হাত কেটে যাওয়ায় ট্রেনে ছটফট করছিল শিশু, খবর পেয়েই রেলমন্ত্রী যা করলেন, ভারত জুড়ে হচ্ছে প্রশংসা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ট্রেনের জানালায় হাত কেটে যাওয়ার ফলে তীব্রগতিতে ঝরছিল রক্ত! স্বভাবতই যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে এক বাচ্চা। সেই সময় তার পরিবার কিংবা ট্রেনের অন্যান্য প্যাসেঞ্জারদের কাছে ফার্স্ট এইড না থাকার কারণে কেউ সাহায্যার্থে এগিয়ে আসতেও পারেননি, অবশেষে যন্ত্রণায় কাতরানো সেই বাচ্চাটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেয় ভারতীয় রেল। তবে এক্ষেত্রে সমাজসেবী নব্যেন্দু মৌলিকও কৃতিত্বের দাবি রাখেন। তাঁর সাহায্য এবং রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব দ্বারা দ্রুত পদক্ষেপের মাধ্যমে এদিন সেই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠে বাচ্চাটি আর এই ঘটনাটি বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরেই ভারতীয় রেলের এহেন কর্মকাণ্ডের প্রশংসায় মেতে উঠেছে সকলে।

ঘটনাটি সম্পূর্ণ বিবরণ দিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন জলপাইগুড়ির প্রকাশ ফাউন্ডেশনের সম্পাদক এবং সমাজসেবী নব্যেন্দু মৌলিক। তিনি লেখেন, “একটি কাজের জন্য আমি হলদিবাড়ি এক্সপ্রেসে করে জলপাইগুড়ি থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম। মাঝপথে কিশানগঞ্জ স্টেশন থেকে একটি পরিবার তাদের বাচ্চাকে নিয়ে আমাদের কামরায় ওঠে। এর পরেই হঠাৎ রামপুরহাটের নিকট বাচ্চাটি কাঁদতে আরম্ভ করেম সামনে যেতেই আমি লক্ষ্য করি যে, ট্রেনের জানলার একটি কাঁচ হাতে পড়ে যাওয়ার কারণে ওই বাচ্চাটি আঙুলে চোট পায় এবং দ্রুত রক্ত বেরোনোর কারণে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে সে!

তিনি আরো বলেন, “এর পরেই আমি ফার্স্ট এইডের খোঁজ করতে থাকি। আমার কাছে না থাকায় অন্যান্য সকল প্যাসেঞ্জারদের কাছেও আমি খোঁজ করি, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত কারো কাছেই তা ছিলো না। এর উপর আবার নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে রেলের হেল্পলাইন নম্বরও কানেক্ট হতে চায়না। শেষ পর্যন্ত আমি আমাদের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে ট্যাগ করে পুরো ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে একটি টুইট করি আর এর কিছু সময়ের মধ্যেই ভারতীয় রেলের তরফ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।”

ভারতীয় রেল সূত্রে খবর, টুইট পাওয়া মাত্রই রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব হাওড়া স্টেশনের ডিআরএমকে দ্রুত ঘটনাটি দেখতে বলেন। রেলমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়া মাত্রই আসরে নামে রেল কর্মীরা। বোলপুর স্টেশন আসামাত্র সেখানকার স্বাস্থ্য কর্মীরা বাচ্চাটির চিকিৎসা করে বলে জানা গিয়েছে। উক্ত সময়ে প্রায় 25 মিনিট ট্রেন থামানো হয় এবং পুরো সময় ধরেই শিশুটির চিকিৎসা চলে। এরপর ফার্স্ট এইড দেওয়ার মাধ্যমে বাচ্চাটি সুস্থ হয়ে ওঠে এবং শেষ পর্যন্ত ট্রেনটি কলকাতা গিয়ে পৌঁছায়।

এরপরেই নব্যেন্দু বাবু একটি টুইট করে বলেন, “আমরা বিভিন্ন সময়ে রেলের খারাপ পরিষেবা দেখে থাকি, কিন্তু কোনোরকম সমাধানের রাস্তাও খুঁজে পাওয়া যায়না। তবে আজ আমার টুইট করার পরেই যেভাবে ভারতীয় রেলের তরফ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হল এবং দ্রুত আসরে নেমে বাচ্চাটির চিকিৎসা করে তাকে সুস্থ করে তোলা হল, তা দেখে আমি আপ্লুত। ভালো কাজকে আমাদের ভালো বললেই হবে। ধন্যবাদ ভারতীয় রেল, ধন্যবাদ মাননীয় রেলমন্ত্রী।”


Sayan Das

সম্পর্কিত খবর