“চাকরি দেব” বলে প্রতারণা! মাঝ রাস্তায় প্রাথমিক শিক্ষককে ধরে মারধর চাকুরীপ্রার্থীদের

বাংলাহান্ট ডেস্ক : দিনের পর দিন চাকরী দেওয়ার নামে মিথ্যা টোপ দেখিয়ে প্রতারিত করার অভিযোগ উঠলো এক প্রাইমারি স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া জেলার সোনামুখী থানা এলাকার অন্তর্গত ইসবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম জ্যোতির্ময় বাউড়ি। আসলে তিনি দুর্গাপুরের বাসিন্দা হলেও চাকরি সূত্রে তিনি থাকতেন বাঁকুড়ায়। এখানের মনোই নামক একটি গ্রামের বাসিন্দা সুনীল কুমার মন্ডল এর ছেলেকে তিনি টোপ দিয়েছিলেন যে স্বাস্থ্য দপ্তরে চাকরি পাইয়ে দেবেন তাকে।

গত মঙ্গলবার সোনামুখী থানা এলাকার অন্তর্গত রাধামোহনপুর পঞ্চায়েতের তাবাজার নামক অঞ্চলে ভর দুপুরে অভিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষককে মাঝ রাস্তায় বেধড়ক মারধর করে চাকরিপ্রার্থী ও তার পরিবার। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে সারা এলাকা জুড়ে। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। পুলিশ মার খেতে থাকা অভিযুক্ত জ্যোতির্ময় বাউরী কে উদ্ধার করেন সেখান থেকে থানায় নিয়ে যায়। ইতিমধ্যেই সেই গণধোলাই এর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে নেট মাধ্যমে। কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষক তার বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বলেই খবর।

প্রাথমিক বিদ্যালয় চাকুরীরত এই শিক্ষক জ্যোতির্ময় বাউরী স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে চাকরি পাইয়ে দেবে বলে বাঁকুড়ার অধিবাসী সুনীল কুমার মন্ডল এর কাছে নয় লক্ষ টাকা নগদ দাবি করেন। অভিযোগকারীদের দাবি, প্রথমে অত টাকা দিতে রাজি হননি সুনীলবাবু। কিন্তু তারপর নানা ভাবে লোভ দেখাতে থাকে জ্যোতির্ময় বাবু। অবশেষে ছেলে চাকরি পাবে সেই আশায় সুনীল বাবু নিজের জমি বাড়ি বিক্রি করে মোট চার দফায় ৮ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা নগদ দেন জ্যোতির্ময় বাউড়ি কে। আর টাকা হাতে পেয়েই রূপ বদলে যায় অভিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষকের।

শুধু তাই নয় আরো অভিযোগ এসেছে সুনীল বাবুর তরফ থেকে ।তিনি আরো জানিয়েছেন, টাকা হাতে পাওয়ার পর একটি কল্যাণী মেডিকেল কলেজের তরফ থেকে নকল নিয়োগপত্র জ্যোতির্ময় বাবু সুনীল বাবুর হাতে তুলে দেন । কিন্তু সেই নিয়োগ পত্র হাতে নিয়ে সুনীলবাবু যখন কল্যাণী মেডিকেল কলেজে যান , তখন তিনি জানতে পারেন সেই নিয়মপত্রটি আসলে ভুয়ো।

এরপরে সুনীল বাবু ও তার ছেলে জ্যোতির্ময় বাবুকে চেপে ধরলে আবারো ভুয়ো নিয়োগপত্র দেন তিনি। কিন্তু এটির সত্যতাও প্রকাশ পায় খুব শীঘ্রই। আর তারপরেই মঙ্গলবার টাকবাজার এলাকায় রাস্তায় জ্যোতির্ময় বাবুকে দেখতে পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সুনীলবাবু ও তার ছেলে।

jpg 20220831 171816 0000

এমনকি চাকরি না পাওয়ায় বারংবার জ্যোতির্ময়বাবুর কাছে তার দেওয়া ৮ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকা ফেরত চান সুনীলবাবু। কিন্তু তাতেও নাকি কোন ফল হয়নি।অভিযোগকারীদের তরফ থেকে কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের না হলেও পুরো ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। তবে তারা কোন প্রমাণপত্র জ্যোতির্ময় বাবুর বিরুদ্ধে দেখাতে পারেনি। এদিকে জ্যোতির্ময় বাবু দাবি করেছেন তিনি নির্দোষ। তিনি কখনোই কাউকে চাকরি দেবার নামে কোন টাকা নেননি। তিনি এটাও বলেছেন যে তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই যে তিনি দোষী।


Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর