বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রাথমিকের টেট দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় (TET Scam) বিরাট পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। বুধবার প্রাথমিকের ৩২০০০ মামলায় বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, যদি গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও যোগ্যতা পরীক্ষা না হয়ে থাকে, তবে ৩২ হাজার অপ্রশিক্ষিতের পাশাপাশি প্রায় ১২ হাজার প্রশিক্ষিত প্রার্থীর নিয়োগও এবার প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে।
কি বলল হাইকোর্ট? Calcutta High Court
এদিন আদালতে অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীদের পক্ষের আইনজীবীদের দাবি, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও যোগ্যতা পরীক্ষাই হয়নি। সম্পূর্ণ দুর্নীতি ও কেলেঙ্কারির মাধ্যমে নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। এই সময় বিচারপতি চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘প্রশিক্ষিত এবং অপ্রশিক্ষিত উভয়ের জন্যই একটি বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়া ছিল বলে আমরা ধরতে পারে। এখানে যদি কোনও যোগ্যতা পরীক্ষা না হয়, তাহলে প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের জন্যও কোনও যোগ্যতা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।’
এরপরই বিচারপতি প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘যদি আদালত ৩২ হাজার অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীর চাকরি বাতিল করা হয়, তাহলে বাকি প্রশিক্ষিত ১২,০০০ প্রার্থীকে কেন ছাড় দেওয়া হবে? তারাও তো একই নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ।” সেই ১২০০০ প্রার্থীকেও মামলায় যুক্ত করে বক্তব্য শোনার কথা বলেন বিচারপতি।
বিচারপতি বলেন, “চাকরি প্রার্থীরা সরাসরি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কি না, তা এখনও প্রমাণিত নয়। সিবিআই এবং ইডি তদন্ত চলছে। তদন্ত কবে শেষ হবে কারোর জানা নেই। আমিও জানি না। ” জাস্টিসের কথায়, “সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর পরে এবং জালিয়াতির প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করার পরেই আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি যে এই ব্যক্তিদেরও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল যারা এতে নিযুক্ত ছিলেন।” আগামী ১১ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানা গিয়েছে।
কোন মামলা?
২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে ২০১৬ সাল থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ৪২ হাজার ৯৪৯ জন চাকরি পান। কিন্তু, নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগ তুলে একাধিক ‘ক্রুটি’র কথা জানিয়ে মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এর প্রেক্ষিতে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দেন। নতুন নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয় রাজ্যকে।
এরই মধ্যে হাইকোর্টের একক বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ পাল্টা ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। সেই মামলাই বর্তমানে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চে চলছে। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের উপর ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি ঝুলছে। এবার সেই মামলাতেই আরও ১২০০০ চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলল আদালত।