বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে বাংলায় একের পর এক স্লোগানের সাথে সাথে টিপ্পনীকেও হাতিয়ার করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর তার মধ্যে অন্যতম ছিল “দিদি ও দিদি”। বাংলার বিদায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করতে বারবারই এই শব্দবন্ধের আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। বিজেপি কর্মী সমর্থক এবং নেতা-নেত্রীদের মধ্যেও রীতিমতো আলোড়ন তুলেছিল এই সম্বোধন। তবে তারা খুশি হলেও, এধরনের সম্মোধন মেনে নিতে পারেননি তৃণমূল কর্মী তথা সমর্থকরা। তাদের মতে, দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের কটাক্ষ মোটেই শোভনীয় নয়। এখন যদিও মিটেছে সেই তিক্ততার পর্ব। দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা ফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাকে। কিন্তু অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃত্ব ফোন করলেও এবার ফোনে শুভেচ্ছা জানাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নির্বাচন-পরবর্তী নিজের প্রথম বক্তব্যেই সে কথা জানিয়ে মমতা বলেছিলেন, অন্যান্যবারের মতো এবার প্রধানমন্ত্রী ফোন করেননি, কে জানে হয়তো ব্যস্ত আছেন। সেন্টিমেন্টে নিইনি। আজ বুধবার রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের পরিচালনায় তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী আর ফোন করেছিলেন কিনা তা প্রকাশ্যে না এলেও আজ সকালেই টুইট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। যদিও সে বার্তা অতি সংক্ষিপ্ত। এক লাইনের শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করার জন্য মমতা দিদিকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।”
Congratulations to Mamata Didi on taking oath as West Bengal’s Chief Minister. @MamataOfficial
— Narendra Modi (@narendramodi) May 5, 2021
তার এই বার্তা ছোট হলেও রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষক মহল। নির্বাচনী প্রচারের আক্রমণের ঝাঁঝ এখন অস্তমিত। “দিদি ও দিদি” কটাক্ষের তীব্রতাও এই শুভেচ্ছা বার্তায় ধরে রাখেননি প্রধানমন্ত্রী। লড়াই এখন শেষ, আর সেই কথা মাথায় রেখেই দিদিকে তার যথোপযুক্ত সম্মানে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে আগামী দিনে এই সম্পর্কের সমীকরণ কোন দিকে গড়ায় সে দিকে অবশ্যই নজর থাকবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বিপুল জয়ের পর অনেকেই মনে করছেন ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মূল বিরোধী মুখ হয়ে উঠতে পারেন তিনি। সে ক্ষেত্রে সৌজন্যের এই নজির কতদিন বজায় থাকবে তাও হতে পারে এক বড় প্রশ্ন?