বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কেন্দ্রে মোদি সরকার আসার পর ২০১৭ সালে চালু হয়েছিল জিএসটি (GST) বা পণ্য পরিষেবা কর। তারপর থেকই বড় ধাক্কা খেয়েছে পুরসভাগুলির নিজস্ব আয়। জিএসটি (GST) ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর থেকেই আর্থিকভাবে ব্যাপক দুর্বল হয়ে পড়তে শুরু করে পুরসভাগুলি। এই অবস্থায় পুরসভা গুলির হাল ফেরাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থাৎ রিসার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া তাদের নিজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য সাধারণ মানুষের উপরেই করের বোঝা চাপানোর নিদান দিয়েছে।
GST-র ধাক্কায় আয় কমছে পুরসভাগুলির
তা নাহলে আগামী দিনে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ বা নাগরিক পরিষেবা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে পুরসভাগুলিকে। প্রত্যক্ষ কর ব্যবস্থা সরলীকরণের উদ্দেশ্যেই প্রথম চালু হয়েছিল জিএসটি (GST)। কিন্তু এই ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর থেকেই বিলুপ্ত হয়েছে একাধিক পুরনো কর প্রথা। আর এসবের চক্করে প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুরসভার বিভিন্ন কর।
আরবিআই-এর কথায় ইতিমধ্যেই অকট্রয়, এন্টারটেইনমেন্ট ট্যাক্স, কিংবা অ্যাডভার্টাইজমেন্ট ট্যাক্সের মতো নানা ধরনের করের বিলুপ্তি ঘটেছে। কিন্তু পরিবর্তে জিএসটি (GST) থেকে যা আয় হচ্ছে, তা সরাসরি চলে যাচ্ছে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের ভাঁড়ারে। আরবিআইয়ের হিসেব, আনুযায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষেও পুরসভাগুলির সামগ্রিক আয়ের মধ্যে নিজস্ব রাজস্ব ছিল ৭৪ শতাংশ।
অথচ পরের বছরগুলি থেকেই লাগাতার কমেছে রাজস্বের ভাগ। হিসাব বলছে পরের পাঁচ বছরে এক ধাক্কায় সেই হার গড়ে ৬০ শতাংশে নেমে এসেছে। যার ফলে পুরসভাগুলির কর সহ অন্যান্য খাতের আদায় কমেছে ১৪ শতাংশ। পুরসভাগুলি বিভিন্ন উৎস থেকে যে আয় করে তার মধ্যে কর বাবদ রাজস্ব আদায়ের হার ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে ছিল ৪২.৮ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে তা নেমে এসেছে ২৯.৬ শতাংশে।
আরও পড়ুন: মমতার দাওয়াই! রোগী কল্যাণ সমিতির মাথা থেকে ছেঁটে ফেলা হল তৃণমূল নেতাদের, কারা পেলেন নয়া দায়িত্ব?
এখন প্রশ্ন হল পুরসভাগুলির চলছে কীভাবে? আর বি আই এর হিসাব বলছে কেন্দ্রীয় গ্রান্ট বা সরকারি অনুদানের ওপর নির্ভর করেই এখনও টিকে আছে এই পুরসভাগুলি। অর্থাৎ সরকারের উপর আরো বেশি আর্থিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি পুরসভা গুলি। প্রসঙ্গত জিএসটি আইন অনুযায়ী পণ্য পরিষেবা বাবদ আয় হওয়া টাকা ভাগ হয়ে যায় রাজ্য সরকার আর কেন্দ্রের মধ্যে। পু
রসভা গুলিকে তার হকের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন আইন নেই। রাজ্য সরকার চাইলে তার জিএসটির ভাগ থেকেই পুরসভাগুলিকে টাকা দিতে পারে। তবে এক্ষেত্রে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আর বি আই এর দাবি দেশের অন্তত ৪০ শতাংশ রাজ্যের রাজস্ব ঘাটতি চলছে। সাধারণ মানুষ এখন গ্রাম ছেড়ে শহরে আসছেন। এই নগরোন্নয়ের যুগে আধুনিক পরিকাঠামো তৈরি করতে আরো বেশি জোর দিতে হচ্ছে পুরসভা গুলিকে।
সেই সঙ্গে পুরসভার নতুন পুরনো বাসিন্দাদের আরো উন্নত নাগরিক পরিষেবার চাহিদা তৈরি হয়েছে।অন্যদিকে পুরসভা গুলির আর্থিক হালও দিনে দিনে বেহাল হয়ে পড়ছে। তাই পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে তাতে পুরসভা গুলির নাগরিক চাহিদা পূরণ করা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে উঠতে চলেছে। এক্ষেত্রে রাজস্ব বৃদ্ধির একাধিক পরামর্শ দিয়েছে আরবিআই। এক্ষেত্রে সম্পত্তি করের সংস্কার এবং পরিষেবা জনিত করের সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। মোট কথা হল কর বৃদ্ধি ছাড়া উপায় নেই।