বসতে পারেনা পড়ুয়ারা, নেই ক্লাসঘর! অবসরের দিন স্কুলকে ২ লাখ টাকা দান করলেন হেড মাষ্টার

বাংলা হান্ট ডেস্ক : সমাজে একজন শিক্ষকের গুরুত্ব অপরিসীম। আর সেই শিক্ষক যদি অলোক কুমার বিশ্বাসের (Alok Kumar Biswas) মত কোন ব্যক্তিত্ব হন তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। কাগজে-কলমে নিজের শিক্ষকতার শেষ দিনে নিজের সমস্ত সঞ্চয় দান করে গেলেন স্কুলের কাজে (Donation For School Development)। আর এমন নজীরবিহীন কাজের সাক্ষী রইল রানাঘাটের রথতলা কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়।

আসলে স্কুলে পড়ানোর সময় পড়ুয়াদের কষ্ট, সমস্যা তাঁকে ব্যথিত করে তুলত। কখনও দেখতেন পড়ুয়ারা ঠিকভাবে বসতে পারছেনা তো কখনও দেখতেন পড়ার ইচ্ছে থাকলেও পরিকাঠামোর অভাবে ছেলেমেয়েরা ঠিকঠাক পড়াশোনা করতে পারছেনা। এইসব বিষয়গুলি অলোকবাবুর কাছে বড়োই পীড়াদায়ক ছিল।

তখনই তিনি সংকল্প করেছিলেন, অবসরের সময় ব্যক্তিগত উদ্যোগেই স্কুলে নতুন করে ক্লাসঘর তৈরির জন্য অর্থ দেবেন (school development)। আর বাস্তবিকই তেমনটা করলেন তিনি। গত সোমবার রানাঘাটের রথতলা কলোনি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অলোককুমার বিশ্বাস স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিলেন ২ লক্ষেরও বেশি কিছু টাকা।

সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় তথা গোটা রানাঘাটের কাছে উদাহরণ হয়ে রইলেন অলোকবাবু। এইদিন স্কুলের শিক্ষকরা বলেন, এভাবেই একজন শিক্ষক তার ছাত্রদের কাছে বন্ধু, দার্শনিক, পথপ্রদর্শক ও অভিভাবক হয়ে উঠতে পারেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইংরেজি সাহিত্যের এই শিক্ষক ২০১৪ সালে এই বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষকের দায়িত্ব নেন।

তিনি কৃষ্ণনগরের রামকৃষ্ণ আশ্রম পাড়ার বাসিন্দা। জানা যাচ্ছে রানাঘাট বিদ্যালয়ের ভার গ্রহণের আগে তিনি পলাশিপাড়ার সাহেবনগর হাইস্কুলে দীর্ঘ ২০ বছর শিক্ষকতা করেছেন। এই বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক অনুপকুমার ঘোষ বলেন, “অলোকবাবু আমাকে হাত ধরে শিখিয়েছেন অনেক কিছু। ছাত্রছাত্রীদের কাছেও তিনি শ্রদ্ধেয়।”

education municipal students interact classroom municipal education c9e9a2e4 04ea 11e8 987c 1603f9800600

আর যে মানুষটা হাসিমুখে এই দান করলেন সেই অলোকবাবু বলেন, “ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারে, তারজন্য নতুন ক্লাসরুম তৈরির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলাম। তাই শেষ জীবনের জমানো কিছু অর্থ বিদ্যালয়কে দিতে পেরে মানসিক ভাবে তৃপ্ত হয়েছি।” এইদিন প্রধানশিক্ষককে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। সকলে মিলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করেছিল। দেখতে এসেছিল স্থানীয়রাও।

Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর