বাংলাহান্ট ডেস্ক : রোহিঙ্গা (Rohingya) বন্দি বিষয়ে কঠোর কলকাতা হাইকোর্ট (Kolkata High court)। আদালতের নির্দেশ ছাড়া দমদম সংশোধনাগারে (Dum Dum Central Jail) বন্দি চার রোহিঙ্গা মহিলাকে কোনও ভাবেই দেশের বাইরে পাঠানো যাবে না। পাশাপাশি তাঁদের বাঁচার অধিকার যাতে কোনওভাবেই খর্ব না হয়, তাও স্পষ্ট করতে হবে কারা কর্তৃপক্ষকেই। এমনই নির্দেশ দিলো কলকাতা হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার এই মামলায় বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, একজন মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যে সমস্ত জিনিসের প্রয়োজন সেগুলো থেকে বঞ্চিত করা যাবে না ওই চার মহিলা রোহিত বন্দিকে।
২০১৬ সালে তখন অগ্নিগর্ভ মায়ানমার। সেই সময় কিছু রোহিঙ্গা মায়ানমার (Myanmar) থেকে পালিয়ে চলে যায় বাংলাদেশে। আর কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ঢুকে পড়ে ভারতের ভূখণ্ডে। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনায় আশ্রয় নেয় তারা। ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি মালদহ সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে ঢুকে পড়ে ফতেমা বেগম, আয়েশা বেগম, হামিদা বেগম, তাসলিমা বিবিরা। ভারতে প্রবেশ করার পরই ধরা পড়ে যায় তারা। আদালতের নির্দেশে বাচ্চাদের তাদের ঠাঁই হয় বিভিন্ন হোমে। মালদহ জেলা আদালত ওই চার রোহিঙ্গা মহিলার সাড়ে তিন বছর জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি ১৫ হাজার টাকা জরিমানাও ধার্য করে।
বর্তমানে তারা দমদম সংশোধনাগারের বন্দী। তাদের দুই সন্তানও তাঁদের সঙ্গেই রয়েছে। সম্প্রতি তারা জানতে পারে ৫ আগস্ট তাদের এদেশ ছাড়া হবে। আবার মায়ানমারে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এরপরই তাদের যাতে আবার ফেরত পাঠিয়ে না দেওয়া হয়, সেই দাবি নিয়ে হাই কোর্টে আপিল করে চার রোহিঙ্গা মহিলা। শুক্রবার সেই মামলার শুনানি হয় আদালতে। মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী আফরিন বেগম রোহিঙ্গা মহিলাদের পরিস্থিতি আদালতের সামনে নিয়ে আসেন।
তাদের আবেদন, তারা ভারতেই থাকতে চায়। আর ফিরতে চায় না মায়ানমারে। তাদের কাছে বৈধ রিফিউজি কার্ডও আছে। তাই আইন অনুসারেই তাদের এদেশে রাখার পক্ষেই মত দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। প্রসঙ্গত, কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় ওই রোহিঙ্গা মহিলাদের দেশ ছাড়া করার কোনও রকম পরিকল্পনা আপাতত নেই। আগামী ১০ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।