বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) তারকা ফিনিশার রিঙ্কু সিং (Rinku Singh) এখন আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে (Ireland vs India) আসন্ন তিন ম্যাচের সিরিজের জন্য ভারতীয় দলের (Indian Cricket Team) গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। চলতি বছরের আইপিএল (IPL 2023) শেষ হওয়ার পরই অনেকে তাকে জাতীয় দলে দেখার দাবি তুলেছেন। এই সিরিজটি চলতি আগস্ট মাসের ১৮ থেকে ২৩ তারিখ অবধি অনুষ্ঠিত হবে। নীল জার্সি গায়ে মাঠে নামার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন তিনি।
২০১৮ সাল থেকে নাইট রাইডার্স শিবিরে আছেন। প্রথম চার মরশুমে তিনি ৮০ লাখ টাকার চুক্তিতে দলে ছিলেন। তার ঘরোয়া পারফরম্যান্সের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে, কেকেআর তাকে আইপিএল ২০২২-এর আগে অকশনে তাকে ফের ৫৫ লাখ টাকা দিয়ে তাকে দলে সামিল করেছিল। যদিও রিঙ্কু বর্তমানে আর্থিকভাবে অত্যন্ত সচ্ছল, কিন্তু তার শৈশব এবং কৈশোর জীবন একেবারেই সোনার চামচ মুখে দিয়ে কাটেনি। রিঙ্কু ১৯৯৭ সালে উত্তর প্রদেশের আলিগড়ে খানচাঁদ সিং-এর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যিনি লখনউয়ের একটি এলপিজি গ্যাস এজেন্সি থেকে এলপিজি সিলিন্ডার সরবরাহের কাজ করতেন। ওই শহরেই রিঙ্কু তার বাবা-মা এবং চার ভাইবোনের সাথে গ্যাস এজেন্সির স্টোরেজ কম্পাউন্ডে দুটি ছোটো ঘরে থাকতেন।
আর্থিক দিক দিয়ে অত্যন্ত দুর্বল একটি পরিবারে বেড়ে ওঠায় তার ভাই তাকে ঝাড়ুদার এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজে যুক্ত করে দিয়েছিল। রিঙ্কু যখন ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন, তখন তিনি অনেক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। কিন্তু খেলার প্রতি তার উদ্যম এবং ভালোবাসা কখনও থেমে থাকেনি। একবার দিল্লিতে একটি স্থানীয় টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড় হওয়ার জন্য তিনি একটি মোটরবাইক জিতেছিলেন, যেটি তিনি তার বাবাকে ভারী গ্যাস সিলিন্ডার বিতরণের জন্য দিয়ে দিয়েছিলেন। নিজের প্রতিভার কারনে মাত্র ১৭ বছর বয়সে উত্তরপ্রদেশের রাজ্য দলে সুযোগ পেয়েছিলেন ছোট্ট রিঙ্কু।
২০১৭ সালে পাঞ্জাব কিংস তাকে দলে নিলেও মাঠে নামার সুযোগ দেয়নি। তার পরের মরশুমেই কলকাতা তাকে ৮০ লক্ষ টাকায় কিনে নেয়। এই প্রসঙ্গে রিঙ্কু পরে বলেছিলেন “ভেবেছিলাম ২০ লাখ টাকা পাবো, কিন্তু আমাকে ৮০ লক্ষ টাকায় দলে নেওয়া হলো! মনের মধ্যে প্রথম যে চিন্তা এসেছিল তা হল আমি আমার বড় ভাইয়ের বিয়েতে অবদান রাখতে পারি এবং আমার বোনের বিয়েতেও কিছু সঞ্চয় করতে পারি এবং আমি একটি ভাল বাড়িতেও থাকতে পারবো।” গত মরশুমে নাইটদের একটি ম্যাচে প্রায় একা হাতে জিতিয়ে আবেগপ্রবণ রিঙ্কু বলেন, “আমার বাবা অনেক সংগ্রাম করেছেন, আমি একজন কৃষক পরিবার থেকে এসেছি। প্রত্যেকটি বল, যেগুলো আমি মাঠের বাইরে পাঠিয়েছি, সবকটি সেই লোকদের জন্য উৎসর্গ করলাম, যারা আমার জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন।”
আরও পড়ুন: ধোনিকে নকল করে চুল কাটার চেষ্টা ঈশানের! সোশ্যাল মিডিয়ায় হলেন ট্রোলিংয়ের শিকার
এবার জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “আমি নয়ডায় অনুশীলন করার সময় সুযোগ পাওয়ার খবরটা পেয়েছিলাম। আমি খবরটা পাওয়া মাত্র আমি আনন্দে আমার মা-কে ফোন করি। তার প্রতিনিয়ত ও নিঃস্বার্থ ভরসা ছাড়া আমি আজ এই জায়গায় পৌঁছতে পারতাম না। তার জন্যই আজ আমি ভারতীয় দলে পৌঁছতে পেরেছি।”