বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এদেশের প্রাচীনতম হাইকোর্ট হল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। সেই আদালত কি ক্রমশ ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ডে’ পরিণত হচ্ছে? এবার কার্যত এই প্রশ্ন তুলে দিল কলকাতা হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন এবং বার লাইব্রেরি ক্লাবের আইনজীবী সংগঠন। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) কলেজিয়ামের তরফ থেকে দিল্লি হাইকোর্টের (Delhi High Court) এক বিচারপতিকে কলকাতা হাইকোর্টে বদলির সুপারিশ করা হয়। সেই সিদ্ধান্ত নিয়েই অসন্তোষ কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীদের একাংশের।
কোন বিচারপতিকে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বদলি করা হয়েছে?
দিল্লি হাইকোর্টের ১৮তম প্রবীণ বিচারপতি হলেন জাস্টিস দিনেশ কুমার শর্মা। ২০২২ সালে এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন তিনি। এর আগে দিল্লির জেলা ও সেশন বিচারক ও দিল্লি উচ্চ আদালতের রেজিস্ট্রারের (ভিজিল্যান্স) দায়িত্ব পালন করেছেন। গত বৃহস্পতিবার এই বিচারপতিকেই কলকাতা হাইকোর্টে বদলির সুপারিশ করে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম।
এদেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার (CJI Sanjiv Khanna) নেতৃত্বে একটি বৈঠক আয়োজিত হয়েছিল। সেখানেই বিচারপতি দিনেশ কুমার শর্মার বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্ত নিয়েই অসন্তোষ কলকাতা হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন এবং বার লাইব্রেরি ক্লাবের আইনজীবী সংগঠনের।
আরও পড়ুনঃ ‘ওপারে প্রভু চিন্ময়, এপারে প্রভু হিরন্ময়’! হিন্দু ধর্মগুরুর ওপর হামলার অভিযোগ! ফুঁসে উঠলেন শুভেন্দু
তাঁদের দাবি, যে বিচারপতিকে বদলি করে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) পাঠানো হচ্ছে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সংবাদমাধ্যম ও সমাজমাধ্যম ঘাঁটলেই এই বিষয়ে জানা যাবে। তাঁদের আরও অভিযোগ, বিষয়টিকে রুটিন বদলি বলা হলেও ব্যাপারটা যে এতখানি সহজ নয়, তা পরিষ্কার।
আইনজীবীদের অভিযোগ, ‘কলকাতা হাইকোর্টকে ডাম্পিং গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ২ বছর কিংবা তার থেকেও কম সময়ের মেয়াদ বাকি রয়েছে এমন বিচারপতিদের পাঠানো হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না’।
এই প্রথম নয়! অতীতেও এমন নজির রয়েছে বলে অভিযোগ। এর আগেও দেশের অন্যান্য বহু হাইকোর্ট থেকে অনেক বিচারপতিকে কলকাতা হাইকোর্টে পাঠানো হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এই আদালতকে হয়তো ‘গারবেজ’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে এই ধরণের বিচারপতিদের নিলে আদতে কলকাতা হাইকোর্টের বদনাম হবে। তাই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন প্রতিবাদী আইনজীবীরা।
ইতিমধ্যেই দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতিকে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বদলির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা ও স্থগিত করার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই বদলির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেল ৩:৩০ অবধি কোনও মামলায় অংশগ্রহণ করবেন না প্রতিবাদী বিচারপতিরা। তাঁরা জানিয়েছেন, আপাতত প্রতীকী প্রতিবাদ করছেন। আদালত কিংবা আদালতের কোনও কাজ বন্ধ করার উদ্দেশ্য তাঁদের নেই। বাকি সদস্যদের এই প্রতিবাদে সামিল হওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।