বাংলাহান্ট ডেস্ক: টলিউডে (Tollywood) যে কজন সিঙ্গল মাদার রয়েছেন তাদের মধ্যে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (Rachana Banerjee) অন্যতম। বিবাহ বিচ্ছিন্না না হলেও ছেলে রৌণক ওরফে প্রণীলকে তিনি একাই বড় করছেন। স্বামীর সঙ্গে খাতায় কলমে বিচ্ছেদ হয়নি ঠিকই, কিন্তু ছেলেকে নিয়ে আলাদা থাকেন রচনা। নিজের রোজগারের টাকায় স্বচ্ছন্দে চলে যায় রচনা, তাঁর মা এবং ছেলে তিনজনের সংসার।
টলিপাড়ায় রচনার মাতৃত্বের নিদর্শন দেওয়া হয়। নিজের কাজ সামলেও যেভাবে তিনি ছেলেকে মানুষ করেছেন তা সত্যিই যেকোনো মায়ের কাছে অনুপ্রেরণামূলক। ছেলের জন্য অনেক আত্মত্যাগও করেছেন রচনা, পেশাগত এবং ব্যক্তিগত দু দিকেই। রৌনকের জন্য তাঁর মনের চিন্তা এখনো মাঝে মাঝেই প্রকাশ্যে এসে পড়ে দিদি নাম্বার ওয়ান এর মঞ্চে।
সম্প্রতি রচনার সঙ্গে খেলতে এসেছিলেন ‘রান্নাঘর’ এর প্রাক্তন সঞ্চালিকা সুদীপা চট্টোপাধ্যায়। এক সময় জি বাংলায় পরপর সম্প্রচারিত হত রান্নাঘর এবং দিদি নাম্বার ওয়ান। তবে বেশ কয়েক মাস হল শেষ হয়ে গিয়েছে রান্নাঘর। সম্প্রতি দিদির মঞ্চে খেলতে এসে কিছু পুরনো স্মৃতি ভাগ করে নেন সুদীপা।
তিনি জানান, তাঁর এবং রচনার মেকআপ রুম ছিল পাশাপাশি। রচনার রুমে সবসময় একটা বোরখা ঝোলানো থাকতে দেখতেন তিনি। একদিন সুদীপা জিজ্ঞাসা করেছিলেন ওই বোরখার ব্যাপারে। রচনা উত্তর দিয়েছিলেন, সেট থেকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার জন্য তিনি মেট্রো নেন। তখন ওই বোরখাটা পরে নেন যাতে কেউ চিনতে না পারে। কালীঘাট স্টেশনে নেমে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে তাঁর। সেটায় চেপে বাড়ি ফেরেন।
ছেলেকে তাড়াতাড়ি পড়তে বসানোর জন্যই এত তাড়াহুড়ো করে ফিরতে রচনা। শুনে সুদীপা বলেছিলেন, তিনি যেন রচনার মাতৃত্বের ৫০ শতাংশও পান সেই আশীর্বাদ করতে। এখন রৌনক অনেকটাই বড় হয়েছে। টিনএজে পা দিয়েছে। কিন্তু রচনার চিন্তা কমার বদলে আরো বেড়ে গিয়েছে।
সুদীপা জিজ্ঞাসা করেন, মাতৃত্বের কোন সময়টা রচনার কাছে সবথেকে বেশি চ্যালেঞ্জের? উত্তরে দিদি নাম্বার ওয়ান জানান, এই সময়টাই তাঁর কাছে সবথেকে বেশি কঠিন। তিনি নিজে চিরকাল সব কাজের আগে বাবার কাছ থেকে অনুমতি নিতেন। এমনকি তাঁর বাবার মৃত্যুর আগে পর্যন্তও টানা এমনটা করে গিয়েছেন রচনা।
কিন্তু এখন যুগ বদলেছে। রচনা বলেন, তিনি যেহেতু ছোট থেকে ওভাবে মানুষ, তাই ছেলে মুখের উপর জবাব দিলে মেনে নিতে কষ্ট হয়। তবে রচনা বলেন, এমন নয় যে রৌনক খারাপ। আসলে সময় এবং পরিবেশটাই এই রকম। সব শুনলেও নিজের যেটা মনে হবে সেটাই করে এখনকার ছেলেমেয়েরা। এই সময়টায় নিজেদের ওদের মতো করে বদলে ফেলতে হবে, মন্তব্য করেন রচনা।
ছেলের জন্য অভিনয় ছেড়েছেন রচনা। শুধুমাত্র দিদি নাম্বার ওয়ান এর সঞ্চালনা সামলাচ্ছেন তিনি। শুধু তাই নয়, রৌনককে যাতে বাবা মায়ের ডিভোর্স নিয়ে কোনো কথা শুনতে না হয় তাই স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদও করেননি রচনা। ছেলেকে নিয়েই নিজের জগৎ সাজিয়েছেন তিনি।