বাংলা হান্ট ডেস্ক : লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election 2024) নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতিও সেরে ফেলেছে রাজনৈতিক দলগুলি। প্রচারে কোনও খামতি নেই। শাসক-বিরোধী তরজায় সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এমন আবহে বাংলাকে পাখির চোখ করে এগিয়ে চলেছে বিজেপি (BJP)। এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন নির্বাচনে বাংলার ফলাফল কী হবে? কী ভবিষ্যদ্বাণী করছেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor)?
আসন্ন নির্বাচনে ৪০০ এর বেশি আসন দখলের লক্ষ্য নিয়েছে বিজেপি। ইতিমধ্যেই চারদফায় বাংলা ঘুরে গেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কর্মীদের ভোকাল টনিক থেকে ভোটারদের মন জয়ের চেষ্টা, খামতি রাখা হয়নি কোনও কিছুতেই। একই সাথে আম জনতার স্বার্থে একগুচ্ছ প্রকল্পের শিল্যান্যাসও করে গেছেন তিনি। এমন আবহে বাংলায় বিজেপি ঝড়ের ভবিষ্যদ্বাণী ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের।
যদিও প্রশান্ত কিশোর মনে করেন, আসন্ন নির্বাচনে বিজেপির দাবি অনুযায়ী, ৩৭০ আসন জয়ের সম্ভাবনা খুবই কম। তবে বাংলা দেখবে গেরুয়ার দাপট। পশ্চিমবঙ্গে দারুণ ফল করবে বিজেপি। এমনটাই মনে করছেন ভোট প্রকৌশলী প্রশান্ত কিশোর। তার কথায়, ‘পশ্চিমবঙ্গ থেকে এক অভাবনীয় ফল আসতে চলেছে, যেটা বিজেপির পক্ষে যাবে।’ একই সাথে দক্ষিণ ভারতেও মোদীর জনপ্রিয়তা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন : ‘কে দিয়েছে জানিনা…’, কোটি কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড নিয়ে মুখে কুলুপ আঁটল TMC, JDU
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজনৈতিক মহলে প্রশান্ত কিশোরের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন সকলেই। সে ২০১৪ সালে মোদীর উত্থান হোক কী ২০২১ এ বাংলায় তৃণমূলের ফিরে আসা, এই সবকিছুতেই প্রশান্ত কিশোরের ভূমিকা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তাই আসন্ন নির্বাচনের পূর্বে তার মন্তব্যকে যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখছে রাজনৈতিক কারবারিরা।
আরও পড়ুন : ‘ওষুধ তৈরীই আছে’, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে টাইট করার হুঁশিয়ারি, বেফাঁস তৃণমূলের প্রাক্তন IPS প্রার্থী প্রসূন
ইতিমধ্যেই একাধিক ইন্টারভিউ দিয়েছেন তিনি। এবং প্রায় সব জায়গাতেই তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, আসন্ন লোকসভায় বিজেপিকে ঠেকানোর ক্ষমতা কারোরই নেই। এমনকি বাংলাতেও যে জয়ের পাল্লা যে বিজেপির দিকেই ঝুঁকে রয়েছে, তা পিকে-র কথাতেই স্পষ্ট। তার মতে, বিরোধীরাই মোদীর জয়ের পথ আরও স্পষ্ট করে দিচ্ছে। বিজেপির জয়ের কারণ হিসেবে ৭টি কারণও দেখিয়েছেন ভোট প্রকৌশলী প্রশান্ত কিশোর।
১. ভোট প্রচারে মমতাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ না করে সমস্ত কিছুর জন্য গোটা তৃণমূলকে দায়ী করার কৌশলকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন পিকে। কারণ গত নির্বাচনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি মোদীর ‘দিদি ও দিদি’ কথাটা যে বাংলার মানুষ ভালোভাবে নেয়নি গেরুয়া শিবির সেটা ভালোই বুঝে গেছে।
২. রাজবংশী ভোট টানতে অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভায় পাঠানোর অঙ্ক বিজেপির দিকেই যাবে। কারণ মতুয়ার পর এটি বাংলার দ্বিতীয় বৃহত্তম তফসিলি জাতি (SC) সম্প্রদায়।
আরও পড়ুন : স্কুল পড়ুয়াদের জন্য বিরাট ‘চমক’! বড় উপহার নিয়ে এল রাজ্য সরকার
৩. বাংলায় কংগ্রেস- সিপিএম এবং তৃণমূলের পৃথক লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত আখেরে বিজেপিকেই লাভবান করবে বলে মনে করছেন পিকে। এক তো এতে ভোট ভাগ হবে এবং কিছু ভোট বিজেপির দিকেও আসতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।
৪. সিএএ নীতি বাংলার রাজনীতিতে বিজেপিকে শক্তিশালী করবে। বাংলাদেশ থেকে আসা বহু শরণার্থী বিজেপির মুখাপেক্ষী হয়ে ছিল। এমন পরিস্থিতিতে তাদের একটা বড় অংশের ভোট পাবে বিজেপি।
৫. পূর্বে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম যেমন তৃণমূলের হাতের তুরুপের তাস হয়ে উঠেছিল তেমন এবার সন্দেশখালি হয়ে উঠবে বিজেপির ব্রহ্মাস্ত্র। সন্দেশখালি ইস্যুতে তৃণমূল ব্যাকফুটে।
আরও পড়ুন : প্রথম দিনেই ফাঁস ফুড SI এর প্রশ্নপত্র! বাতিল হবে পরীক্ষা? প্রকাশ্যে বড় আপডেট
৬. ইতিপূর্বেই আমরা দেখেছি যে, তৃণমূল হোক বা সিপিএম, সকলেই মুসলিম ভোটকে নিজের দিকে টানার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে গেছে। মূলত বাংলার হিন্দু ভোটারদের কথা সেভাবে কেউ গুরুত্ব দেয়নি। আর এবার সেটাকেই কাজে লাগিয়েছে বিজেপি। পিকের মতে, বাংলার হিন্দু ভোটার বিজেপির জন্য একটা এক্স ফ্যাক্টর হতে চলেছে।
৭. হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে যারা তফশিলি তারাও এবার বিজেপির হয়ে ভোট দেবে বলে মনে করছেন পিকে। রাজবংশী, মতুয়ার পাশাপাশি জঙ্গলমহলের আদিবাসী ভোটও এবার বিজেপি পাবে বলে মনে করছেন তিনি।