বাংলাহান্ট ডেস্ক: রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দু’দিনের ভারত (India) সফরে এসে দিল্লিতে পা রাখার পর থেকেই সৌহার্দ্যের বার্তা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে অবতরণ করেই তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন। পুতিন বলেন, ভারত মোদির মতো একজন শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী নেতা পেয়ে ধন্য। তাঁর কথায়, মোদির নেতৃত্বে ভারত-রাশিয়ার সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে এবং মোদির নিঃশ্বাসের সঙ্গে যেন জড়িয়ে রয়েছে ভারতবর্ষের নাম। রুশ প্রেসিডেন্টের মতে, অর্থনীতি, প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে দুই দেশের সহযোগিতা আরও বাড়ানোর বিষয়ে মোদি অত্যন্ত আগ্রহী ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ভারত (India) সফরে এসে মোদির ভুয়সী প্রশংসা পুতিনের:
ভারত (India) সফরের আগে নয়াদিল্লির রুশ তেল কেনা নিয়েও আমেরিকার উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা দেন পুতিন। তিনি বলেন, আমেরিকা নিজেদের প্রয়োজনের জন্য রাশিয়া থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কেনে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত রুশ তেল কিনলে কেন প্রশ্ন উঠবে? তাঁর মন্তব্য, চলতি বছরের প্রথম ন’মাসে ভারত-রাশিয়ার বাণিজ্যে সামান্য পতন দেখা গেলেও রুশ তেলের প্রবাহে কোনও বাধা নেই। নিয়মিত ভাবেই রাশিয়া থেকে ভারতে তেল সরবরাহ হচ্ছে এবং দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থিতিশীল রয়েছে। তাঁর এই বক্তব্যকে অনেকেই আমেরিকার নীতি-চাপের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করার বার্তা হিসেবেই দেখছেন।
আরও পড়ুন: চাপ বাড়ল পাক সরকারের? শেহবাহজের ‘অনিচ্ছা’ সত্বেও পাকিস্তানের প্রথম CDF হলেন আসিম মুনির
ইউক্রেন যুদ্ধ এবং অপারেশন ‘সিঁদুর’-এর পর এই প্রথমবার পুতিন ভারত (India) সফরে এসেছেন। ফলে তাঁর এই সফর ঘিরে কূটনৈতিক গুরুত্ব বেড়েছে বহুগুণ। দুটি দেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। রাশিয়া থেকে ভারত বিপুল পরিমাণ তেল আমদানি করলেও রাশিয়ার কাছে ভারতের রপ্তানি তুলনামূলকভাবে কম। তাই নয়াদিল্লি সামুদ্রিক পণ্য, আলু, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ওষুধসহ নানা দ্রব্যের রপ্তানি বাড়াতে চাইছে। এ ছাড়া মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে নতুন আলোচনা শুরু হতে পারে বলে কূটনৈতিক মহলের ধারণা। প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় নতুন রোডম্যাপ তৈরি এবং তেল-কূটনীতিতে আরও সমন্বয় আনার সম্ভাবনাও রয়েছে।
এদিকে প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে এস-৪০০ ডিফেন্স সিস্টেম, সুখোই এসইউ-৫৭-এর মতো যুদ্ধবিমান, যৌথ উৎপাদন, রক্ষণাবেক্ষণ এবং প্রযুক্তি হস্তান্তর নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে সূত্রের দাবি। ভারত (India)-রাশিয়ার ঐতিহ্যগত সামরিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের, এবং দুই দেশই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে পারস্পরিক নির্ভরতা আরও বাড়াতে আগ্রহী। ভারতের লক্ষ্য শুধু সরঞ্জাম কেনা নয়, বরং যৌথ উৎপাদন ও প্রযুক্তি ভাগাভাগির মাধ্যমে আত্মনির্ভরতার পথ আরও মজবুত করা।

আরও পড়ুন:বছরের শেষে আমজনতার জন্য সুখবর! রেপো রেট কমাল RBI, বাড়ি-গাড়ির ঋণে মিলবে স্বস্তি
শুক্রবার হায়দরাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত হবে ২৩তম ভারত (India)-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন, যেখানে পুতিন ও মোদির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও হবে। এই বৈঠকে নতুন বাণিজ্য চুক্তি থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং কৌশলগত অংশীদারিত্ব—সব কিছু নিয়েই বিস্তৃত আলোচনা হবে বলে ধারণা। বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে পুতিনের এই সফর দুই দেশের সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করবে এবং পুরনো বন্ধুত্বে নতুন মাত্রা যোগ করবে, এমনটাই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।












