বাংলা হান্ট ডেস্ক: গত বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় ইউনিফর্ম সিভিল কোড (Uniform Civil Code) বিল পাস হয়েছে। ২ দিন ধরে সংসদে এই বিল নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। ওই সময়ে প্রত্যেক বিধায়ক তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেন। এই বিলে লিভ-ইন সম্পর্কের (Live-in Relation) ক্ষেত্রেও নতুন নিয়ম জানানো হয়েছে। এমতাবস্থায়, আপনি যদি অন্য কোনো রাজ্যের বাসিন্দা হন এবং উত্তরাখণ্ডে যেতে চান, সেক্ষেত্রে এই নতুন নিয়ম আপনার অবশ্যই জেনে রাখা উচিত। বর্তমান প্রতিবেদনে এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করা হল।
রেজিস্ট্রারের সামনে লিভ-ইন সম্পর্কের বিবরণ উপস্থাপন করা প্রয়োজন: UCC বিল অনুসারে, আপনি উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা হন বা না হন, আপনি যদি লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতে চান, সেক্ষেত্রে ৩৮১ ধারার উপ-ধারা (১)-এর অধীনে রেজিস্ট্রারের কাছে সম্পর্কের বিশদ বিবরণ জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। অপরদিকে, যদি উত্তরাখণ্ডের কোনো ব্যক্তি অন্য রাজ্যে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকেন, সেক্ষেত্রে তাঁকেও রেজিস্ট্রারের কাছে তাঁদের সম্পর্কের বিশদ বিবরণ জমা দিতে হবে
এই অবস্থায় লিভ-ইন রেজিস্ট্রেশন হবে না: বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বিবাহিত বা আবেদনকারী নাবালক হলে সেক্ষেত্রে লিভ-ইন সম্পর্ক রেজিস্টার্ড হবে না। এর পাশাপাশি লিভ-ইন দম্পতির সন্তান অন্যান্য শিশুদের মতো বৈধ সন্তান হিসেবেও বিবেচিত হবে।
हमारी सरकार द्वारा समान नागरिक संहिता में लिव इन संबंधों को भी स्पष्ट रूप से परिभाषित किया गया है।#UCCInUttarakhand pic.twitter.com/LqHyUSKkoo
— Pushkar Singh Dhami (@pushkardhami) February 7, 2024
লিভ-ইন সম্পর্কের রেজিস্ট্রেশনের প্রক্রিয়া:
১. লিভ-ইন সম্পর্কের বিশদ বিবরণ রেজিস্ট্রারের কাছে নির্ধারিত বিন্যাসে উপস্থাপন করতে হবে।
২. রেজিস্ট্রার লিভ-ইন-এর বিশদ বিবরণ পরীক্ষা করবেন এবং নিশ্চিত করবেন যে সম্পর্কটি ধারা ৩৮০-র অধীনে রয়েছে।
৩. রেজিস্ট্রার, উপ-ধারা (২) এর অধীনে, বিবরণের পরীক্ষা করার জন্য অন্য কোনো ব্যক্তিকে কল করতে পারেন এবং তাঁকে অতিরিক্ত তথ্য দিতে বা সম্পর্কের বিষয়ে প্রমাণ উপস্থাপন করতে বলতে পারেন।
৪. তদন্তের পর রেজিস্ট্রার সন্তুষ্ট হলে, তিনি লিভ-ইন সম্পর্ক রেজিস্টার্ড করবেন এবং ৩০ দিনের মধ্যে একটি শংসাপত্র ইস্যু করবেন। অন্যথায়, সম্পর্ক রেজিস্টার্ড করতে অস্বীকার করে তিনি লিখিতভাবে এর কারণ সম্পর্কে জানাবেন।
কিভাবে একটি লিভ-ইন সম্পর্ক শেষ হতে পারে:
১. লিভ-ইন সম্পর্কের উভয় অংশীদার বা তাঁদের মধ্যে যেকোনো একজন চাইলেই ওই সম্পর্ক ভাঙতে পারেন এবং নির্ধারিত বিন্যাসে রেজিস্ট্রারের কাছে ওই সম্পর্কের বিবরণ জমা দিতে হবে। যদি শুধুমাত্র একজন অংশীদার সম্পর্ক শেষ করেন, তাহলে এই ধরণের বিবৃতির একটি অনুলিপি অন্য অংশীদারকেও দিতে হবে।
২. লিভ-ইন সম্পর্কের যেকোনো বিবৃতি রেজিস্ট্রার স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের কাছে রেকর্ডের জন্য প্রেরণ করবেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কেউ ২১ বছরের কম বয়সী হলে তাদের পিতা-মাতা বা অভিভাবকদের জানানো হবে।
৩. রেজিস্ট্রার অংশগ্রহণকারীদের সন্দেহ করলে তিনি স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অবহিত করবেন।
৪. লিভ-ইন সম্পর্কের বিচ্ছেদ সম্পর্কে একজন অংশীদার ধারা ৩৮৪-এর অধীনে যেকোনো বিবৃতি দিলে, রেজিস্ট্রার অন্য অংশীদারকে ওই বিবৃতি সম্পর্কে অবহিত করবেন। তাঁদের মধ্যে যে কোনো এক জনের বয়স ২১ বছরের কম হলে তাঁদের বাবা-মা এবং অভিভাবকদেরও জানানো হবে।
আরও পড়ুন: এবার নতুন রূপে বাজারে এন্ট্রি নিচ্ছে Luna! ফুল চার্জে ছুটবে ১৫০ কিমি, প্রশংসায় পঞ্চমুখ নীতিন গড়করি
লিভ-ইন সম্পর্ক রেজিস্টার্ড না করার শাস্তি: যদি কেউ রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই এক মাসের বেশি সময় ধরে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকেন, সেক্ষেত্রে বিচারক ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁদের শাস্তি দেওয়া হবে। এর অধীনে তাঁদের ৩ মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যেতে পারে। এছাড়াও, লিভ-ইন সম্পর্কের ব্যাপারে কেউ মিথ্যা দাবি করলে তাঁকে ৩ মাসের কারাদণ্ড বা ২৫,০০০ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হতে পারে।
আরও পড়ুন: ভারতের ক্রমবর্ধমান শক্তি ফের হল স্পষ্ট! ৩ বছর পরেই এই পরিসংখ্যানে চিনকে হারাবে আমাদের দেশ
এর পাশাপাশি নোটিশ পাওয়ার পরেও যদি কোনো অংশীদার লিভ-ইন সম্পর্কের বিবরণ জমা না দেন সেক্ষেত্রে তাঁকে ৬ মাসের কারাদণ্ড বা ২৫,০০০ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হতে পারে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, যদি একজন মহিলাকে তাঁর লিভ-ইন পার্টনার ত্যাগ করেন, সেক্ষেত্রে তিনি তাঁর লিভ-ইন পার্টনারের কাছ থেকে ভরণপোষণ দাবি করার অধিকারী হবেন।