বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ ভারতীয় দল (Indian Cricket Team) অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে (India vs Australia) ফাইনালে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে। ভারতীয় দলের এই পারফরম্যান্স একেবারেই প্রত্যাশিত ছিল না। রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) নেতৃত্বে টুর্নামেন্টের দশটি ম্যাচে দাপিয়ে খেলে জিতেছিল ভারত। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে এমন কি হলো শামিদের (Mohammed Shami)? ভাগ্য ছাড়াও আরও কোনও কারণ আছে কি এই ফাইনাল হারের।
অপ্রত্যাশিত হার:
এই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সেপ্টেম্বর মাসে একদিনের সিরিজ জিতেছিল ভারত। তারপর এই অস্ট্রেলিয়াকেই চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হারিয়ে নিজেদের বিশ্বকাপযাত্রা আরম্ভ করেছিলেন রোহিত শর্মা। ফাইনালে নামার আগে বিশেষজ্ঞদের কেউ একজনও বলেনি যে অস্ট্রেলিয়া ভারতকে হারিয়ে একটি অঘটন ঘটাতে পারে। তাহলে কিভাবে এই ঘটনা ঘটে গেল সেই নিয়ে এখনো অনেকে নিশ্চিত হতে পারছেন না।
টস ফ্যাক্টর:
টসে ভারতীয় দল হারলেও সেটা ম্যাচে খুব বড় প্রভাব ফেলেছে বলে অনেকেই মনে করছেন না। কারণ রোহিত শর্মা জানিয়েছেন তিনি নিজে টসে জিতলে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তই নিতেন প্রথমে। কিন্তু শেষ হয়ে থাকলে ভুল পিছে যে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ের জন্য সহজ হয়ে গিয়েছিল সেটা সকলেই জানেন। কিন্তু যে কোনওরকমের পিচে এইবার ভারতীয় ব্যাটার এবং বোলার প্রত্যেকেই দাপট দেখিয়ে খেলেছেন বাকি ১০ টি ম্যাচ। এদিন কি কোনওভাবেই জেতা সম্ভব ছিল না?
আরও পড়ুন: শুধু বিশ্বকাপ নয়, ফাইনাল শেষে কোহলির থেকে আরও একটি বিশেষ জিনিস নিয়ে নিলেন এই অজি ক্রিকেটার
রোহিতের ভয়:
এর আগে লিগের ম্যাচে ভারতীয় দল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একমাত্র ২২৯ রান স্কোরবোর্ডে তুলতে পেরেছিল প্রথমে ব্যাটিং করে। এই টুর্নামেন্টে ভারতের সবচেয়ে ভালো ফর্মে থাকা ব্যাটার বিরাট কোহলি, সেদিন ০ রানে আউট হয়েছিলেন। কোথাও ভারতীয় বোলিং সেদিন ইংল্যান্ডকে গুটিয়ে দিয়েছিল অনেক কমে। সেদিন সম্ভব হলে আমেদাবাদে ফাইনালে সম্ভব হলো না কেন?
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপের সেরা ১১-য় নেই কোনও পাকিস্তানি! শামি, কোহলি থাকলেও এই ভারতীয়র সাথে অন্যায় ICC-র
রোহিতের ভুল সিদ্ধান্ত:
বড় ম্যাচের চাপ তো আছেই, তাছাড়া রোহিত শর্মা আরেকটি কাজ করেছিলেন যেটা গোটা টুর্নামেন্টে তিনি করেননি ফাইনালে আগে। বুমরার পাশাপাশি তিনি শামিকে এদিন নতুন বল হাতে আক্রমণের দায়িত্ব দেন। গোটা টুর্নামেন্টে এই কাজটা শামি করেননি। ফলে একটি উইকেট পেলেও পুরোপুরি নতুন বলে শরীরের ওপর নিয়ন্ত্রণ না রাখতে পেরে তিনি অনেক দ্রুত রান বিলিয়েছেন। উইকেটে পড়লে রানের গতি থমকে যাওয়ার যে চাপ সেটা অস্ট্রেলিয়া তাই অনুভবই করেনি প্রাথমিকভাবে। শামি যতক্ষণে বলের উপর নিজেকে পূর্ণ কন্ট্রোল ফিরে পেয়েছেন তখন অস্ট্রেলিয়া স্কোর বোর্ডে এমন কিছু রান উঠে গিয়েছে যেখান থেকে তারা ধীরে গতিতে ব্যাটিং করে কিছুক্ষণ নিজেদের সময় দিতে পারে। আর ভারতের অপর ফাস্ট বোলার মহম্মদ সিরাজ মূলত নতুন বল হাতে এই বিপদজনক এটা দেখা গিয়েছে গত দেড় বছর ধরে। বহুদিন বাদে তিনি তৃতীয় পেসার হিসেবে খেললেন ফাইনালে। বলাই বাহুল্য প্রাথমিক সুইং শেষ হয়ে যাওয়ার পর তার পক্ষে রক্ষণাত্মক মানসিকতা নিয়ে ব্যাটিং করতে থাকা অস্ট্রেলীয় ব্যাটারদের ওপর চাপ তৈরি করা সম্ভব হয়নি। শামি ও সিরাজের বোলিংয়ের জায়গা বদলের চেয়ে এই সিদ্ধান্ত তা ভাবে চোখে না পড়লেও একটা বড় প্রভাব ফেলেছে ম্যাচের ফলাফলে। কারণ শামি সিরাজের মতো পুরোপুরি নতুন বলের উপর নির্ভরশীল নন। এই জন্যই গোটা টুর্নামেন্টে তিনি নতুন বল হাতে না পেলেও তার উইকেট পেতে কোনও অসুবিধা হয়নি।