বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর থেকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) জেলবন্দি তিনি। বর্তমানে ঠিকানা হয়েছে প্রেসিডেন্সি জেল। মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও সেই প্রথম থেকে নিয়ে এখনও সমস্যা যেন পিছু ছাড়ছেনা রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee)। নিত্যদিন জেলের ভিতর ভীষণ অত্যাচারের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাকে। জানা গিয়েছে, গ্রেফতার হওয়ার পর এককালের হেভিওয়েট এই নেতাকে জেল কর্তৃপক্ষ শৌচকর্মের জন্য কমোডের ব্যবস্থা করে দিলেও বর্তমানে সেই পাট চুকেছে। এখন সেই সুবিধা আর পান না প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী।
বয়স হয়েছে পার্থবাবুর। হাঁটু, কোমরে পুরোনো ব্যথা। এবার কমোড না মেলায় হাটু মুড়ে শৌচকর্ম করার কারণে কোমরের ব্যথাটা মাথা চারা দিয়ে উঠেছে! অন্যদিকে, ছিচকে চোরেদের টিপ্পনি থেকে শুরু করে জঙ্গি মুসার আক্রমণ। দিনের পর দিন বহু মানসিক অশান্তি-অত্যাচারেরও মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাকে। নিজের ঘনিষ্ঠ মহলে নাকি এমনই কষ্টের কথা জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
শিক্ষক কেলেঙ্কারি মামলায় সোমবার আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে পেশ করা হয় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। আদালত চত্বরে তার গাড়ি ঢুকতে না ঢুকতেই তাকে ঘিরে সাংবাদিকদের ভীড়। আর প্রতিবারের মতো এদিনও একাধিক সংবাদমাধ্যমের সামনে একাধিক মন্তব্য করলেন তিনি। আবার শুনানির শেষে বেরনোর সময় তিনি নিজেই সাংবাদিকদের জানান, জেলের ভিতরে থাকতে অসম্ভব অসুবিধা হচ্ছে তার। কাতর ভাবে পার্থবাবু বলেন, ‘‘অসম্ভব, অসম্ভব, অসম্ভব অসুবিধা হচ্ছে! জেলে যে ভাবে থাকার কথা, থাকতে পারছি না।”
পার্থর এই মন্তব্যের পর জল্পনা শুরু হয়েছে সর্বত্র। ঠিক কোন যন্ত্রণা, অত্যাচারের মুখোমুখি হচ্ছেন তিনি? উঠছে প্রশ্ন। পার্থর শুভাকাঙ্খী কেউ কেউ আবার বলছেন জেলের ভেতর অকথ্য অত্যাচার চালানো হচ্ছে তার ওপর। সেকথাই আজ বলতে চেয়েছেন তিনি। এমন কী জেল সুপার তাকে বসার জন্য চেয়ার অবধি দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ। প্রসঙ্গত এই প্রথম নয়, এর আগেও বহুবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিজের শারীরিক অসুস্থতার কথা বলতে শোনা গিয়েছিল।
এদিন আদালত থেকে বেরোনোর সময় নিজের বুক ফাটা কষ্টের কথা বললেও, আদালতে ঢোকার সময় অবশ্য বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিলেন তিনি। এই যেমন, গাড়ি থেকে নামার সময় একগাল হাসি পার্থবাবু নিজেই সাংবাদিকদের বলেন, “আমি শুধু একটা কবিতার লাইন বলব।’’ ‘মসি লিপি দিল তবুও ঢাকিলো না ছবি। অগ্নি দিল তবুও গলিল না সোনা’, আদালতে ঢোকার সময় কবিগুরুর কবিতার এই দুটি লাইনই শোনা গিয়েছিল পার্থবাবুর গলায়।
পাশাপাশি এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) নিয়েও বড় মন্তব্য করেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। মূলত অভিষেকের প্রশংসা শোনা গেল তার মুখে। প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্যের সকল মানুষদের সঙ্গে জনসংযোগ গড়ে তুলতে নবজোয়ার কর্মসূচী শুরু করেছেন তৃণমূল সেকেন্ড ইন কমান্ডো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গেই এদিন পার্থ বলেন, ‘‘১০০ শতাংশ সফল এই কর্মসূচি।’’ শুধু তা-ই নয়, পার্থর সংযোজন, ‘‘নবজোয়ারে জনজোয়ার এসেছে।’’