বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সন্দেশখালি (Sandeshkhali) আন্দোলনের মুখ ছিলেন তিনি। অর্জুন সিং-র পর বাংলায় বিজেপির প্রার্থী তালিকায় সবথেকে বড় চমক নিঃসন্দেহে বসিরহাট আসনে সন্দেশখালির গৃহবধূ। সন্দেশখালির আন্দোলনের প্রতিবাদী মুখ রেখা পাত্রকে (BJP Candidate Rekha Patra) এবার বসিরহাট (Basirhat) থেকে টিকিট দিয়েছে গেরুয়া শিবির। জানা যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে প্রার্থী হিসেবে গৃহবধূ রেখার নাম চূড়ান্ত করেছেন।
সন্দেশখালির গৃহবধূ প্রার্থী রেখা পাত্র এখন রাজ্য-রাজনীতিতে চর্চায় কেন্দ্রবিন্দু। তবে
রাজনীতির ময়দানে রেখা হেভিওয়েট হলেও বাস্তব জীবনে তার লেশ মাত্র নেই। খড়ের ছাউনি দেওয়া ছোট্ট একটা মাটির বাড়ি। সেখানেই রাত কাটে রেখার। স্বামী সন্দীপ পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক। স্বামী, তিন সন্তান ও শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে রেখার সোনার সংসার।
খুব অল্প বয়সে বিয়ে রেখার। অভাবের তাড়নায় পড়াশোনা শেষ করার ভাগ্য হয়নি। নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান রেখার বিয়ের পরের জীবনও আর্থিক টানাটানিতেই কাটছে তার। স্বামী সামান্য পয়সা রোজগারের টানে এরাজ্য থেকে ওরাজ্যে ঘুরে বেড়ান। সেই স্বল্প উপার্জন দিয়েই সংসার চালান রেখা।
তিন তিনটি মেয়ের মা রেখা। বড় মেয়ে সুষমা ১২ বছর। মেজ মেয়ে করবীর বয়স ৭। ছোট মেয়েটির বয়স তিন। খুবই সাদামাটা থাকেন রেখা। জমকালো পোশাকে তার ‘না’। পরনে সুতির ছাপা শাড়ি, হাতে শাঁখা-পলা। কপালে ছোট্ট সিঁদুরের টিপ। এই তার সাজ।
বাড়ির কাজ করার সময় নেই এখন তার। প্রচার সারতে হবে যে। আর তাই এখন ছোট্ট বাচ্চাদের পাশাপাশি গোটা সংসার, রান্না-বান্না সব কিছুর দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছেন রেখার শাশুড়ি। শাশুড়ি-বউমা বললে ভুল, বলতে হয় মা-মেয়ে। কোনও কোন্দল নেই তাদের মধ্যে। ভোটপ্রচারে ব্যস্ত বউমা যখন নাওয়া-খাওয়া ভুলেছে, তখন তার খেয়াল রাখছেন এই শাশুড়িই।
আরও পড়ুন: বিচারপতির আসন ছেড়ে BJP-তে! এবার সেই অভিজিৎ-কে বিরাট ‘গিফট’ দিল দল, থ সকলে
সর্বক্ষণ হাসিমুখে ভোট প্রার্থী বউমাকে সাহস জোগাচ্ছেন রেখার শাশুড়ি। তিনি বলছেন, “বউমা প্রচার দেখুক। আমি তো বাড়িতে আছিই।” যে ছোট্ট বাড়িতে ছয় জনের রাত কাটে, আজ সেখানে শয়ে শয়ে মানুষের ভীড়। প্রধানমন্ত্রীর ‘শক্তি স্বরূপা’, বসিরহাটের গৃহবধূ প্রার্থী রেখা কী জয় এনে দিতে পারবে পদ্ম শিবিরে? সবটা বলবে সময়। তবে জয়-পরাজয় তো প্রতিযোগিতার অংশ মাত্র। ভোটের ফল যা-ই হোক না কেন তারা যে সর্বদা রেখার পাশেই আছে সেকথাই জানিয়েছে রেখার পরিবার।