বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রথম রাতে জোটেনি খাট কিংবা কোন চেয়ার! স্বাভাবিকভাবেই নাকতলার বাড়ির বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে প্রেসিডেন্সি জেলে (Presidency Jail) কোনোমতে শুয়ে বসে আবার কখনো এক প্রকার ঝিমিয়েই কাটাতে হয় প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee)। অপরদিকে, কিছুটা খোলামেলা জায়গা পেলেও ঠিকমতো ঘুম হয়নি পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের। অবশেষে গতকাল প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রীর জন্য একটি খাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেল সূত্র মারফত এ খবর মিলেছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি এসএসসি দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা। অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি নগদ অর্থ এবং একাধিক সোনা গয়না উদ্ধার হওয়ার পর তাদেরকে হেফাজতে নেয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বিগত ১২ দিন ইডি হেফাজতে থাকার পরে অবশেষে পার্থ ও অর্পিতাকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। বর্তমানে দুই সপ্তাহের জেল হেফাজতে রয়েছেন তারা। স্বাভাবিকভাবেই বিলাসবহুল জীবন ছেড়ে সাধারণ বন্দিদের মতোই দিন কাটছে পার্থর। প্রথম দিন জেলে প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিবের জন্য বরাদ্দ ছিল না কোন চেয়ার কিংবা খাট! ফলে ঘুমানো তো দূরের কথা, কমোডের ওপরে বসে এক প্রকার ঝিমিয়েই রাত কাটে তাঁর।
সূত্রের খবর, এরপরেই গতকাল জেল হাসপাতালের চিকিৎসককে ডেকে পাঠান পার্থ। চিকিৎসককে পার্থ জানান, “মেঝেতে একবার বসে পড়লে আর উঠতে পারছি না। আমার জন্য অন্তত একটি চেয়ার কিংবা খাট বরাদ্দ করা হোক।” জেল সূত্রের খবর, এরপর চিকিৎসকের সুপারিশ অনুযায়ী প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর জন্য একটি খাদ বরাদ্দ করা হয়। প্রসঙ্গত, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশের সেলেই রয়েছে ছত্রধর মাহাতো এবং অন্যান্য একাধিক কুখ্যাত মাওবাদী নেতারা। তবে এখনো পর্যন্ত কারো সাথেই দেখা হয়নি পার্থ। গতকাল কেবল নিজের আইনজীবীর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। পরবর্তীতে শুয়ে বসেই সারাদিন কাটে পার্থর।
উল্লেখ্য, ইডি হেফাজতে তুলনামূলক ভাবে ভালো খাবার দাবার পেলেও প্রেসিডেন্সি জেলে এক প্রকার চা-পাউরুটি খেয়েই দিন কাটছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। গতকাল জল খাবারে চা ও পাউরুটি দেওয়ার পর দুপুরে ভাত, ডাল এবং সবজি পৌঁছে দেওয়া হয় পার্থর সেলে। তবে এক্ষেত্রে দুপুরে ভাত খাওয়ার পরিবর্তে ফের একবার চা-পাউরুটি খেয়েই ক্ষুধা মেটান প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী।
অপরদিকে, অর্পিতার পরিস্থিতিও তথৈবচ। এক্ষেত্রে আদালতের তরফ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা রক্ষীর ব্যবস্থা করা হলেও জেল সূত্রের খবর, সারাদিন এক প্রকার কান্নাকাটি করেই দিন কাটছে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের। মিনারেল ওয়াটার ছাড়া আর অন্য কোন খাবার মুখে উঠছে না তাঁর। ফলে সবমিলিয়ে প্রেসিডেন্সি জেলে আগামী সময় পার্থ-অর্পিতা দুজনের জন্যই যে কঠিন হতে চলেছে, তা বলা বাহুল্য।