বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত একটি নাম পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক হিসেবে টানা একাধিকবার নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি তিনি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন। ২০২২ সালের ২৩ শে জুলাই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে সম্প্রতি তিনি জেল মুক্তি পেয়েছেন। বর্তমান সময় বিভিন্ন মামলা নিয়ে রাজনৈতিক চর্চার কেন্দ্রে রয়েছে তিনি। এর মধ্যে অনেকেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতেই আজকের এই প্রতিবেদন। আসুন জেনে নিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা কতটা।
কিশোর কুমারের কণ্ঠে গাওয়া ‘আমি দুঃখকে সুখ ভেবে বইতে পারি’, এই গান আজও বাঙালির প্রিয়। গানের এই কথাগুলির রচয়িতা ছিলেন গীতিকার শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে গত কয়েক বছরে তাঁর নাম শুধু গানের সূত্রে নয়, অন্য এক কারণে বারবার উঠে এসেছে রাজ্য রাজনীতিতে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) আদালতে দাঁড়িয়ে নিজের বংশপরিচয় জানাতে গিয়ে শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করেন। সেই সূত্র ধরেই উঠে আসে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও তা নিয়ে বিতর্কের কথা।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) বিশিষ্ট গীতিকার শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাগ্নে?
আদালতে একাধিকবার পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) দাবি করেছেন, তিনি বিশিষ্ট গীতিকার শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাগ্নে। নিজের বংশগৌরবের কথা বলতে গিয়ে মামার নাম তুলে ধরেছেন তিনি। জামিনের পক্ষে সওয়াল করতেও প্রয়াত মামার প্রসঙ্গ এনেছেন পার্থ। তাঁর বক্তব্য, তিনি কোনও অন্যায় করেননি।
হলফনামায় কী জানিয়েছেন পার্থ?
বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) জন্ম ১৯৫২ সালের ৬ অক্টোবর। নির্বাচনী হলফনামায় নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন –
- ১৯৭০ সালে নিউ আলিপুর মাল্টিপার্পাস স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন তিনি।
- এরপর আশুতোষ কলেজে ইকোনমিকস অনার্সে ভর্তি হয়ে ১৯৭৩ সালে স্নাতক হন।
- ১৯৮১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ পাশ করেন।
- এমবিএ করার পাশাপাশি আইন নিয়ে পড়াশোনা করে ১৯৮২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এলএলবি সম্পূর্ণ করেন।
- কয়েক বছর পরে ব্রিটেনের ইন্ডাস্ট্রিয়াল সোসাইটি থেকে পিএমআর ডিগ্রি অর্জন করেন।
- ২০১৫ সালে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইকোনমিকসে ডক্টরেট করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) শিক্ষাগত যোগ্যতা নজরকাড়া। তবে তিনি শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন পিএইচডি করা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠে। বিরোধীরাও সেই সময় বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি।

আরও পড়ুনঃ দায় কার? শতদ্রু বললেন পুলিশ, রাজ্য বলল কেন্দ্র, মেসি-কাণ্ডে তদন্ত নিয়ে রায় স্থগিত করল হাই কোর্ট
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর শিক্ষা দপ্তর থেকে তাঁকে সরানো হলেও মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু ২০২২ সালের ২২ জুলাই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে ইডি। প্রায় ২ বছর ৩ মাসের বেশি সময় জেলে থাকার পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। জেলে থাকার সময় আদালতে বারবার মামা শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিতে দেখা গিয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে (Partha Chatterjee)। মামার প্রসঙ্গ টেনে তিনি জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন এবং দাবি করেন, তিনি কোনও অন্যায় কাজে যুক্ত নন।












