বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রেশন দুর্নীতি (Ration Scam) নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য। গত অক্টোবর মাসে টানা ৫৩ ঘণ্টা অভিযানের পর জ্যোতিপ্ৰিয় (Jyotipriya Mallick) ঘনিষ্ঠ বাকিবুর রহমান নামের (Bakibur Rahaman) এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (Enforcement Directorates)। এবার সেই বাকিবুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্ফোরক তথ্য ইডির হাতে।
ইডি সূত্রে খবর, তদন্তে তাদের হাতে একটি খাতা এসেছে। যেই খাতা দেখে চোখ কপালে তদন্তকারীদের। ওই খাতায় নাকি নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে লেখা রয়েছে চুরির হিসাব রাখা হত। কত পরিমাণ চুরির আটা বিক্রি হল, কত এল, কে কত বেঁচলো আর সেসব থেকেই বা কত লাভ হল সেই সবের পাই পয়সার হিসেব রয়েছে সেই খাতায়।
জানা যাচ্ছে সেই খাতা থেকেই রেশন দুর্নীতিতে যুক্ত একাধিক ডিস্ট্রিবিউটার ও ডিলারের নাম উঠে এসেছে। এই রকমই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য ইডির হাতে। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, ‘ওপেন মার্কেট সেল অব পিডিএস রেশন’ পয়েন্টারের মধ্যে চুরির আটা কততে বিক্রি হয়েছে, কে বিক্রি করেছে, কার কাছে বিক্রি হয়েছে এই সব কিছুর ‘নিয়মমাফিক’ হিসেব রয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘ওই MG টা আসলে কে? নতুন বোতলে পুরনো মদ…’, রাজ্যে তোলপাড় ফেলে দিলেন শুভেন্দু
এখানেই শেষ নয়, ‘ক্যাশ পেমেন্ট মেইড টু ডিস্ট্রিবিউটার’ পয়েন্টারের মধ্যে ডিস্ট্রিবিউটারদের বকেয়া, পেমেন্ট, পাওনার হিসেব। আর এরপরই কোন প্রভাবশালীদের কত টাকা দিতে হবে, কত দেওয়া হয়েছে সেই সমস্ত হিসেব লেখা রয়েছে সেই ‘চোরাই’ হিসেবের খাতায়। যা দেখে রীতিমতো ভিরমি খাচ্ছে ইডিও।
প্রসঙ্গত, ধৃত বাকিবুর রহমানের সূত্র ধরেই গত ২৭ অক্টোবর রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্ৰিয় মল্লিককে গ্রেফতার করে ইডি। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে প্রেসিডেন্সি জেলে ঠাঁই হয়েছে তার। কোমর বেঁধে রেশন দুর্নীতির তদন্তে নেমেছেন ইডি আধিকারিকরা। আর তাতেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে।
ইডির দাবি, রাজ্যের একাধিক সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির আইডি ও পাসওয়ার্ড জানতেন জ্যোতিপ্ৰিয় ঘনিষ্ঠ বাকিবুর। শুধু যে জানতেন তেমনটা নয়। সেগুলির নিয়ন্ত্রণও ছিল তার হাতের মুঠোয়। আর সেও সুযোগকে কাজে লাগিয়েই নিজেদের ইচ্ছামত শয়ে শয়ে ভুয়ো কৃষকদের নাম নথিভুক্ত কথা হত সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির (Co-operative society) তালিকায়। এভাবেই দিনের পর দিন দেদারে চলত দুর্নীতি। আর কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হত।