বাংলাহান্ট ডেস্ক: বঙ্গ রাজনীতিতে অন্যতম এক জনপ্রিয় এবং বিতর্কিত নাম মদন মিত্র। সেই মদন মিত্ররই এক বক্তব্যকে ঘিরে বর্তমানে তোলপাড় রাজ্যের ঘাসফুল শিবির। এবার সেই বক্তব্যেরই কড়া জবাব দিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
সম্প্রতি দলের শৃঙ্খলা রক্ষার ব্যাপারে বেশ কিছু বক্তব্য রাখেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান যে দলের কারও অসুবিধা হলে তা দলকেও জানাতে হবে, স্যোশাল মিডিয়া বা সংবাদমাধ্যমে নয়। এরপরই কার্যতই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করতে দেখা যায় কামারহাটির বিধায়ক তথা তৃণমূলের ‘কালারফুল বয়’ মদন মিত্রকে। বরাবরের মত এবারেও তাঁর অস্ত্র ছিল ফেসবুক লাইভই। তবে এবার সেই বক্তব্যের কড়া জবাব দিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
২২ মিনিটের একটি ফেসবুক লাইভে শনিবার মদন মিত্র বলেছিলেন, ‘ দল মানে এখনও শুধুই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছু চুটকি নেতা ‘জানিস আমি কে’ বলে হঠাৎই নাচানাচি শুরু করেছে। আন্ডার এস্টিমেট করছেন করুন, কিন্তু এতটাও করবেন না। কেউ যদি মনে করেন চমকে ধমকে সাইজ করে দেবে তাহলে মুশকিল আছে।’ মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বিঁধে তিনি এও বলেন যে ‘দল যে শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির কথা বলছে বারবার, কিন্তু এটা কেউ বলছে না যে সমস্যা হলে কোথায় বা কাকে জানাতে হবে।’
এরপরই রবিবার একটি সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেখানে অন্যান্য সমস্ত বিষয় স্পষ্ট করলেও কার্যতই মদন মিত্রের প্রসঙ্গ খানিক এড়িয়েন যান তিনি। মদনের মন্তব্য সম্পর্কে ভারী গলায় তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘দলের ব্যাপার দলই বুঝে নেবে। বাইরের কারও মাথা ঘামানোর দরকার নেই’।
প্রসঙ্গত রবিবার রাতেও ফেসবুক লাভে আসেন মদন মিত্র। সেখানে সরাসরি নাম করেই তিনি বলেন, ‘পার্টি বার বার বলছে আইনশৃঙ্খলা, শৃঙ্খলা রক্ষা। কিন্তু পার্থ তো খুব ব্যস্ত! তাঁর এত ডিপার্টমেন্ট। তারপর মন্ত্রিসভা! পারছে না। আমাদের বাড়িতে কেউ এসে ওয়াশরুম কোন দিকে জিজ্ঞেস করলে আমরা দেখিয়ে দিই।তেমনই শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি কোনদিকে বলে দিলে সেদিকে যেতে পারি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন ভারতের বিকল্প মুখ।অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন যৌবনের দূত। তবে দল যদি মনে করে আমায় আইন ভেঙে চিঠি দেবে, তবে তার উত্তর আমি দেব’।
এহেন ‘মদনবাণের’ পরও মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নেহাতই ‘দলের ব্যাপার দলকেই বুঝে নিতে দিন’ বলে চুপ করে যাওয়ায় নানা মহলেই উঠছে প্রশ্ন। প্রথমে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তারপর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মদন মিত্র। তবে কি অন্তর্দ্বন্দ্বে কারণে ভাঙতে চলেছে তৃণমূল? জোর জল্পনা রাজ্য জুড়ে।