বাংলাহান্ট ডেস্ক : আজ ৭ই জুলাই রথযাত্রা (Rathyatra)। রথযাত্রা মানেই সবার আগে আমাদের চোখে ভেসে ওঠে জগন্নাথ ধাম পুরীর রথযাত্রা। আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বাদশী তিথিতে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রা রথে চড়ে মাসির বাড়ি যান। সেখানে সাতদিন কাটিয়ে আবার তিন ভাইবোন ফিরে আসেন স্বস্থানে। এটাই হলো রথযাত্রা (Rathyatra)। শ্রীক্ষেত্র পুরীতে রথযাত্রাকে (Rathyatra) কেন্দ্র করে প্রচুর ভিড় হয়।
রথযাত্রার (Rathyatra) সময় রান্নাঘরের আয়োজন
সেখানে প্রতিদিন জগন্নাথ দেবকে ছাপ্পান্ন ভোগ নিবেদন করা হয়। মন্দিরের বিরাট হেঁশেলে হয় এই রান্না। এই হেঁশেল নাকি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রান্নাঘর পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের মহাপ্রসাদের মহিমা এমন, কোনদিন সেখানে বাড়তি প্রসাদ যেমন হয় না, কমতিও পড়ে না। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ধাতব বাসনপত্রে হয় না রান্না। কোন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির ব্যবহারও নেই।
আরোও পড়ুন : আবহাওয়ার মুড সুইং! একটু পরই বজ্রপাত সহ বৃষ্টির তোলপাড় দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায়
পুরো রান্নাই হয় মাটির পাত্রে। প্রতিদিন নতুন নতুন পাত্রে হয় রান্না। জগন্নাথ দেবের (Jagannath Dev) এই রান্নাঘর কে বলা হয় রোসাঘর। ৭৫২টি উনুনে প্রায় ৬০০ জন রাঁধুনি সেখানে রান্না করেন।৪০০ জন সেবক থাকেন সহায়তার জন্য। উনুনের মুখে সবচেয়ে বড় মাটির হাঁড়িতে অন্ন রান্না হয়। তরকারি, পায়েস রান্না হয় তার উপরে সাতটা থেকে ন’টা পর্যন্ত ক্রমশ ছোট হতে থাকা হাঁড়িতে।
আরোও পড়ুন : গো-মাংস রান্নার পরেই বিরাট ক্ষতির মুখে সুদীপা! কী হল ‘রান্নাঘরের রানী’র?
উপরের পাত্র গুলিতে থাকা শাকসবজি অন্ন থেকে মিষ্টান্ন রান্না হয় একেবারে নিচের পাত্র থেকে ওঠা বাষ্পের ভাপে। রানার সময় অন্য কিংবা তরকারিতে হাত দেওয়া বা নাড়াচাড়া করা হয় না। সবার আগে রান্না শেষ হয় একেবারে উপরে থাকা পাত্রটির। তারপর ক্রমান্বয়ে বাকি পাত্র গুলির রান্না সম্পন্ন হয়। চিনির পরিবর্তে ভোগের রান্নায় ব্যবহার করা হয় গুড়।
গুঁড়ো মসলার পরিবর্তে ব্যবহার করা হয় বাটা মশলা। মশলা বলতে এলাচ, বড় এলাচ, দারচিনি, গোলমরিচ, আদা, কালো সর্ষে, জোয়ান, লবঙ্গ, জায়ফল, হলুদ, নুন। পুরীর জগন্নাথ দেবের ভোগের রান্নায় দেশীয় সবজি ব্যবহার করা হয়। প্রতিদিন জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার জন্য ছাপান্নটি পদ রান্না করা হয়। রান্নাগুলিকে ‘পাক্কা’ এবং ‘সুক্কা’-এই দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়।
বংশপরম্পরায় এই কাজ করে আসছেন হেঁশেলের রাঁধুনিরা। রন্ধনশালার চত্বরে গঙ্গা যমুনা নামক দুটি কুয়ো থেকে জল তুলে রান্না করা হয়। রান্না হওয়ার পর সেই ভোগ নিয়ে চলে আসা হয়। সেখান থেকে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয় জগন্নাথ দেবের ভোগ। বছরের পর বছর সেই একই স্বাদের গন্ধে অতুলনীয় ভোগ পাওয়ার আশায় লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী উপস্থিত হয় জগন্নাথ দেবের মন্দিরে।