পড়াশোনায় পেয়েছেন গোল্ড মেডেল! কিন্তু বাজিমাত ব্যবসাতে, ৩৫ কোটির সাম্রাজ্য গড়ে চমকে দিলেন পঙ্কজ

Published on:

Published on:

Pankaj Mishra's Success Story will amaze you.

বাংলাহান্ট ডেস্ক: পঙ্কজ মিশ্রর জীবনে সাফল্যের গল্প (Success Story) কোনও সিনেমার চিত্রনাট্যের চেয়ে কম নয়। গোরখপুরের এক সাধারণ পরিবারে জন্ম নেওয়া পঙ্কজ ছোটবেলায় জীবনের নানা অভাব-অনটনের মধ্যে বেড়ে উঠেছিলেন। পড়াশোনায় প্রথম দিকে সহপাঠীদের থেকে পিছিয়ে পড়ার কষ্টই তাঁকে ভেতর থেকে বদলে দেয়। সেই আত্মপ্রেরণাই তাঁকে করে তোলে একজন সমস্যার সমাধানকারী, একজন প্রকৃত ‘প্রবলেম সলভার’। পরবর্তীতে এম.টেক কোর্সে তিনি স্বর্ণপদক (গোল্ড মেডেল) অর্জন করেন এবং জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেন।

পঙ্কজের অনন্য সফলতার কাহিনি (Success Story):

১৯৯৫ সালে গোরখপুর থেকে দিল্লিতে আসেন পঙ্কজ ও তাঁর পরিবার। তখন তাঁদের থাকার জায়গা ছিল নির্মাণাধীন এক ভবনের ছোট একটি ঘর। পাঁচ নম্বর শ্রেণিতে পড়ার সময় প্রথমবার চকলেট খাওয়ার অভিজ্ঞতা হয় তাঁর। এই অভাবের মধ্যেই বড় হয়ে ওঠেন তিনি। স্কুলজীবনের ব্যর্থতা তাঁকে অনুপ্রাণিত করে নতুনভাবে চিন্তা করতে। মায়ের পরামর্শে তিনি নিজের পড়ার প্রক্রিয়া বদলান—শেষ বেঞ্চে না বসে সামনের বেঞ্চে বসা, নিয়মিত অধ্যয়ন এবং মনোযোগী অনুশীলনই তাঁকে ধীরে ধীরে সাফল্যের পথে নিয়ে যায়। কলেজের প্রথম বছরের ব্যর্থতার পরই আসে বিশাল পরিবর্তন। তাঁর ফলাফল ক্রমে উন্নত হতে থাকে এবং শেষ পর্যন্ত এম.টেক পর্যায়ে গোল্ড মেডেল জিতে নেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতা তাঁকে শিখিয়েছিল—সাফল্য (Success Story) কেবল পরিশ্রমে নয়, সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই অর্জিত হয়।

আরও পড়ুন:অভিষেকের এলাকায় পুজো উদ্বোধনে যাচ্ছেন শুভেন্দু, নিরাপত্তা দেবে রাজ্য পুলিশ, কড়া নির্দেশ হাই কোর্টের

শিক্ষাজীবনের এই দৃঢ় ভিত্তি ও বিশ্লেষণক্ষম মনোভাব নিয়ে পঙ্কজ মিশ্র যোগ দেন লাভা ইন্টারন্যাশনাল এবং ডেলিভারি (Delhivery)–এর মতো শীর্ষস্থানীয় সংস্থায়। কিন্তু অল্প দিনেই তিনি বুঝতে পারেন, নিজের পরিচয় ও স্বপ্নের বাস্তবায়ন কেবল অন্যের সংস্থায় কাজ করে সম্ভব নয়। ২০১৯ সালে স্ত্রী ও অবসরপ্রাপ্ত বাবার সহায়তায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেন PND Global Logistics। প্রথম বছরে যার টার্নওভার ছিল মাত্র ৫১ লক্ষ টাকা, সেটিই কয়েক বছরের মধ্যে বেড়ে দাঁড়ায় ৩৫ কোটি টাকায়। সংস্থার শাখা ছড়িয়ে পড়ে দেশ-বিদেশে (Success Story)।

তবে এখানেই থেমে থাকেননি পঙ্কজ। তিনি এমন এক ব্যবসা শুরু করতে চেয়েছিলেন, যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে যুক্ত এবং যেখানে তাঁর অপারেশনাল দক্ষতা কাজে লাগবে। সেই চিন্তা থেকেই ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জন্ম নেয় Bakeats—একটি নতুন বেকারি ব্র্যান্ড। এর মূল লক্ষ্য ছিল সাধারণ মানুষের কাছে প্রিমিয়াম মানের খাবার সুলভ দামে পৌঁছে দেওয়া। বেকারি শিল্প সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে তিনি পরামর্শ নেন এফএমসিজি খাতের অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ ড. গিরীশ গুপ্তার কাছ থেকে। Bakeats-এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এর মান ও নাগাল—মাত্র ১০ টাকার প্যাকেটেও আকর্ষণীয় প্যাকেজিং ও স্বাদের গ্যারান্টি। পাশাপাশি রাগি ও জোয়ার-ভিত্তিক সুগার-ফ্রি হেলদি স্ন্যাকস বাজারে আনার পরিকল্পনাও চলছে (Success Story)।

Pankaj Mishra's Success Story will amaze you.

আরও পড়ুন:মাঝ আকাশে জ্বালানি ভরেই শত্রু সংহার! ফাইটার জেটের শক্তি বৃদ্ধিতে এবার বড় পদক্ষেপ ভারতীয় বায়ুসেনার

মানের সঙ্গে কোনও আপস না করার মনোভাব থেকে পঙ্কজ অন্য অনেক ব্র্যান্ডের মতো থার্ড-পার্টি ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের পরিবর্তে সম্পূর্ণ দেশীয় যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে নিজস্ব কারখানায় পণ্য উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেন। বেকারি ব্যবসার লক্ষ্য আগামী ছয় মাসের মধ্যেই ব্রেক-ইভেন পয়েন্টে পৌঁছানো এবং মাসিক ৫ কোটি টাকার বেশি আয় নিশ্চিত করা। আগামী তিন বছরে ৪০০ কোটি টাকার রাজস্ব অর্জনই তাঁর বড় লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলে ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক মজবুত করা হয়েছে। খুব শিগগিরই ব্লিংকিট ও জেপ্টোর মতো অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এই ব্র্যান্ডের পণ্য বাজারে পৌঁছবে (Success Story)।

পঙ্কজ মিশ্রর গল্প প্রমাণ করে, ছোট থেকে শুরু করলেও নিষ্ঠা, সঠিক প্রক্রিয়া ও অদম্য মনোবল থাকলে বড় সাফল্য (Success Story) গড়ে তোলা সম্ভব। তাঁর জীবনই আজ ভারতের তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য এক প্রেরণার প্রতীক ।