হামলাকারীকে ‘ছাড়’, উল্টে রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীদের বিরুদ্ধেই জামিন অযোগ্য ধারা পুলিশের

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মধ্যরাতে শিলিগুড়িতে (Siliguri) রামকৃষ্ণ মিশনে (Ramkrishna Mission) দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব। অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরা বন্দুক দেখিয়ে সাধুদের মিশন থেকে বের করে দেওয়া হয়। এরপরই আতঙ্কে থানা-বিএলআরও অফিসের দ্বারস্থ হন সাধুরা। গত রবিবারের ভয়াবহ এই ঘটনার পর এবার পাল্টা সন্ন্যাসীদের বিরুদ্ধেই জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করল মমতার পুলিশ। এমনটাই অভিযোগ সামনে আসছে।

জানা গিয়েছে, রবিবার রাতের ওই ঘটনার পর মিশন কর্তৃপক্ষ প্রদীপ রায়সহ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ভত্তিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। আশ্রমে অনধিকার প্রবেশ, মারধর, প্রাণ নাশের চেষ্টা, অপহরণের মতো গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়। এদিকে পালটা থানায় গিয়ে অভিযুক্ত প্রদীপ রায় রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীদের বিরুদ্ধেই জমি দখলের অভিযোগ আনে।

প্রদীপ রায়ের অভিযোগ, প্রায় দেড় একর জমি জবরদখলের চেষ্টা করছে মিশন। এর ভিত্তিতেই এবার পদক্ষেপ নিল রাজ্য পুলিশ। যার বিরুদ্ধে প্রাণ নাশের চেষ্টা, অপহরণের মতো গুরুতর অভিযোগ, সেই প্রদীপ রায়সহ অন্য ‘দুষ্কৃতীদের’ বিরুদ্ধে লঘু ধারা প্রয়োগ করেছে পুলিশ। আর জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীদের বিরুদ্ধে। ভক্তিনগর থানার পুলিশ এই মামলা দায়ের করেছে।

এই নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে রামকৃষ্ণ মিশনের মুখপাত্র স্বামী সুবীরানন্দ বলেন, ‘রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীরা কোনও রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন না। ভোটদান থেকেও বিরত থাকেন। কিন্তু ভক্তরা কে কোথায় ভোট দেবেন সেটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। এব্যাপারে রামকৃষ্ণ মিশন কখনও কোনও নির্দেশ দেয় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিলিগুড়িতে একটা জমি সংক্রান্ত সমস্যা হয়েছে বলে শুনেছি। ওই জমি জনকল্যাণেই ব্যবহার হবে। আমরা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা রাখছি প্রশাসন এই বিষয়ে সমস্যার সমাধানে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

Miscreants attack Jalpaiguri Ramkrishna Mission allegedly kidnapped 7 people

আরও পড়ুন: আজ সন্ধ্যার দিকে ঝড়-বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গের সাত জেলায়, ভিজবে কলকাতাও: আবহাওয়ার খবর

প্রসঙ্গত, রবিবার রাতে শিলিগুড়ি লাগোয়া শালুগাড়ায় রামকৃষ্ণ মিশনের একটি আশ্রমে আগ্নেয়াস্ত্র সহ হামলা চালায় প্রায় ৫০ জন দুষ্কৃতী। আশ্রমের সন্ন্যাসীদের নিগ্রহ করার পাশাপাশি একাধিক আবাসিককে অপহরণ করে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। জানা গিয়েছে রামকৃষ্ণ মিশনকে ওই জমি ও দোতলা বাড়িটি দান করেছিলেন এক ভক্ত। এদিকে অভিযুক্ত প্রদীপ রায়ের দাবি ওই জমির আসল মালিক সে।

রাতের অন্ধকারে ওই হামলার ঘটনার পর পর আদালতের কোনও নির্দেশ ছাড়াই আশ্রমের প্রধান ফটক সিল করে দিয়ে যায় রাজ্য পুলিশ। অভিযুক্তর বিরুদ্ধে তেমন কোনো পদক্ষেপই নেওয়া হয়নি। আর এবার রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসীদের বিরুদ্ধেই জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর