বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতার আরজিকর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের নির্মম ধর্ষণ-হত্যাকান্ডের পর প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছিল গোটা রাজ্য। জুনিয়র চিকিৎসকদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন বিনোদন জগতের তারকারাও। স্লোগান তুলেছিলেন ‘জাস্টিস ফর আরজিকর’। তিলোত্তমার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেও ফুঁসে উঠেছিলেন বাংলার মানুষ। সুর চড়িয়েছিলেন সেলিব্রেটিরাও। গতকালই বাংলা ইন্ডাস্ট্রির সেইসমস্ত সেলিব্রিটিদের একাংশকে এক হাত নিয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
সাংবাদিক বৈঠক থেকে সেলিব্রিটিদের একাংশকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘আরজিকরের নিন্দা করেছে বলে বাদ একদম নয়। ১০০ শতাংশ নিন্দা করবেন,কেন করবেন না? যাঁরা এই স্লোগান দিয়েছেন অমুকের গালে-গালে জুতো মারো। আবার তালে তালে কখনও বলছেন বাংলাদেশের মতো পালাতে হবে। মিথ্যা বিকৃত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে নাটক করেছেন। তারা কেউই আমাদের দলের আয়োজিত কোন অনুষ্ঠানে থাকবেন না। এতে তৃণমূল কর্মীদের আবেগে এতে আঘাত লেগেছে।’
কুনালের মন্তব্য শুনে ধুয়ে দিলেন রুদ্রনীল (Rudranil Ghosh)
একইসাথে ক্ষোভ উগরে দিয়ে কুণাল এদিন আরও বলেছেন, ‘দুমাস আগে বিপ্লব করেছেন। আর তারপর অ্যাডভান্স নিয়ে তৃণমূলের মঞ্চে নাচ-গান করবেন ওসব এবার হবে না।’ কুনাল ঘোষের ওই মন্তব্য শোনার পর রীতিমতো অবাক হয়েছেন বিজেপি কর্মী রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)। এ প্রসঙ্গে টিভি নাইন বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অবাক হয়ে তিনি জানতে চেয়েছেন, ‘তৃণমূলের কোনো অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা মানে? তৃণমূলের সঙ্গে এর সম্পর্ক কি?’
তারপরেই রুদ্রনীল (Rudranil Ghosh) আরও বলেছেন, ‘এনারা ভুলে যান যে রাজ্য সরকার এবং তৃণমূলের মধ্যে একটা পার্থক্য রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যেমন প্রশাসনিক সভায় গিয়ে নিজেকে তৃণমূল নেত্রী ভেবে আমাদের ট্যাক্সের টাকায় তৈরি সভা থেকে ২০২৬ এর নির্বাচনে যা যা ভুল বোঝানো প্রয়োজন তা বোঝালেন। তাই দল এবং সরকারের মধ্যে পার্থক্যটা গুলিয়ে ফেলাই তৃণমূলের অভ্যাস।’
আরও পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগে বিরাট সিদ্ধান্ত হাইকোর্টের! আরও বাড়ছে জটিলতা
তারপরেই কুণালের নাম নিয়েই রুদ্রনীল (Rudranil Ghosh) এদিন বলেছেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না এখানে কুণাল ঘোষের মাথা ঘামানোর কি দরকার? রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ পুলিশ বিভাগের গাফিলতি এবং বেশ কিছু জটিলতার কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।’ একই সাথে রুদ্রনীল এর দাবি, ‘দুষ্কৃতীরাও তথ্য প্রমাণ লুকাতে পেরেছে। একজন ডাক্তারকে পরিকল্পিতভাবে নৃশংস হত্যা করা হলো। আর যারা প্রতিবাদ করছেন,গান গাইছেন,পথে নামছেন তাঁদের বিরুদ্ধে যখন অন্যায় হয়, বেআইনিভাবে যখন তাঁদের খুনের ধারায় মামলা দেয়, মারধর করে, তখন তাল (‘অমুকের গালে-গালে জুতো মারো তালে-তালে…’ প্রসঙ্গে উক্তি) ছাড়া তাঁদের গালে থাপ্পর মারা উচিত। তাতে কুণাল ঘোষের মাথা ঘামানোর কী রয়েছে বুঝতে পারছি না।’
রুদ্রনীল (Rudranil Ghosh) বলেছেন, ‘উনি তো রাজ্য সরকারের মুখপাত্র নন। কে তিনি এটাই তো বুঝতে পারছি না।’ এখানেই শেষ নয়, রুদ্রনীল এদিন আরও বলেছেন কুণাল ঘোষ গুলিয়ে ফেলেছে রাজ্য সরকারের বিষয়ে কেউ কোনো মন্তব্য করলে সেই বিষয়ে তাঁর কোনো মন্তব্য করার অধিকার নেই’। এরপরেই কুণাল ঘোষকে সরাসরি আক্রমণ শানিয়ে রুদ্রনীল আরও বলেছেন, ‘এখন তিনি কোন পদে আছেন আমি জানি না। তিনি দলে মাঝেমধ্যে ফেরেন, পদ পান সেই পদ চলে গেলে তিনিও চলে যান। কিন্তু রাজ্য সরকারের বিফলতার পক্ষ নিয়ে তাকে গলাবাজি না করলেও হবে।’ শেষে রুদ্রনীল আবারও বলেছেন, ‘তিনি রাজ্য এবং টিএমসির মধ্যে গুলিয়ে ফেলছেন। ওনার সম্বিত ফিরে আসা উচিত।’