বাংলাহান্ট ডেস্ক : পঞ্চায়েত অফিস (Panchayat Office) থেকে টোটো করে বাড়ি ফিরছিলেন প্রধান (Panchayat Pradhan) ও তাঁর ভাই। শুক্রবার সন্ধ্যা তখন ৬টা হবে। টোটোর চাকা একটু গড়াতেই ঘিরে ধরে পাঁচ-ছয় জনের একটি দল। সকলেই নাকি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ছিল। প্রত্যকের হাতেই বাঁশ, লাঠি। প্রথমে টোটো উল্টে ফেলে দেয়। তরপর গাড়ি থেকে বের করে পঞ্চায়েত (Burdwan) প্রধান ও তাঁর ভাইকে বেধড়ক মারধর করা হয়। ভর সন্ধ্যেবেলার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের গলসি এলাকায়। নিগৃহীত প্রধান জানান, তাঁর এলাকাতেই থাকেন অভিযুক্তরা। নানা দুষ্কর্মের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু হঠাৎ তাঁকে কেন মারধর করা হল, তা বুঝতে পারছেন না তিনি। গলসি-১ ব্লকের উচ্চগ্রাম গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা এটি।
উচ্চগ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান মনসা বাউরি অভিযোগ করেন তাঁকে ও তাঁর ভাই সুনীল বাউরিকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ একদল যুবক মদ্যপ অবস্থায় মারধর করে। ভাই সুনীলের টোটোয় চেপেই পঞ্চায়েত থেকে ফিরছিলেন মনসা। মাঝ পথে টোটো আটকায় কয়েকজন। টোটোটি রাস্তায় উল্টে ফেলে দেওয়া হয়। তারপর লাঠি, বাঁশ, ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাঁদের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ জানান পঞ্চায়েত প্রধান মনসা।
হঠাৎ চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ছুটে আসেন এলাকার লোকজন। তাঁরাই মনসা ও সুনীলকে দুষ্কৃতিদের হাত থেকে উদ্ধার করেন। স্থানীয় পুরষা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। মনসা বাউরি বলেন, ‘শরীরটা আজ ভাল ছিল না। তাই ছোট ভাইকে বলি টোটো নিয়ে আসতে। টোটোয় ফেরার পথেই কিছু দুষ্কৃতী আমার উপর হঠাৎ হামলা চালায়। ওরা সব মদ খেয়ে ছিল। মাঝ রাস্তায় আমাকে ফেলে বেধড়ক মারে। আমার জামা পর্যন্ত ছিঁড়ে দেয়। আমার হাতে থাকা ব্যাগটাও কেড়ে নিয়েছে। সঙ্গে কিছু টাকা ছিল সেসবও ওরা নিয়ে নিয়েছে। ইট, লাঠি নিয়ে আমাকে মারধর করে ওরা। ভাইয়েরও আঘাত লেগেছে। একেবারে রাস্তায় ফেলে মারল। কেন মারল সেটাই তো বুঝতে পারছি না।’
মনসার ভাই সুনীল বাউরি বলেন, ‘দাদা অসুস্থ ছিল বলে টোটো নিয়ে পঞ্চায়েতে আনতে যাই। মাঝ রাস্তায় দেখলাম কয়েকজন আমাকে, আমার দাদাকে মারধর শুরু করে। ব্যাগ, টাকা পয়সা ছিনতাই করে নিয়ে পালায়। ওরা রাস্তায় আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিল। মনে হয় সবটা পরিকল্পনা করেই ঘটিয়েছে। কিন্তু কেন আমাদের উপর ওদের রাগ, সেটাই একনও পর্যন্ত বুঝলাম না।’ অভিযুক্ত যুবকরা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন বলেই দাবি করেন মনসা বাউরি।
ইতিমধ্যেই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান। তিনি দাবি করেন, অভিযুক্ত যুবকদের কয়েকজনকে চেনেন তিনি। তারা পাশের গ্রামেই থাকে। কিন্তু কী কারণে তারা হঠাৎ এমন করল তা জানা নেই তাঁর। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।