বাংলা হান্ট ডেস্কঃ উত্তরপাড়ায় ফের উত্তপ্ত রাজনীতি। বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিককে (Kanchan Mullick) কেন্দ্র করে গরম হয়ে উঠেছে এলাকা। কোন্নগর ও নবগ্রাম অঞ্চলের একাধিক জায়গায় বুধবার সকাল থেকেই দেখা মিলেছে অদ্ভুত কিছু পোস্টারের। তাতে বড় হরফে লেখা, “রাস্তাগুলো হচ্ছে শেষ, বিধায়ক আমার নিরুদ্দেশ”, আবার কোথাও লেখা, “বিধায়ক তুমি আছো কোথা, কবে শুনবে মানুষের ব্যথা?” নিচে সই করা নাম ভারতীয় জনতা পার্টির।
অভিযোগ নির্বাচনের পর থেকে আর দেখা যায় না কাঞ্চন মল্লিক কে (Kanchan Mullick)
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, নির্বাচনের পর থেকে এলাকার বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিককে (Kanchan Mullick) আর দেখা যায় না। রাস্তাঘাট থেকে জলনিকাশি, নিত্য সমস্যায় মানুষ কার্যত অসহায়। তাদের দাবি, “এলাকার সমস্যা কারও কাছে বলা যাচ্ছে না। বিধায়ক নেই, অফিসে যোগাযোগ করলেও সাড়া মেলে না। তাই বাধ্য হয়েই পোস্টার মেরে মানুষকে জানাতে হচ্ছে আমাদের বিধায়ক ‘নিখোঁজ’।’”
বিজেপির এই অভিযোগে পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। উত্তরপাড়ার তৃণমূল নেতা পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিধায়কের তহবিল থেকে নবগ্রামের রাস্তা তৈরি হয়েছে। বিজেপির চোখে যদি সেটা না পড়ে, তবে সেটা তাদের ন্যাবা হওয়া। বিধায়ক আসবেন কি না সেটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। নানা সাংস্কৃতিক কাজের দায়িত্বও তাঁর রয়েছে। বিজেপি পরিযায়ী পাখির মতো, ভোট এলেই এসে অভিযোগ করে।”
তবে এলাকার মানুষ বলছেন, রাস্তা মেরামতির কাজ টিকছে না। “পুজোর সময় একটু পিচ পড়ে, কয়েকদিন বাদেই উঠে যায়। রাস্তায় চলা দায়,” অভিযোগ বাসিন্দাদের। নবগ্রাম, কানাইপুর, রঘুনাথপুর সর্বত্র একই ছবি বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
তারা সমাধান শিবিরেও অনুপস্থিত ছিলেন কাঞ্চন মল্লিক
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে উত্তরপাড়ার বিভিন্ন পাড়ায় ‘পাড়ায় সমাধান শিবির’ আয়োজিত হয়েছিল। সেখানে বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের (Kanchan Mullick) অনুপস্থিতি নিয়েই তৃণমূল কর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভ ছিল। এক তৃণমূল কাউন্সিলর প্রকাশ্যে বলেন, “বিধায়ককে সিনেমায় দেখা যায়, কিন্তু এলাকায় দেখা যায় না।”
এই অভিযোগের জবাবে কাঞ্চন মল্লিক (Kanchan Mullick) বলেন, “আমি এলাকায় যাই, অফিসে বসে কাজ করি। কেউ যদি দেখেও না দেখতে চায়, তাহলে আমি কী করব? আমি মানুষের কাজ করছি, সেটা তারা জানেন।” পরবর্তীতে তিনি অন্য একটি পাড়ার সমাধান শিবিরে উপস্থিতও হয়েছিলেন।
আরও পড়ুনঃ “রেজিস্ট্রেশনের নামে টাকা নয়!” টোটো নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের সিদ্ধান্তকে নিশানা করলেন শুভেন্দু অধিকারী
তবে বিজেপির এই পোস্টার কাণ্ড যে উত্তরপাড়ার রাজনৈতিক তাপমাত্রা আরও বাড়িয়ে দিল, তা বলাই যায়। স্থানীয়দের মতে, “এভাবে পোস্টার মারা এখন রাজনীতির নতুন ভাষা হয়ে উঠছে।” বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকের (Kanchan Mullick) জনপ্রিয়তা যেমন সাংস্কৃতিক দুনিয়ায় তুঙ্গে, তেমন রাজনৈতিক উপস্থিতি নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রশ্নচিহ্ন। এখন দেখার এই বিতর্কে বিধায়ক নিজে কী ব্যাখ্যা দেন।