বাংলাহান্ট ডেস্ক : বৃহৎআকৃতির ভুঁড়ি। দেখলেই মনে হতো অন্তঃসত্ত্বা (Pragnent Men) তিনি। পাড়ার লোকেরা অবশ্য এটা বলেই খ্যাপাতেন মধ্যবয়স্ক ওই ব্যক্তিকে। একদিন বা দুদিন নয় পেটে সমস্যা নিয়ে ৩০ বছর কাটিয়ে দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। পাড়া-প্রতিবেশীর লোকেরা তাকে ‘অন্তঃসত্ত্বা পুরুষ’ নামে ডাকেও সেভাবে কখনই মাথা ঘামাতেন না তিনি। তবে সেই ঠাট্টাই হয়ে গেল সত্যি। ঘটনা নাগপুরের (Nagpur)।
ঘটনা ১৯৯৯ সালের। নাগপুরের বাসিন্দা সঞ্জু ভগৎ গর্ভে ধারণ করেছিলেন সন্তান। হ্যাঁ শুনতে অবাক লাগলেও এই ঘটনা একেবারেই সত্যি। তাও আবার একটি নয় দুই সন্তানকে গর্ভে ধারণ করেছিলেন তিনি। যদিও একটা সময় এই ঘটনা নিজেই জানতেন না সঞ্জু।
দিনের পর দিন অদ্ভুতভাবে বাড়তে থাকে তাঁর ভুঁড়ি। এমনকি একটা সময় শ্বাস নিতে কষ্ট হতো তাঁর। ৩০ বছর এভাবে কাটিয়ে দেওয়ার পর শেষ পর্যন্ত তিনি ছুটে যান হাসপাতালে। মুম্বাইয়ের সেই হাসপাতালেই তিনি জানতে পারেন তাঁর পেটে রয়েছে ভ্রূণ।
যদিও চিকিৎসকেরাও অবশ্য প্রথমে ক্যান্সারের টিউমার ভেবেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছিলেন। সিদ্ধান্ত নেন অস্ত্রোপচারের। আর তখনই দেখা যায় পেটের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে চুলসহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গ। যা দেখে রীতিমতো চোখ কপালে ওঠে চিকিৎসকদের।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানাতে গিয়ে শল্য চিকিৎসক অজয় মেহতা জানান, ‘এক ব্যক্তির পেটে অপারেশন করতে গিয়েই এক শিশুর পা, চুলসহ বিভিন্ন দেহংশের সন্ধান পাওয়া যায়। প্রথমে আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। মনে হয়েছিল ওই ব্যক্তির পেটের ভেতর হাত ভরতেই কেউ যেন হাত মেলানোর চেষ্টা করছে’।
জানিয়ে রাখি, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এদেশের শারীরিক অবস্থাকে বলা হয় ‘ফেটাস ইন ফেটু’। এক্ষেত্রে ভ্রূণের ভেতর জন্ম নেয় অপরিণত শিশু। পরজীবীর মতো একটি ভ্রূণের শরীরের ভেতরে বেড়ে ওঠে অন্য ভ্রূণটি। অস্ত্রোপচার করলে খোঁজ পাওয়া যায় সেই ভ্রূণের। যদিও সঞ্জু নামক ওই ব্যক্তির পেটে থাকা দুটি ভ্রূণই মারা যায়।