বাংলা হান্ট ডেস্ক : ৩১ জুলাই, হরিয়ানার (Haryana) মেওয়াতের নুহতে (Nuh Violence) একদল মুসলিম জনতা শ্রাবণের সোমবারে জলাভিষেক যাত্রায় যোগদানকারী হাজার হাজার হিন্দু ভক্তদের উপর হামলা চালায়। এই হামলাতেই খুন হন বজরং দলের (Bajrang Dal) কর্মী অভিষেক রাজপুত (Abhishek Rajput)। ওই যুবককে হত্যার দায়ে দাঙ্গাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
দায়ের করা অভিযোগপত্রে জানা গেছে যে রাজপুতকে প্রথমে দাঙ্গাকারীরা গুলি করে। এরপর একজন দাঙ্গাকারী তাকে তরবারি দিয়ে আক্রমণ করে। একের পর এক তরবারির কোপে রক্তাক্ত হয়ে পরে তাঁর শরীর। তাতেও মেটেনি দাঙ্গাকারীদের রক্তের পিপাসা। অবশেষে পাথর দিয়ে কার্যত থেঁতলে শেষ করে দেওয়া হয় অভিষেককে।
অভিষেকের খুড়তুতো ভাই মহেশের অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৮, ১৪৯, ৩০৭, ৩২৪, ৩০২ ধারা এবং আদিল, আরসাদ, আজহারউদ্দিন, শাকিল, জুনায়েদ, জাভেদ, রাহুলের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের ২৫ ধারায় অভিযোগ দায়ের। এছাড়া অভিযোগ দায়ের করা হয় আহমেদ, শোয়েব, ল্যাংদা, আলতাফ, আমীন ও ইনামের নামেও। মন্দিরে হামলার বিবরণ দিয়ে কর্তব্যরত ম্যাজিস্ট্রেট মুকুল কাঠুরিয়ার অভিযোগের সঙ্গে দায়ের করা অভিযোগের বেশিরভাগ নামই মিলেছে বলে জানা যাচ্ছে।
মহেশ জানান, ২২ বছর বয়সী অভিষেক একটি বেসরকারি বাসে পানিপাল থেকে ধর্মীয় শোভাযাত্রা জলাভিষেক ব্রজ মণ্ডল যাত্রা মেওয়াত দর্শনে অংশ নিতে নুহতে আসেন। যাত্রায় হরিয়ানার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ৩০০০-৪০০০ ভক্ত এসে হাজির হন। দুপুর দেড়টার দিকে যাত্রা মন্দির থেকে বের হওয়ার কথা থাকলেও প্রশাসন তাদের বাধা দেয়।
বিকেল ৫:৩০-র দিকে ৮০০-৯০০ দাঙ্গাকারী আল্লাহ-হু-আকবার স্লোগান দিয়ে পরিকল্পিতভাবে মন্দিরের যাত্রা শুরু করে। তারা হিন্দু ভক্তদের হত্যা করতে ইট-পাথর ছুড়তে থাকে। তাদের লক্ষ্য করে গুলিও চালায় তারা। মহেশ ও তার ভাই অভিষেক একপাশে দাঁড়িয়ে ছিল। এই অবস্থায় ১০/১৩ জন দাঙ্গাকারী যারা একে অপরকে আদিল, আরসাদ, আজহারউদ্দিন, শাকিল, জুনায়েদ, জাভেদ, রাহুল, আহমেদ, শোয়েব, ল্যাংদা, আলতাফ, আমীন এবং ইনাম ইত্যাদি ডাকছিল, তারাই গুলি চালাতে শুরু করে।
জুনায়েদের পরনে ছিল সাদা কুর্তা ও কালো চেক প্যান্ট। আলতাফের পরনে ছিল লাল রঙের শার্ট ও নিচে নীল প্যান্ট। আমীনের পরনে ছিল সাদা শার্ট ও নীল জিন্স। ইনামের পরনে ছিল হলুদ কুর্তা ও সাদা পায়জামা। মন্দির চত্বর থেকে গুলি চালাচ্ছিল এই চারজন। তাদের সকলের কাছেই অবৈধ অস্ত্র ছিল। যারাই তাদের দিকে আসবে তাদেরই গুলি করতে বলছিল তারা।
হঠাৎ একটি গুলি অভিষেকের গায়ে লাগে। সে রক্তাক্ত অবস্থায় পাশের পুকুরে পড়ে যায়। কালো বর্ণের এক দাঙ্গাকারী, তার হাতে একটি তরবারি ছিল। সে তরবারি দিয়ে আক্রমণ করে অভিষেকের গলা কেটে দেয়। মহেশ উল্লেখ করেন যে অভিষেককে তরবারি দিয়ে আক্রমণ করেছে তাকে দেখলে তিনি চিনতে পারবেন।
আর কোনও উপায় না দেখে অভিষেককে ছেড়ে নিজেকে বাঁচাতে চেয়েছিলের মহেশ। তিনি একটি তাঁবুতে লুকিয়ে পরেন। দাঙ্গাকারীরা অভিষেককেও পাথর দিয়ে আঘাত করতে থাকে। পুলিস মন্দির চত্বরে পৌঁছলে মন্দিরের দিকে গুলি করতে করতে তারা পালিয়ে যায়।