বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন (WB Assembly Elections)। ইতিমধ্যেই সেই ভোটকে পাখির চোখ করে ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূল (Trinamool Congress), বিজেপি (BJP)। এই আবহে চমকপ্রদ তথ্য সামনে এসেছে আরএসএস তথা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (RSS) রাজ্য শাখা। সেখানে দেখা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে হু হু করে বেড়েছে সঙ্ঘের শাখা।
বাংলায় শক্তি বাড়াচ্ছে আরএসএস (RSS)?
সম্প্রতি ১১ দিনের বঙ্গ সফরে এসেছিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। রাজ্যের নানান প্রান্তে তাঁর কর্মসূচি ছিল। তখনই আরএসএস প্রধান স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি কী চান। গত ১৬ ফেব্রুয়ারির একটি সভা থেকে তিনি বলেন, ‘সঙ্ঘ কী করতে চায়? এই প্রশ্নের উত্তর যদি এক কথায় দিতে হয়, তাহলে সঙ্ঘ সম্পূর্ণ হিন্দু সমাজকে একত্রিত করতে চায়। কারণ এই দেশের দায়িত্বশীল সমাজ হল হিন্দু সমাজ’।
মোহন ভাগবতের (Mohan Bhagwat) বঙ্গ সফরের পর হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় দু’দিন ব্যাপী বিশেষ সমম্বয় বৈঠকের ডাক দিয়েছিল আরএসএস। সেখানে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, অগ্নিমিত্রা পাল, লকেট চট্টোপাধ্যায় সহ বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ স্তরের প্রায় সকল নেতা নেত্রী। এরপর গত ২১ মার্চ থেকে ২৩ মার্চ অবধি বেঙ্গালুরুতে সমন্বয় বৈঠক হয়।
আরও পড়ুনঃ বৈশাখের আগেই পুড়ছে বাংলা! এর মাঝেই বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল হাওয়া অফিস! কোন কোন জেলা ভিজবে?
বছর ঘুরলেই বাংলায় বিধানসভা ভোট। তার আগে আরএসএসের (RSS) এই তৎপরতা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। বাংলার বুকে বিজেপির জমি আরও পোক্ত করাই সঙ্ঘের লক্ষ্য বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই আবহে আবার আরএসএসের রাজ্য শাখার তরফ থেকে সামনে আনা হয়েছে চমকপ্রদ তথ্য।
আরএসএসের (RSS) সদ্য সমাপ্ত ২ দিনের সমন্বয় বৈঠকে দাবি করা হয়েছে, বিগত এক বছরে বাংলায় সঙ্ঘের শাখা বেড়েছে ৫৮৩টি। বিগত ১৩ বছরে তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে সঙ্ঘের শাখা বৃদ্ধি হয়েছে প্রায় পৌনে ৩০০০। সূত্র উদ্ধৃত করে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, বাংলার বুকে আরএসএস পরিচালিত বিদ্যালয়ের সংখ্যাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে ৩৩৬টি বিদ্যালয় পরিচালনা করছে সঙ্ঘ। যেখানে মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ৮৮,০০০।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছে তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম। এই প্রসঙ্গে পদ্ম নেতা রাহুল সিনহা বলেন, ‘যেভাবে সংখ্যাগুরুকে বঞ্চিত করে একপেশে সংখ্যালঘু তোষণ, এইগুলো মানুষকে তিতিবিরক্ত করেছে। মানুষ সেই কারণের জন্য, এই জাতীয় একপেশে তোষামোদের রাজনীতি বন্ধ করতে চায়’।
আরও পড়ুনঃ TRP তালিকায় ওলটপালট! কথা-শ্যামলিকে সরিয়ে উঠে এল পরশুরাম! পরিণীতা-ফুলকিরা কত নম্বরে?
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘তৃণমূল আসার পর পশ্চিমবঙ্গে ওদের শাখার সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৬ গুণ। এমনভাবে তৃণমূল চলেছে যে ঘরে বসে বিজেপি তার বৃদ্ধির সুযোগ পেয়েছে। আরএসএস তার বৃদ্ধির সুযোগ পেয়েছে। সেই কারণেই দিল্লির বিজেপি নেতারা পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতাদের যতখানি ভরসা করেন, বিজেপির বৃদ্ধির জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তার থেকে বেশি ভরসা করেন’।
যদিও তৃণমূল জমানায় পশ্চিমবঙ্গে আরএসএসের (RSS) সংগঠন বৃদ্ধির বিষয়টি মানতে চায়নি জোড়াফুল শিবির। দলের রাজ্য সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার এই বিষয়ে বলেন, ‘আরএসএস সংগঠন বাড়ার কোনও চিহ্ন কোনও উপনির্বাচনে পেয়েছেন? পাননি। কিন্তু বলছে আরএসএসের সংগঠন বেড়েছে, আমাদের শাখা বেড়েছে অনেক। হ্যাঁ, যে শাখাগুলোতে আগে লোক সকালবেলায় যেত না, এখন যায়, কারণ শাখা হয়ে যাওয়ার পর ভালো খাবারদাবার থাকে। সংগঠন বেড়েছে কিনা জানি না, আরএসএসের টাকা বেড়েছে প্রচুর। বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে’।