জেলের মধ্যে ‘পার্থ দা” বলে ডাক ছত্রধর মাহাতর, ঘুরেও তাকালেন না প্রাক্তন মন্ত্রী

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ছত্রধর মাহাত (Chhatradhar Mahato) এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। নাম দুটোর মধ্যে কী যুগ সূত্র সেটা হয়তো অনেকেই জানেন না। সিপিএম-এর শাসনের (CPM Period) একেবারে শেষের দিকের ঘটনা। তখন অগ্নিগর্ভ জঙ্গলমহল। দিন প্রতি দিন সিপিএম নেতাদের তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করছে মাওবাদীরা। সেই সময়ে লালগড় এলাকায় পুলিশি দমন নীতি বিরোধী জনসাধারণের কমিটির নেতা ছিলেন ছত্রধর মাহাত (Chhatradhar Mahata)। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলতেন তৎকালীন বিরোধী দলনেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। ভাগ্যের কি নিমর্ম পরিহাস। এই মুহুর্তে দু’জনেই বন্দি প্রেসিডেন্সি জেলে।

জেল সূত্রে জানা যাচ্ছে, দু’দিন আগেই দুপুরবেলা পার্থকে সেল থেকেই ডাকেন ছত্রধর, ‘পার্থ দা…!’ কিন্তু ছাত্রধরের দিকে ফিরেও তাকাননি পার্থ। প্রত্যেক দিনই দুপুরবেলা খাওয়ার পর সেলের বাইরে পার্থবাবুকে কিছুক্ষণ হাঁটানো হয়। এক জায়গায় বসে থেকে থেকে তৃণমূল নেতার পা ফুলে যাচ্ছিল। সেই সময়েই ছত্রধর তাঁকে ডাকেন। কিন্তু শুনেও শুনলেন না পার্থ।

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে ছত্রধর যখন জেল থেকে বেরিয়েছিলেন, সেই সময়ে পার্থই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন বলে দলীয় সূত্রে শোনা যাচ্ছে। যদিও সেই সময় পার্থ ছিলেন ঝাড়গ্রামের তৃণমূল পর্যবেক্ষক। ছত্রধরকে আবার রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনার পিছনে ছিলেন পার্থই। ২০২০ সালে তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতেও জায়গা পান ছত্রধর।

বামফ্রন্টের সময়ে লালগড়, বিনপুর-সহ জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ এলাকায় একরকম সমান্তরাল শাসন চালাচ্ছিলেন ছত্রধর মাহাতো। মাওবাদীদের ফ্রন্টাল অর্গানাইজেশন হিসেবে কাজ করছিল, পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনসাধারণের কমিটি। দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন পুলিশ গ্রেফতার করে ছত্রধরকে। সেই সময়ে বিরোধী দলনেতা পার্থ বলেন, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় এলেই তাঁকে মুক্তি দেবে। কিন্তু তৃণমূল ক্ষমতায় আসার প্রায় আট বছর পর জেল থেকে মুক্তি পান ছত্রধর। বছর তিনেক বাইরে থাকলেও তাঁর বিরুদ্ধে সিপিএম নেতা প্রবীর মাহাতোকে খুন ও রাজধানী এক্সপ্রেসকে পণবন্দি করার পুরনো মামলায় নতুন করে তদন্ত শুরু করে এনআইএ। সেই মামলায় আবারও গ্রেফতার করা হয়। তারপর এখনও পর্যন্ত জেলেই রয়েছেন। তারপর হঠাৎই সেদিন দেখা পুরনো বন্ধুর সাথে। কিন্তু বন্ধুর ডাক এড়িয়েই গেলেন পার্থ।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর