বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজনীতির ময়দানে নয়, এবার খেলার ময়দানেও দাদাগিরি শুরু। তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতার ভাইপো রাজা খাঁ-র কাণ্ডে উঠল নিন্দার ঝড়। এখানে জানিয়ে রাখি, তিনি স্থানীয় পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খাঁয়ের ভাইপো। সেই ‘গুণধর’ ভাইপো মেদিনীপুরে ফুটবল খেলা চলাকালীন মাঠের ভিতর ঢুকে সজোরে রেফারিকে (Referee) মারলেন এক লাথি! ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হইতেই শোরগোল শুরু।
এত সাহস দেয় কে? রাজার কীর্তিতে উঠছে প্রশ্ন | Trinamool Congress
জানা গিয়েছে, শুক্রবার ওল্ড প্রদীপ সংঘের মাঠে ছোটদের একটি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে রেফারি ছিলেন খড়্গপুর সাব-ডিভিশন রেফারি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য লক্ষ্মণ মাণ্ডি। পেশায় তিনি স্কুলশিক্ষক। তাকেই লাথি মারার অভিযোগ রাজা খাঁ-র বিরুদ্ধে। কিন্তু কী নিয়ে ঝামেলা?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি গোলকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। সেই গোল বাতিল করানোর অভিযোগ। অভিযোগ, ওই তৃণমূল নেতার ভাইপো রাজা গায়ের জোরে রেফারিকে দিয়ে গোলটি বাতিল করতে বাধ্য করেন। এই ঘটনার ভিডিও সামনে এসেছে।
ভাইপোর জায়গা হল শ্রীঘরে
ভাইরাল ভিডিও-তে দেখা যাচ্ছে, অভিযুক্ত মাঠে ঢুকে গিয়ে রেফারির সঙ্গে আঙুল তুলে কথা বলতে শুরু করেন। কথা বলতে বলতেই তেড়ে যাচ্ছেন রেফারির দিকে। সেই সময় মাঠে উপস্থিত অনেকেই তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করলেও তিনি থামেননি। রেফারির পেটে দুম করে লাথি মারেন রাজা। এই ঘটনার ভিডিও প্রকাশে আসতেই অস্বস্তি শাসক শিবিরে। শুরু রাজনৈতিক তরজা।
সরব শুভেন্দু
বিধানসভার বিরোধী দলনেতা এই ভিডিও-কে হাতিয়ার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন। ভিডিয়ো পোস্ট করে শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) লিখেছেন, ‘‘রেফারিকে কুরুচিকর আক্রমণ তৃণমূলের সংস্কৃতি। তা ভোটের ময়দানে রেফারির ভূমিকায় থাকা জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণই হোক বা স্থানীয় ফুটবল প্রতিযোগিতায় এই পুঁচকেপাঁচকা তৃণমূলী রাজা খান হোক।’’
যেহেতু ওই রেফারি তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত, তাই তফসিলি জাতি ও উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইনে এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতার উপযুক্ত ধারায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার জন্য পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারকে আর্জি জানিয়েছেন শুভেন্দু। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেইকোতোয়ালি থানার পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।
তৃণমূল নেতার ভাইপো, এদিকে খেলার শেষে খড়্গপুর গ্রামীণের বিধায়ক দীনেন রায় এবং তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরার সঙ্গে তাঁকে এক ফ্রেমে ধরাও পড়েন অভিযুক্ত। যদিও এই বিষয়ে রাজনীতির কোনো যোগ রয়েছে বলে মানতে নারাজ তৃণমূল। অভিযুক্তর কাকা, চেয়ারম্যান সৌমেন বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি খেলার মাঠের ধারেকাছে যাইনি। এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই।” ভাইপোর রেফারির কাছে গিয়ে ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।