বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভারত একটা সময় ভুগছিল চরম আয়োডিনের ঘাটতিতে। দরিদ্র ভারতের দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর আয়োডিনের অভাব মেটানোর জন্য সেদিন এগিয়ে এসেছিলেন রতন টাটা (Ratan Tata)। তাঁর তৈরি পণ্য সুলভে পৌঁছে গিয়েছিল প্রত্যেক ভারতবাসীর রান্নাঘরে। নুন ছাড়া কোনো খাবারই পূর্ণতা পায়না।
রতন টাটার (Ratan Tata) নুন তৈরির প্ল্যান
সোডিয়াম আর ক্লোরিনের সংমিশ্রণে তৈরি এই সাদা যৌগে থাকে আরো একটি বিশেষ উপাদান। সেটিই হল আয়োডিন। মানব শরীরে অত্যন্ত জরুরি একটি উপাদান হল এই আয়োডিন। তবে এই আয়োডিন (Iodine) কিন্তু মানব শরীর নিজে থেকে তৈরি করতে পারেনা। খাদ্যবস্তুর মাধ্যমে সেই আয়োডিন গ্রহণ করতে হয়।
মস্তিষ্কের গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে আয়োডিন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, আয়োডিনের অভাবে শারীরিক দুর্বলতা, চুল পড়ে যাওয়া, হাড়ের জয়েন্টে ব্যথা, অনিয়মিত মাসিক, গলগণ্ড রোগের মতো একাধিক শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। টাটা সংস্থা লবণ উৎপাদন শুরু করে ১৯২৭ সাল নাগাদ।
আরোও পড়ুন : ১ নভেম্বর থেকে…! পাল্টে গেল রেশনের এই নিয়ম! নয়া নির্দেশ জারি হতেই শোরগোল
তারপর ১৯৮৩ সালে টাটা ভারতের বাজারে আনে আয়োডিনযুক্ত লবণ। সেই সময় ভারতীয়দের মধ্যে আয়োডিনের অভাব ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে টাটা সংস্থার তৈরি আয়োডিনযুক্ত লবণ সেই অভাব দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছিল। এরপর ১৯৮২ সালে সরকার ঘোষণা করে ১৯৯২ সালের মধ্যে দেশের সব ভোজ্য লবণকে আয়োডিনযুক্ত করতে হবে।
আরোও পড়ুন : গ্যাঁজানোর জায়গা! ‘এরা ডাক্তার হলে মারধর খেত’, আর জি কর শুনানি পেছনোয় তীব্র প্রতিক্রিয়া কুণাল সরকারের
ততদিনে অবশ্য দেশের প্রত্যেকটি রান্নাঘরে সুপরিচিত ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে টাটা সল্ট (Tata Salt)। ২০১৯ সালের একটি হিসাব অনুযায়ী, এতদিনে টাটা গোষ্ঠী (Tata Group) বিক্রি করে ফেলেছে ৯০ হাজার মেট্রিক টনের বেশি লবণ। বিক্রেতাদের মাধ্যমে ভারতের (India) প্রায় ১৬১ মিলিয়ন বাড়িতে পৌঁছে গেছে টাটা সল্ট।
শুরুর দিন থেকে টাটা গোষ্ঠী আয়োডিনযুক্ত লবণের দাম সর্বদা সাধারণ মানুষের আয়ত্তের মধ্যে রাখার চেষ্টা করেছে। শুধু ব্যবসা নয়, সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে টাটা গোষ্ঠী পৌঁছে গিয়েছে সাধারণ মানুষের মনের মণিকোঠায়। তাই রতন টাটা আজও শিল্পপতি হিসাবে শুধু নয়, সমাজ সংস্কারক হিসেবেও জায়গা করে নিয়েছেন আম আদমির মনে।