বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election)। ভোটের দিন এখনও ঘোষণা হয়নি ঠিকই, তবে প্রস্তুতিতে কোনো কমতি রাখছেনা কেউই। ইতিমধ্যেই আটঘাট বেঁধে লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়েছে সমস্ত রাজনৈতিক দল। নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই যেন বাড়ছে হুঁশিয়ারির বহর। সম্প্রতি, ময়নায় জনসভা করে স্থানীয় তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতাদের নাম ধরে ধরে ‘চাকরি চোর’ বলে তোপ দাগেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)।
ভোটমুখী রাজ্যে শুভেন্দুর এহেন অভিযোগে যথেষ্টই অস্বস্তিতে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই এবার পাল্টা এই অভিযোগের জবাব দিতে শাসকদলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের দরজায় তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) শরণাপন্ন ময়নার তৃণমূল নেতারা। জানানো হয়েছে অভিযোগও।
ঠিক কী হয়েছিল? গত শনিবার ময়নার বাকচায় জনসভা করেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই নিশানা করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের। শুধু নিশানাই নয়, সেই বিধানসভার ১১ জন তৃণমূল নেতার নাম তুলে তুলে নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগ তোলেন বিরোধী দলনেতা। পাশাপাশি নন্দীগ্রামের বিধায়কের দাবি, শিক্ষক কেলেঙ্কারিতে ধৃত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও প্রোমোটার অয়ন শীলের সঙ্গেও তাদের যোগ ছিল।
এই মন্তব্যের জবাব দিতেই জেলা নেতৃত্ব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শরণাপন্ন হয়েছে বলে সূত্রের খবর। শুভেন্দুর অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘বিরোধী দলনেতা নিজের রুচির পরিচয় দিয়েছেন। তিনি তো নিজেকে বড় নেতা মনে করেন। তাই কোনটা তার বলা উচিত, আর কোনটা নয়, তাই এখনও পর্যন্ত তিনি ঠিক করে উঠতে পারেনি।’’
সভাপতির আরও সংযোজন, ‘‘বিরোধী দলনেতা আমাদের দলের যে সমস্ত নেতার নাম মঞ্চ থেকে বলেছেন, তা আমরা সবটাই জেনেছি। কিন্তু তার এমন অভিযোগের ভিত্তিতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা ঠিক করবে শীর্ষ নেতৃত্ব। আমি বিষয়টি শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছি। তারা আমাদের যে নির্দেশ দেবেন, সে ভাবেই বিরোধী দলনেতার অভিযোগের জবাব দেওয়া হবে।’’
অন্যদিকে, শুভেন্দুর অভিযোগের জবাব দিতে শাসকদল যে নয়া কৌশল নিয়েছে সেই নিয়ে ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, ‘‘শুভেন্দুবাবু যা বলেছেন, প্রকাশ্য জনসভায় বলেছেন। কোনও রাখঢাক করে তো বলেননি। কারও যদি তার বক্তৃতা নিয়ে কোনও আপত্তি থাকে, তা হলে রাজনৈতিক কৌশল না করে আদালতে যান। ” পাশাপাশি দলনেতাকে পূর্ণ সমর্থন করে তিনি আরও বলেন, “আমরা তো জানি শুভেন্দুবাবু আরও অনেক এমন নাম এবং কেলেঙ্কারির কথা এখনও প্রকাশ করেননি। যা প্রকাশ করলে রাজ্যের মানুষ অবাক হয়ে যাবেন। তিনি সেগুলো যে দিন প্রকাশ করবেন, সে দিন তৃণমূল কী কৌশল নেবে?’’ সব মিলিয়ে ভোট পূর্বে দুর্নীতি নিয়ে তুঙ্গে তরজা।