বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতা হাই কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, সেটাই পালন করা হয়েছে, সোমবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Recruitment Scam) বিশেষ বেঞ্চের শুনানিতে জানাল এসএসসি (SSC)। সিবিআই তাদের হলফনামায় ডেটা স্ক্যানটেক নামের একটি সংস্থার কথা উল্লেখ করেছিল। জানিয়েছিল, নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র তথা ওএমআর স্ক্যান করার সঙ্গে যুক্ত ছিল এই সংস্থা। স্কুল সার্ভিস কমিশন জানায়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হলফনামা থেকেই এই বিষয়টি তারা জানতে পেরেছে। এই নিয়ে আদালত প্রশ্ন তুললে এসএসসি জানায়, আদালতের নির্দেশানুযায়ী তারা সব কাজ করেছে।
গতকাল শুনানির সময় স্কুল সার্ভিস কমিশনের (School Service Commission) আইনজীবী জানায়, উত্তরপত্র স্ক্যানের বরাত এনওয়াইএসএ নামের একটি সংস্থাকে দিয়েছিল তারা। সেই সংস্থার তরফ থেকে ডেটা স্ক্যানটেক সংস্থাটির সাহায্য নেওয়া হতে পারে। তারা আউটসোর্সিং করে থাকতে পারে। তবে তাদের চুক্তি এনওয়াইএসএ সংস্থার সঙ্গে হয়েছিল বলে জানান এসএসসির আইনজীবী। এরপর বিচারপতি বসাক জানতে চান, নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্রের স্ক্যান কি স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরেই হয়েছিল?
জবাবে এসএসসি জানায়, তাদের দফতরে হলেও তারা ডেটা স্ক্যানটেক সংস্থার বিষয়ে অবহিত ছিলেন না। এসএসসির আইনজীবীর কথায়, ‘আদালত আমাদের যে নির্দেশ দিয়েছিল সেটাই আমরা পালন করেছি’। এরপর বিচারপতি জানান, সিবিআই (CBI) স্কুল সার্ভিস কমিশনকে যে নথি দিয়েছে সেই নথির ভিত্তিতে তাঁরা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তাহলে কি তাঁরা সেই নথির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন?
উত্তরে স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী বলেন, ‘আমরা যেহেতু অন্য একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা থেকে এই নথি আদালতের মাধ্যমে পেয়েছি, তাই বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আমাদের কোনও প্রশ্ন নেই’। পাশাপাশি এও জানান, আদালত (Calcutta High Court) যদি তাদের কোনও নির্দেশ দেয় তাহলে তারা সেটি অবশ্যই পালন করবে। এরপর হাই কোর্ট জানায়, তাদের নির্দেশের কী দরকার? এসএসসি কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চাইলে করতেই পারে।
এদিকে পর্ষদের আইনজীবী জানান, এসএসসি সুপারিশপত্র ছাড়া মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে কোনও নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। বিচারপতি তখন কটাক্ষের সুরে বলেন, যখনই এসএসসিকে কোনও ‘অস্বস্তিকর’ প্রশ্ন করা হয়, তখনই তারা চুপ করে যান। প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সরগরম রাজ্য। সরকারি পদে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে চার্জশিট দিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। তবে রাজ্য অনুমোদন না দিলে চার্জ তৈরি না করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ।
অনুমোদন দেওয়ার জন্য এতদিন ধরে কেন বিষয়টিকে ঝুলিয়ে রেখেছে রাজ্য? আগের শুনানিতেই এই প্রশ্ন তুলেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। জাস্টিস বসাকের পর্যবেক্ষণ, হয় অনুমতি প্রদান করা হবে নাহলে প্রদান করা হবে না। বিষয়টি এতদিন ধরে কেন ফেলে রাখা হয়েছে? জবাবে রাজ্যের আইনজীবী দাবি করেন, ভোট-প্রস্তুতির কাজে মুখ্যসচিব ব্যস্ত। সেই কারণে পর্যাপ্ত সময় যেন দেওয়া হয়। যদিও সেই আর্জি খারিজ করে দেয় আদালত।