বাংলাহান্ট ডেস্ক : যাকে বলে একেবারে জলজ্যান্ত ‘মোটিভেশনের টনিক’। আজ দুর্গাপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে ঠিক সেই কাজটাই করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আজ তিনি বলেন ‘দরকারে নিজের মাথায় করে ইট বইবেন। আমিও নিজের মাথায় ইঁট বইয়ে গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করেছিলাম।’ পশ্চিম ও পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে এমনই বক্তব্য রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি বলেন, ‘জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতি, আপনারা ১৫টি কমিশন থেকে টাকা পান। গ্রামীণ রাস্তা তৈরির জন্য বরাদ্দ টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে এই অর্থই আপনারা গ্রামীণ রাস্তা তৈরিতে কাজে লাগান।’
কী বললেন মমতা?
রাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয় বাংলার বাড়ি এবং গ্রামীণ রাস্তা নির্মাণের জন্য বরাদ্দ অর্থ বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। তাই এই প্রকল্পে নতুন করে অর্থ বরাদ্দ করা সম্ভব নয়। এদিন সেই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যানরা শুনুন, গ্রামীণ রাস্তা তো তৈরি করতেই হবে। ১৫ টি কমিশন থেকে যে অর্থ পান তার ৫০ শতাংশ রাস্তা তৈরিতে কাজে লাগান। বাকি প্রকল্প আমরা দেখে নেব। গ্রামীণ যদি রাস্তা খারাপ থাকলে তাহলে কেউ ভোট দেবে না। ৫০ শতাংশ টাকা সেখানে খরচ করুন। গ্রামের রাস্তা যদি ভালো থাকে, তাহলে মানুষ খুশি হয়ে ভোট দেয়। দরকার পড়লে নিজের মাথায় করে ইট বইবেন। সাধারণ মানুষের জন্য এই কাজ করে মন ভালো থাকবে। আমি নিজেও একটা সময় ইট বয়ে গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করেছিলাম। প্রয়োজনে আমাকে ডাকবেন আমি ইট বইতে আসব।’
পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Election 2022) আগে উন্নয়নই পাখির চোখ?
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গ্রামের সার্বিক উন্নয়নকেই পাখির চোখ করেছে তৃণমূল (TMC)। এই অবস্থায় রাস্তা নির্মাণের ক্ষেত্রে মমতার উপদেশ বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। কেন্দ্র আবাস যোজনার অর্থ বন্ধ করে দিয়েছে। এই বিষয় নিয়ে অভিযোগও জানিয়ে রাজ্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) ছবি না থাকলে আবাস যোজনায় (Pradhan Mantri Awas Yojana) টাকা দেবে না কেন্দ্র। মোদি সরকারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ অনেক আগেই করেছে রাজ্য। এদিনের জনসভায় এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশও করেন মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যেই জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতিগুলিতে রাস্তা নির্মাণের ক্ষেত্রে বরাদ্দ অর্থ ব্যবহারের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পঞ্চায়েত নির্বাচন সামনে এলে কোনও আর কোনও কাজ করা সম্ভব হবে না। সেই কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি।
এগিয়ে আসছে পঞ্চায়েত নির্বাচন?
তাহলে কি পঞ্চায়েত নির্বাচন আসন্ন? সরসারি এই বিষয়ে কথা না বললেও কিছুটা ইঙ্গিত তিনি দিয়ে রাখলেন বইকি। বুধবার দুর্গাপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে যা বললেন তাতে সেই জল্পনাই উস্কে গিয়েছে। এদিন পঞ্চায়েতের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কাজগুলো ঝটপট শেষ করুন, নইলে ইলেকশনে ললিপপ খাবেন। পঞ্চায়েত ইলেকশন যে কোনও দিন ঘোষণা হয়ে যাবে।’ মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে নির্বাচন এগোনোর সম্ভাবনা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য তৃণমূল তথা শাসক দলের যে প্রস্তুতি রয়েছে তা বিজেপি বা অন্য কোনও বিরোধীদের নেই। সেই সুযোগটাই তৃণমূল নিতে চাইছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।