বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রেশন দুর্নীতিকাণ্ডে উদ্ধার একের পর এক ডায়েরি (Diary)। কিছুদিন আগেই রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় ধৃত প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের (Jyotipriya Mallick) প্রাক্তন আপ্তসহায়ক অভিজিৎ দাসের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় মেরুন রঙা এক ডায়েরি। ED-র হাতে আসা সেই মেরুন ডায়েরিতে বেশ কিছু টাকার লেনদেন সম্পর্কে তথ্য রয়েছে বলে জানা গিয়েছিল। সেই ডায়েরি নিয়েই যখন জোর চৰ্চা সেই সময় উদ্ধার আরও এক রহস্যময় ডায়েরি।
রেশন দুর্নীতির তদন্তে বেশ সক্রিয় ইডি। ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক জেলায় চলেছে তল্লাশি। শনিবার বনগাঁয় (Bongaon) দুই চালকল ও গমকল ব্যবসায়ীর মিল ও বাড়িতে চিরুনি তল্লাসি চালায় ইডি। উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু নথিপত্র। সূত্রের খবর, এরই মধ্যে রেশন দুর্নীতিতে ধৃত বাকিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকেও এক ডায়েরি উদ্ধার করেছ ইডি। যেই ডায়েরি থেকেও বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এসেছে তাদের।
ইডি সূত্রে খবর, ধৃত বাকিবুর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীর গমকল থেকে পাচার হওয়া চোরাই চাল ও আটা কোন কৌশলে ডিস্ট্রিবিউটর ও রেশন ডিলারদের কাছে পাচার করা হত সেই সমস্ত বিষয়ের স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে ডায়েরিতে। তদন্তকারীদের অভিযোগ, বাকিবুর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের গমকল থেকে গম ভাঙানোর পর তার ৩০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত আটা বাইরে পাচার করে দেওয়া হত।
আরও পড়ুন: আজ ভবানীপুরে ‘বিরাট’ আয়োজন তৃণমূলের! থাকবেন খোদ মমতা, লোকসভার আগে বিগ প্ল্যান
তারপর সেই চোরাই আটা বাকিবুরের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের প্যাকেজিং সংস্থায় গিয়ে পৌঁছত। সেই আটাই পড়ে প্যাকেট করে সারা রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে ছেয়ে যেত। তদন্তে জেলার ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ডায়েরিতে কিভাবে চোরাপথে চাল, আটা কেনা হয়েছে, কত পরিমাণ চোরাই দ্রব্য কত দামে কেনা হয়েছে, পাশাপাশি কোন কোন ব্যবসায়ীর কাছে ওই সামগ্রী পাঠানো হয়েছে সেই সবের উল্লেখ রয়েছে।
রহস্যময় সেই ডায়েরিতে উল্লেখ রয়েছে টাকার হিসেবেরও। ইতিমধ্যেই সেই সমস্ত তথ্যের ভিত্তিতে এক ডজন ব্যবসায়ীদের তালিকাও ইডি তৈরী করেছে বলে সূত্রের খবর। ইডি সূত্রে জানা যাচ্ছে, কয়েকজন প্যাকেজিং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের নাম রয়েছে সেই তালিকায়। রয়েছে বেশ কিছুজন রেশন ডিলারের নামও। চলতি সপ্তাহেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানা যাচ্ছে।
ওদিকে ইডি সূত্রে খবর, জেলার যেই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ডায়েরিটি উদ্ধার হয়েছে, তিনি ইডি জেরায় নিজ মুখে সমস্ত বিষয় স্বীকার করে নিয়েছেন। চাল বা গম কেনাবেচার লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও গত দশ বছর ধরে তিনি বেআইনিভাবে রেশনদ্রব্য কেনাবেচা করছেন। রেশন ডিলারদের মাধ্যমে চাল ও গম কিনে বাইরে খোলা বাজারে ব্যবসায়ীদের বিক্রি করতেন বলেও তিনি জেরায় স্বীকার করে নিয়েছেন বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর।