বাংলা হান্ট ডেস্ক : ফের তিনিই এলেন ক্ষমতায়। দুই দশক ধরে তিনি শাসন করছেন। অন্যথা হলনা এবারও। তৃতীয়বারও প্রেসিডেন্টের গদি ধরে রাখলেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান (Recep Tayyip Erdogan)। সোমবার প্রকাশিত হয় তুরস্কের (Turkey) প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল। দেখা যায়, প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কিলিচদারুলুকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন এরদোয়ানই। এই নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন তিনি।
তুরস্কের চরম অর্থনীতির সঙ্কট এই নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করা হয়েছিল, কিন্তু যাবতীয় চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ২০২৮ সাল অবধি প্রেসিডেন্টের গদি পাকা করে নিলেন এরদোয়ান। নির্বাচনের ফল প্রকাশ হতেই রাস্তায় নেমে উদযাপন শুরু করেন এরদোয়ানের দলের কর্মী-সমর্থকরা। আঙ্কারায় প্রেসিডেন্ট প্যালেসের সামনেও বিজয় উৎসব দেখা যায়। সমর্থকদের উদ্দেশে সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, ‘আমাদের সকলের উচিত ঐক্যবদ্ধ ও সংহত হওয়া। সকলকে মন থেকে ধন্যবাদ।’
ভোটের ফলাফল প্রকাশ্যে আসতেই প্রেসিডেন্ট এরদোগানের ইস্তাম্বুলের বাড়ির বাইরে সমর্থকদের ভিড় উপচে পড়ে। তিনি সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘আমি দেশের সকল জনসাধারণের কাছে কৃতজ্ঞ, আমাকে আবারও আগামী পাঁচ বছরের জন্য দেশের সর্বোচ্চ দায়িত্ব দিয়েছেন’।
জানা গিয়েছে, এবারের নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে ৬৯ বছর বয়সী এরদোয়ান ও কেমাল কিলিচদারুলুর মধ্যে। গণনার শেষে দেখা যায়, তাদের মধ্যে প্রাপ্ত ভোটের ব্য়বধান মাত্র ৪ শতাংশ। এরদোয়ান পেয়েছেন ৫২ দশমিক ১২ শতাংশ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিজদারুলু পেয়েছেন ৪৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ ভোট।
দেশের প্রাক্তন আমলা কিলিজদারুলুর নির্বাচনী প্রচারের মূল হাতিয়ার ছিল, বিকল্প উপায়ে দেশের অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠা। মূল্যবৃদ্ধি তুরস্কের সাম্প্রতিক সংকটগুলির মধ্যে অন্যতম। সেই সঙ্গে বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ৫০হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তবে তা জনতার মনে দাগ কাটতে ব্যর্থ হয়েছে, তার প্রমাণ নির্বাচনী ফলাফল। আগামী ৫ বছরের জন্য এরদোগানের হাতেই দেশের ভার তুলে দিলেন তুরস্কের জনতা। তৃতীয়বার এই দায়িত্ব পেয়ে কোন পথে দেশকে চালিত করেন তিনি, সেটাই দেখার।
তৃতীয়বারের জন্য এরদোয়ান প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হতেই বিভিন্ন রাষ্ট্রনেতারা শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাতে শুরু করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, “আগামিদিনেও ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত দেশ হিসাবে দ্বিপাক্ষিক ও বৈশ্বিক প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করার আশা করছি”। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও এরদোয়ানের এই জয় দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীন বিদেশনীতিকে আরও মজবুত করতে সাহায্য করবে বলে জানান।