একসময় তারা ছিলেন স্বামী-স্ত্রী। পোড়খাওয়া রাজনীতিবিদ স্বামীর পাশাপাশিই থাকতেন তার স্ত্রীও। কিন্তু হঠাৎই তাদের দাম্পত্যে প্রবেশ ঘটে অন্য নারীর। স্বামীর এই বিশেষ বান্ধবীকে একেবারেই ‘না পসন্দ’ ছিল স্ত্রীর। এই ত্রিকোণ সম্পর্ককে নিয়ে শুরু হল তুমুল চর্চা, আর তারপর থেকেই একেবারে খবরের শিরোনামে উঠে এল তিনটি নাম রত্না, শোভন আর বৈশাখী।
তারপর কালক্রমে প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ঘাসফুল শিবিরের সঙ্গ ত্যাগ করলেন। শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের দূরত্ব বাড়তেই তার বিধানসভা কেন্দ্রে তার প্রাক্তন স্ত্রী রত্নাদেবীকে প্রার্থী করে তৃণমূল নেতৃত্ব। এরপরে অবশ্য শোভন চট্টোপাধ্যায় তাঁর বিশেষ বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করলেও সেখানে থিতু হতে পারেননি। এরপর রাজনীতিকে অবশ্য একপ্রকার “টাটা বাই-বাই” বলে দিয়েছিলেন।
কিন্তু, পুরনো দ্বন্দ, বিবাদ ভুলে ফের বান্ধবী বৈশাখীকে নিয়ে বুধবার বিকেলে সশরীরে হাজির হলেন নবান্নে। রীতিমতো তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে বৈঠকও সারলেন। আর মুখ্যমন্ত্রীর সাথে শোভন-বৈশাখী এই বৈঠকের কথা প্রকাশ্যে আসতেই তাদের ফের তৃণমূলে যোগদান প্রসঙ্গে জল্পনা ছড়ালো। যদিও এই বিষয়ে এখনো পর্যন্ত একেবারেই মুখ খোলেননি শোভন এবং বৈশাখী। তবে শোভনের বক্তব্যে এটা পরিষ্কার যে তিনি ভবিষ্যতে দিদির অনুগামী হয়েই কাজ করতে চান।
এদিকে প্রাক্তন স্বামী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দলে ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে পরিষ্কারভাবে নিজের মতামত ব্যক্ত করলেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। এমনকি শোভনবাবুর তৃণমূলে কামব্যাক করার প্রসঙ্গ উঠলে রত্নাদেবী সে বিষয়টিকে সাধুবাদও জানান। যদিও, এর পাশাপাশি বিজেপিতে শোভনবাবুর যোগদানের প্রসঙ্গ নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি। রত্নার কথায়, “দিদি তো ওনাকে বিজেপি তে যেতে বলেন নি! কী ভেবে গিয়েছিলেন! আমি আশা করছি এরপর থেকে ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্ত নেবেন।” তিনি আরোও বলেন, ভুল করলে দিদি সবাইকেই বকেন। উনি যদি পারেন তাহলে উনি দল করুন। রাজনীতিতে এখনো পর্যন্ত উনার অনেক কিছুই দেওয়ার রয়েছে। হঠাৎ করে দল ছেড়ে চলে গেলেন আবার দলে ফিরে আসলেন। আমার মনে হয় একবার দল ছেড়ে চলে যাওয়া, হঠাৎ করে আবার যোগদান করা বিষয়টি বোধহয় ঠিক নয়। তবে উনি যখন বলছেন উনি এবার দিদির পরামর্শমতো কাজ করবেন,তাহলে আর ভবিষ্যতে ভুল করবেন না বলেই মনে হয়।”
তবে বৈশাখীদেবীর মতো রত্না দিও মনে করেন শোভন বাবুর এখনো রাজনীতিতে অনেক কিছুই দেওয়ার মত রয়েছে। রত্না দেবী অবশ্য স্পষ্ট করেই বলেছেন, তার বর্তমান জীবনে শোভনবাবু এবং বৈশাখীদেবীর সম্পর্কের আর কোনো প্রভাব নেই। ফলত শোভনবাবু দলে ফিরে তার সঙ্গে একই মঞ্চে উঠতে ও কোনও সমস্যা নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন রত্নাদেবী।