস্তান। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ৭০ শতাংশ বেশি নাবালিকার জোরপূর্বক ধর্মান্তর হয়। ২০২০ সালে সেখানে ১৫ জনের জোরপূর্বক ধর্মান্তর হয়েছিল। ২০২২ সালে সেটি বেড়ে হয় ৬০। প্রতি বছর এক হাজারেরও বেশি মেয়েকে অপহরণ করে ধমান্তর করা হয়। বিগত বছরগুলিতে সংখ্যালঘুদের প্রতি অত্যাচার অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে।