বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজীব ব্যানার্জী (Rajib Banerjee) একদা রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী ছিলেন। এরপর একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকারের দুর্নীতি, তোলাবাজি, স্বজনপোষণের বিরুদ্ধে সরব হয়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। রাজ্য জুড়ে নির্বাচনী প্রচারে ঘুরে বেরিয়েছিলেন তিনি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে দেগেছিলেন একের পর এক তোপ। বিজেপির টিকিটে নিজের চিরাচরিত আসন ডোমজুড় থেকে প্রার্থীও হন। কিন্তু দাঁত ফোটাতে পারেননি। ৪২ হাজারেরও বেশী ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জী।
ভোটে পরাজিত হওয়ার পর থেকে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে দিনদিন দুরত্ব বেড়েই চলেছিল তাঁর। কোনও মিটিংয়ে দেখা যেত না তাঁকে। যখন ওনাকে নিয়ে চারিদিকে নানান জল্পনা উঠেছিল, তখন তিনি বলেছিলেন ‘বর্তমানে করোনায় আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে চাই। এখন রাজনীতি করার সময় নেই।” এরপর থেকে তাঁকে পার্টির কোনও বৈঠকেও দেখা যায় নি। আর এরই মধ্যে গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিস্ফোরক পোস্ট করে তিনি বুঝিয়ে দেন যে, বিজেপির সঙ্গে ওনার মোহভঙ্গ হয়েছে।
— Rajib Banerjee (@RajibBanerjeeWB) June 8, 2021
কেন মোহভঙ্গ হল রাজীবের?
ঘনিষ্ঠ সুত্র অনুযায়ী, বিজেপি যেভাবে এরাজ্যে উগ্র হিন্দুত্ববাদী মনোভাব নিয়ে চলছে, তা বাংলার মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে বলে মনে করছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটে হারার পর না, নির্বাচনের আগেও তিনি দলের উগ্র হিন্দুত্ববাদ নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু বিজেপি তখন বাংলায় ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখছিল, তাই তাঁর কথায় পাত্তা দেয়নি।
একদা পুরোহিতদের কম ভাতা দেওয়া হচ্ছে বলে সরব হয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় তিনি কলকাতা অবরুদ্ধ করার ও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তবে নির্বাচনী প্রচারে নেমে সফট হিন্দুত্ব আপন করে তিনি শুধু কর্মসংস্থান করে দেওয়া এবং দুর্নীতি মুক্ত বাংলা গড়ার ডাক দিয়েছিলেন। ভোট শেষে রাজীব যেমন নিজের জায়গায় কায়েম রয়েছেন, তেমনই বিজেপিও উগ্র হিন্দুত্ববাদের পথ থেকে সরেনি।
রাজীব ঘনিষ্ঠ মহলে এও জানিয়েছে যে, বিজেপি এখনও বারবার দিল্লী আর রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের ভয় দেখিয়ে চলেছে আর মমতা এবং অভিষেককে নিয়ে কুৎসা করে চলেছে। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ভোটে হারের পর বিজেপির নীতি পরিবর্তনের দরকার ছিল, কিন্তু তাঁরা সেটা করেনি। আর এই কারণেই তিনি বিজেপির সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী নন।