বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছর থেকে নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) ইস্যুতে তোলপাড় রাজ্য। বঙ্গের শিক্ষক কেলেঙ্কারির অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তলের ঘোষের (Kuntal Ghosh) চিঠির ভিত্তিতে গত শনিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই (CBI)। এই নিয়ে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে টানা সাড়ে ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর কুন্তলের বয়ান রেকর্ড করতে প্রেসিডেন্সি জেলে যেতে চেয়েছিল সিবিআই। আর তাতেই মিললো সম্মতি।
কুন্তল ঘোষকে জেরার বিষয়ে অনুমতি চেয়ে আলিপুর আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। মঙ্গলবার আদালত সেই অনুমতি দিয়েছে জানিয়েছে, নিয়োগ মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তলকে জেলে গিয়েই জেরায় কোনো আপত্তি নেই।
অভিষেককে জেরার পরই তার সাথে কুন্তলের বয়ান মিলিয়ে দেখতে চেয়েছিলেন গোয়েন্দারা। সেই মতো আদালতে আবেদন জানানো হয়। মঙ্গলবার আলিপুর আদালত সেই আবেদনে সম্মতি জানিয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর, তৃণমূল সাংসদ যে বয়ান দিয়েছেন তার সঙ্গে যোগসূত্র খুঁজতেই কুন্তলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল।
গ্রেফতার হওয়ার এত মাস পর ঠিক কী কারণে ওই চিঠি লেখা হয়েছিল? ওই চিঠির পিছনে কারা জড়িত? অন্য কেউ সেই চিঠি লিখেছেন কিনা! এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে সিবিআই। আদালতের অনুমতি পাওয়ায় চলতি সপ্তাহেই তারা প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে গিয়ে কুন্তলকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে খবর সিবিআইসূত্রে।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলের অপসারিত যুব নেতা জেলবন্দি কুন্তল ঘোষের মুখে উঠে আসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। আদালতে চিঠি দিয়ে তিনি জানান ইডি, সিবিআই অভিষেকের নাম নেওয়ার জন্য তাকে চাপ দিচ্ছে। অন্যদিকে, তার কিছুদিন আগেই শহীদ মিনারের মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিষেক বলেন তার নাম নেওয়ার জন্য অভিযুক্তদের চাপ দেওয়া হয়।
এরপরই এই মামলায় অভিষেককে যুক্ত করার নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। ঘটনাচক্রে শীর্ষ আদালতের নির্দেশে সেই মামলার এজলাস বদল হয়ে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে যায়। তবে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশই বহাল রাখেন তিনি। পাশাপাশি অভিষেক ও কুন্তলকে ২৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানা দেওয়ারও নির্দেশ দেন বিচারপতি।
মামলার তদন্ত করতে গত শনিবার অভিষেককে তলব করে CBI। টানা সাড়ে ৯ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ চলে। এরপরই কুন্তলের বয়ানের সাথে অভিষেকের বয়ান মিলিয়ে দেখতে চেয়েছিল সিবিআই। তবে কুন্তলকে প্রেসিডেন্সি জেলের চৌহদ্দির মধ্যেই নিরাপত্তার ঘেরাটোপে জেরা করার অনুমতি চায় সিবিআই। সম্ভবত কুন্তল যাতে ফের অত্যাচারের অভিযোগ করতে না পারেন সে জন্যই এই সিদ্ধান্ত।