বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একদিকে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। আবার অপরদিকে গরু পাচার মামলায় ১০০ দিনের উপর সময় ধরে জেলবন্দি অবস্থায় রয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। এদিন দুটি পৃথক মামলায় আদালতে পেশ করা হয় দুজনকেই। তবে এক্ষেত্রে সমস্যার সূরাহা হওয়া তো দূরের কথা, বরং অস্বস্তি আরো বহু গুনে বৃদ্ধি পেল তাদের।
প্রথমে আসা যাক, নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায়। সম্প্রতি এই মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে তাঁর ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি নগদ অর্থ এবং একাধিক সোনা গয়না মেলার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা বাংলায়। পরবর্তীতে তাদের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির খোঁজ মেলায় গ্রেফতার করা হয় দুজনকেই।
এই ঘটনায় বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে প্রেসিডেন্সি জেলে দিন কাটছে পার্থ-অর্পিতার। বারংবার জামিনের আবেদন করে মেলেনি স্বস্তি। এর মাঝে এদিন নগর দায়রা আদালতে পেশ করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতাকে। এক্ষেত্রে জামিনের আর্জি করার পরিবর্তে তদন্ত কত দূর অগ্রসর হয়েছে, এদিন তা নিয়েই প্রধানত প্রশ্ন করেন আইনজীবীরা।
আদালত সূত্রের খবর, উক্ত প্রশ্নের জবাবে ডাকাতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন ইডির আইনজীবী। তিনি বলেন, “যদি কেউ ডাকাতি করে, তাহলে সেটা ‘শিডিউল অফেন্স’। তবে ডাকাতি করে যদি এদিক থেকে ওদিক চলে যাওয়া হয়, তাহলে ২৪ ঘন্টায় তদন্ত সম্ভব হয় না।” পরবর্তীতে মানিক ভট্টাচার্য, সুবীরেশ ভট্টাচার্যদের মতো গ্রেফতার হওয়া শিক্ষা আধিকারিকদের সঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের যোগসূত্রের বিষয়টি তুলে ধরা হয় এবং এদিন দুপক্ষের দাবি-দাওয়া শোনার পর অবশেষে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী এবং অর্পিতা দুজনকেই ১৪ ই ডিসেম্বর পর্যন্ত হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।
অপরদিকে, গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে একের পর এক কাণ্ডে অস্বস্তি বেড়ে চলেছে অনুব্রত মণ্ডলের। একদিকে যখন অনুব্রত এবং তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি এবং জমির সন্ধান পেয়েছে তদন্তকারী অফিসাররা, আবার অপরদিকে সম্প্রতি লটারি কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে তাদের। এর মাঝেই কয়েকদিন পূর্বে তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করে ইডি। ইতিমধ্যেই তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়ে চলেছে।
তবে এ সকল অস্বস্তি মাঝেই এদিন সুপ্রিম কোর্টে অনুব্রত মণ্ডলের হয়ে মামলা লড়েন আইনজীবী কপিল সিব্বল। এক্ষেত্রে উক্ত মামলায় মূল অভিযুক্ত এনামুল হক এবং সতীশ কুমার নামে অপর এক অভিযুক্তকে জামিন দেওয়া হলেও অনুব্রতকে কেন ছাড় দেওয়া হচ্ছে না, সেই প্রশ্নটি তোলেন তিনি।
তবে সূত্রের খবর অনুযায়ী, এদিন অনুব্রত মামলায় সিবিআইকে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। এক্ষেত্রে ৯ ই ডিসেম্বরের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর। ফলে সব মিলিয়ে অস্বস্তি যে আরও বহুগুনে বৃদ্ধি পেল পার্থ-অনুব্রতর, তা বলাবাহুল্য।