বাংলাহান্ট ডেস্ক : পার্থ-অর্পিতাকে ঘিরে গত মাস থেকেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। তাঁদের মধ্যে ঠিক কী সম্পর্ক সেটা নিয়েই তোলপাড় গোটা দেশ। ইডি (ED) বলছে তাঁদের মধ্যে ‘ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক’ রয়েছে। অর্পিতা আবার পার্থকে (Partha Chatterjee) ডাকেন ‘স্যার’ বলে। এবার উঠে এলো নতুন তথ্য। এলআইসি-র (LIC) নথিতে উল্লেখ আছে তাঁদের সম্পর্ক নাকি কাকা এবং ভাইঝির! জানা যাচ্ছে, এলআইসি-র ৩১টি নথিতে অর্পিতা পার্থকে নমিনি করেছেন ‘আঙ্কল’ হিসেবে। ২৭ জুলাই বেলঘরিয়ায় অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে অর্পিতার নামে ৩১টি জীবনবিমার পলিসির (Life Insurance Policy) নথির খোঁজ পায় ইডি আধিকারিকরা।
ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, প্রায় প্রতিটি বিমাতেই নমিনি হিসেবে নাম রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। উঠে আসছে আরও একাধিক তথ্য। ২০১২ সালের মার্চ মাসে মাত্র ৮ দিনের ব্যবধানে ৮১ লক্ষ টাকার বীমা করা হয়। প্রায় সবকটিই ওয়ান টাইম প্রিমিয়াম। তদন্তকারী আধিকারিকরা জানতে পারেন, সব প্রিমিয়ামই মেটানো হয়েছিল নগদ টাকায়।
এখন প্রশ্ন হলো, এত কম দিনের মধ্যে নগদ টাকা দিয়ে ৮১ লক্ষ টাকার বীমা কেন করানো হয়েছিল? এই বিষয়ে দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরাও করা হয়। ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, দুই অভিযুক্তকে যখন সামনাসামনি বসিয়ে জেরা করার হয় তখন আধিকারিকরা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চান, ‘আপনি কি ওঁকে চেনেন?’ উত্তরে নাকি পার্থ জানান, ‘তেমন ভাবে চিনি না। তবে ক্লাবের পুজোতে বেশ কয়েকবার দেখেছি।’ শুক্রবার এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘নিজের বিমার নথিতে যেখানে পার্থবাবুকে কাকা বলে উল্লেখ করেছেন অর্পিতা, সেখানে হাস্যকর ভাবে প্রাক্তন মন্ত্রী নাকি অর্পিতাকে না-চেনার কথা জানিয়ে দিয়েছেন।’
বিশেষ সূত্র মারফত আরও জানা যাচ্ছে, শিক্ষক দুর্নীতির তদন্তে বেশ কিছু ‘কাগুজে’ কোম্পানি, ফার্ম এবং ট্রাস্টেরও হদিশ পেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। পার্থ এবং অর্পিতার বিভিন্ন আত্মীয়দের নামে জন্য ওই সংস্থাগুলি খোলা হয়। শুধুমাত্র টাকা সরানোর জন্যই এই কোম্পানিগুলি খোলা হয় বলে মনে করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। এখনও পর্যন্ত ৫০টি-র বেশি অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। সঠিক পরিকল্পনা করেই ওই সংস্থাগুলি বিভিন্ন সময়ে খোলা হয় বলে অনুমান ইডির গোয়েন্দাদের। তল্লাশিতে বেলঘরিয়ায় অর্পিতার ফ্ল্যাটের ঠিকানায় আগেই দু’টি সংস্থার নাম জানা যায়।
এ বার তদন্তে উঠে আসছে আরও একটি সংস্থার নাম। নথিতে এম/এস অনন্ত টেক্সফেব প্রাইভেট লিমিটেড নামে ওই কোম্পানির ঠিকানা ছিল বেলঘরিয়ার ‘ক্লাব টাউন’ আবাসনের ৫ নম্বর ব্লকের ৮-এ ফ্ল্যাট। ইডি সূত্রে খবর, পার্থ এবং অর্পিতাকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার সময়ই খাতায়-কলমে নাম থাকা ট্রাস্ট এবং সংস্থার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু পার্থ বা অর্পিতা কেউই এই সংস্থার সম্পর্কে বিশেষ কিছুই বলতে চাননি।