বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভারতে দিনদিন বেড়েই চলেছে করোনার সংক্রমণ। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে গোটা ভারতে। আর এই দ্বিতীয় ঢেউয়ে সবথেকে বেশি প্রভাবিত হয়েছে মহারাষ্ট্র। গোটা মহারাষ্ট্রে হুহু করে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। হাসপাতালে পাওয়া যাচ্ছে না বেড আর অক্সিজেন। প্রতিদিনই চিকিৎসার অভাবে প্রয়াত হচ্ছেন বহু মানুষ। যদিও, শুধু মহারাষ্ট্রেই না, গোটা দেশেই এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আর এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে এক ৮৫ বছরের বৃদ্ধ করোনার আক্রান্ত স্বয়ংসেবক নজির গড়লেন।
মহারাষ্ট্রের নাগপুরের বাসিন্দা নারায়ণ দভাদকর নিজের জীবনের পরোয়া না করে, অন্য একজন করোনা আক্রান্ত রোগীর জন্য হাসপাতালের বেড ছেড়ে দেন। শেফালী বৈদ্য নামের এক লেখিকা নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের কর্মী নারায়ণ দভাদকর-এর কাহিনী তুলে ধরেছেন।
শেফালী বৈদ্য লিখেছেন, ‘নারায়ণ দভাদকর করোনায় আক্রান্ত হন, এরপর ওনার মেয়ে চারদিন ধরে ওনাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য এদিক ওদিক দৌড়াতে থাকেন। অবশেষে চারদিন পর ইন্দিরা গান্ধী হাসপাতালে বেড মেলে। সেই মুহূর্তে নারায়ণ দভাদকর-এর শরীরে অক্সিজেন লেভেল একদম কমে গিয়েছিল।”
https://twitter.com/ShefVaidya/status/1386733543611461632
এরপর শেফালী লেখেন, ‘যখন নারায়ণ দভাদকরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তাঁর শরীরে অক্সিজেন লেভেল একদম কমে গিয়েছিল, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার জন সমস্ত ফর্মালিটি পূরণ করার সময় নারায়ণ দভাদকর দেখেন যে, একজন মহিলা আর তাঁর সন্তানেরা হাসপাতালে একটি বেডের জন্য কান্নাকাটি করছে। মহিলা তাঁর ৪০ বছর বয়সী করোনা আক্রান্ত স্বামীকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য কাকুতি মিনতি করতে থাকেন।”
https://twitter.com/ShefVaidya/status/1386733545373061120
শেফালী আরও লেখেন, ‘সেই সময় নারায়ণ দভাদকর নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে মেডিক্যাল টিমকে বলেন, ‘আমার বয়য় ৮৫ হয়ে গিয়েছে, আমি আমার জীবন বেঁচে নিয়েছি। তোমরা আমার জন্য ধার্য করা বেডটি ওই মহিলার স্বামীকে দিয়ে দাও। বাচ্চাগুলোর তাঁর বাবাকে খুব দরকার।” এরপর তিনি তাঁর নাতি আর মেয়েকে ডেকে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানান।”
https://twitter.com/ShefVaidya/status/1386733547294138368
শেফালী আরও লেখেন, ‘কিছুক্ষণ চিন্তা ভাবনা করার পর নারায়ণ দভাদকর-এর মেয়ে তাঁর বাবার সিদ্ধান্ত মেনে নেয়। এরপর নারায়ণ দভাদকর হাসপাতালে বলে আসেন, আমি আমার বেড ওই মহিলার স্বামীকে দিচ্ছি। এরপর তিনি হাসপাতাল থেকে বাড়ি চলে আসেন। তিনদিন পর নারায়ণ দভাদকর করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন।”
https://twitter.com/ShefVaidya/status/1386733549148008449