বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতে আর্থিক বৈষম্যের (financial inequality) করুণ চিত্র উঠে এসেছে বার বার। বিভিন্ন পরিসংখ্যানে সেই তথ্য উঠে এসেছে। দেশের ৩ শতাংশ মানুষের কাছে ভারতের সর্বোচ্চ আর্থিক সম্পত্তি রয়েছে। এই তথ্যই দিয়েছে একাধিক পরিসংখ্যান। সম্প্রতি এ বিষয়ে আরও একটি তথ্য দিল অক্সফ্যাম। সেই পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশের ১ শতাংশ মানুষের কাছে গোটা ভারতীয় অর্থনীতির ৪০ শতাংশ আর্থিক সম্পত্তি রয়েছে। পাশাপাশি, সবচেয়ে গরিব শ্রেণির মানুষের কাছে ৩ শতাংশ আর্থিক সম্পত্তি রয়েছে।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম দিনই এই রিপোর্ট পেশ করেছে অক্সফ্যাম ইন্টারন্যাশনাল। তারা জানিয়েছে, দেশের ১০ জন ধনকুবেরের আয়ের উপর যদি ৫ শতাংশ করও চাপানো হয়, তাহলে শিশুদের পুরো স্কুলশিক্ষার খরচ উঠে আসবে। এই রিপোর্টের নাম রাখা হয়েছে ‘সারভাইভাল অফ দা রিচেস্ট’।
ভারতের ধনকুবেরদের সম্পত্তির উপর মাত্র একবার ২ শতাংশ হারে কর চাপানো হলে ৪০ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা উঠে আসবে। যা আগামী তিন বছরের জন্য অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের জন্য নানা রকম পুষ্টি অভিযানের খরচ তুলতে সাহায্য করতে পারে। এমনটাই বলা হয়েছে ওই রিপোর্টে। এছাড়াও ভারতের শ্রেষ্ঠ ১০ ধনকুবেরের সম্পত্তির উপর একবার ৫ শতাংশ কর চাপানো হলে ১.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা উঠে আসবে।
যা ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও আয়ুষ মন্ত্রকের বাজেটের থেকেও দেড় গুণ বেশি। প্রসঙ্গত, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বাজেট ছিল ৮৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা। পাশাপাশি, আয়ুষ মন্ত্রকের বাজেট ছিল ৩ হাজার ৫০ কোটি টাকা। অক্সফ্যাম জানিয়েছে, ভারতে আর্থিক বৈষম্যের উপর এই রিপোর্ট তৈরি করতে তারা একাধিক গবেষণার পদ্ধতি অবলম্বন করেছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ভারতে এখনও লিঙ্গ বৈষম্য বিরাজ করে। পুরুষ শ্রমিকদের তুলনায় নারী শ্রমিকরা অনেকটাই কম টাকা পান। তফসিলি জাতি ও গ্রামীণ শ্রমিকদের ক্ষেত্রে এই বৈষম্য আরও বেশি বলে জানানো হয়েছে। অক্সফ্যাম জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর ধনকুবেররা ব্যাপক হারে লাভ করেছেন। করোনা পরিস্থিতি শুরু থেকে ২০২২-এর নভেম্বর অবধি ধনকুবেরদের সম্পত্তি ১২১ শতাংশ বেড়েছে। অর্থাৎ প্রতিদিন ৩ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে তাঁদের সম্পত্তি।