বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের নির্বাচনে তৃণমূলের জয়ের পরেই বারবার উঠে এসেছে ‘ঘর ওয়াপাসি’র তত্ত্ব। অর্থাৎ নির্বাচনের আগে দল ত্যাগ করা নেতারা ফের একবার সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে চান পুরনো দলের সঙ্গে। তালিকাটা বেশ লম্বা হলেও এই মুহূর্তে মুকুল রায় (Mukul Roy) ছাড়া তেমন কোন বড় পরিচিত মুখকে দলে ফেরায়নি ঘাসফুল শিবির। যদিও ফেরার বার্তা দিয়ে রেখেছেন অনেকেই। অনেকেই আবার এমনও রয়েছেন, যারা সরাসরি ঘরে ফেরার বার্তা দেননি। কিন্তু সরাসরি বর্তমান দলের প্রতি উগড়ে দিয়েছেন ক্ষোভ।
ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব ব্যানার্জি (Rajib Banerjee) যে তাদের মধ্যে অন্যতম এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। অন্যদের মত সরাসরি ঘরে ফেরার বার্তা না দিলেও বেশ কয়েকবার বর্তমান দল বিজেপির বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। তার জেরে অনেকেই মনে করেছিল হয়তো ফের একবার দল পরিবর্তন করতে পারেন রাজীব। কিন্তু কোনো পক্ষই এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত সেভাবে মুখ খোলেনি। এরই মাঝে মুকুল রায়ের বাসভবনে মুকুলবাবুর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ নিয়ে ফের একবার তৈরি হলো জল্পনা।
মুকুল রায়ের স্ত্রী কৃষ্ণা রায় (Krishna Roy) কোভিড আক্রান্ত হবার পর ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছিলেন। চিকিৎসকদের বহু চেষ্টার পরেও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি তাকে। ৬ জুলাই গত হন তিনি। বৃহস্পতিবার তার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান ছিল মুকুলবাবুর কাঁচরাপাড়ার বাসভবনে। স্বাভাবিকভাবেই উপস্থিত ছিলেন একাধিক তৃণমূল নেতা। তবে পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim ), তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় (Prasun Bandyopadhyay) শুধু নয়, উপস্থিত হন একাধিক বিজেপি নেতৃত্বও। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সুনীল সিং (Sunil Singh), সব্যসাচী দত্ত (Sabyasachi Dutta) এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (rajib banerjee)। স্বাভাবিকভাবেই ফের একবার তৈরি হয়েছে জল্পনা।
এ প্রসঙ্গে অবশ্য রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে মুকুল রায়, শুভ্রাংশু রায়ের সঙ্গে আমার পরিচয়। শুভ্রাংশুর মায়ের সঙ্গেও আমার বহুদিনের সম্পর্ক। বহুবার ওনার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। উনি যখন অসুস্থ ছিলেন দেখা করেছি। হাসপাতালেও গিয়েছি। আজও এলাম।” যদিও এই সাক্ষাৎকে অরাজনৈতিক আখ্যা দিলেও তিনি বলেন, “রাজনীতিতে মাঝে মাঝে নীরব থাকতে হয়।”
তার এই মন্তব্য যে ভীষণ তাৎপর্যপূর্ণ এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। দলীয় সূত্রে এমনটাও শোনা গিয়েছিল একুশে জুলাই দল বদলুদের নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে তৃণমূল। সেদিন কি তালিকায় থাকবে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম? নরমপন্থী নাকি চরমপন্থী মমতা ব্যানার্জীর (Mamata Banerjee) তালিকায় কোন শ্রেণীতে পড়েন রাজীব সেটাই এখন দেখার।