বাংলা হান্ট ডেস্ক: রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত (India) সফরের আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাকি। কিন্তু তার আগেই মস্কো থেকে ভারতীয় অর্থনীতির জন্য একটি অত্যন্ত ইতিবাচক খবর সামনে এসেছে। মূলত, রাশিয়া স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, তারা ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আর একতরফা রাখতে চায় না। অর্থাৎ, সোজা কথায়, রাশিয়া ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা এখন ভারত থেকে আমদানি বাড়ানোর জন্যেও দৃঢ় পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর সহজ অর্থ হল রাশিয়া ভারতীয় পণ্য এবং পরিষেবার জন্য তার বাজারের দরজা আরও প্রশস্ত করতে চলেছে।
ভারত সফরে আসছেন ভ্লাদিমির পুতিন:
বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীনতা মোকাবিলার প্রস্তুতি: মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময়ে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ স্বীকার করেছেন যে, বাণিজ্যিক ভারসাম্য বর্তমানে রাশিয়ার পক্ষে ঝুঁকে আছে। কারণ রাশিয়া ভারতে প্রচুর পরিমাণে তেল ও জ্বালানি সম্পদ বিক্রি করে। অন্যদিকে ভারত থেকে ক্রয় কম হয়। এমতাবস্থায়, পেসকভ বলেন, ‘আমরা জানি যে, আমরা ভারত থেকে কেনার চেয়ে অনেক বেশি বিক্রি করি এবং আমাদের ভারতীয় বন্ধুরা এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন।’

এদিকে, এই উদ্বেগ মোকাবিলায় রাশিয়া একটি বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে। রাষ্ট্রপতি পুতিনের সফরের সময়ে একটি বিশেষ ‘ ইম্পোর্টার্স ফোরাম’ অনুষ্ঠিত হবে। যার প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল, সেই উপায়গুলি অন্বেষণ করা, যেগুলির মাধ্যমে রাশিয়া ভারত থেকে আরও পণ্য ও পরিষেবা কিনতে পারবে। তবে, পেসকভ আরও স্পষ্ট করে বলেছেন, যে তেল বাণিজ্যের পরিমাণ সাময়িকভাবে হ্রাস পেতে পারে। তবুও, রাশিয়া ভারতের মূল জ্বালানি অংশীদার থাকবে।
আরও পড়ুন: ৭ গুণ বেড়েছে মুনাফা! মাত্র ১ মাস আগে IPO নিয়ে আসা এই সংস্থার শেয়ারেই এবার রকেটের গতি
ডলারের ওপর নির্ভরতার অবসান, নিজস্ব মুদ্রায় অর্থ প্রদান: উল্লেখ্য যে, বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তার মধ্যে, ভারত এবং রাশিয়া তাদের বাণিজ্য সুরক্ষিত করার জন্য একটি শক্তিশালী উপায় খুঁজে পেয়েছে। পেসকভ ব্যাখ্যা করেছেন যে, দুই দেশের মধ্যে প্রায় সমস্ত বাণিজ্য এখন জাতীয় মুদ্রায় পরিচালিত হয়। ভারত-রাশিয়ার অর্থনৈতিক সম্পর্কে কোনও ‘তৃতীয় দেশ’ যাতে হস্তক্ষেপ করতে না পারে তা নিশ্চিত করার জন্য এই পদক্ষেপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ক্রেমলিনের মতে, এই অর্থপ্রদান পদ্ধতি কেবল বাণিজ্যই সুরক্ষিত করে না বরং উভয় দেশের সার্বভৌমত্বকেও শক্তিশালী করে। অর্থাৎ, এই বাণিজ্য কোনও তৃতীয় দেশের নিষেধাজ্ঞা বা চাপের দ্বারা প্রভাবিত হবে না। যা ভারতীয় রফতানিকারীদের অর্থপ্রদানের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা প্রদান করবে।
আরও পড়ুন: হয়ে যান সতর্ক! ১৫ ডিসেম্বরের আগে অবশ্যই সেরে রাখুন এই গুরুত্বপূর্ণ কাজ, নাহলেই হবে জরিমানা
৪-৫ ডিসেম্বর মোদী-পুতিন বৈঠক: জানিয়ে রাখি যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন ৪ ও ৫ ডিসেম্বর ভারত সফরে আসবেন। এই সফরে তিনি ২৩ তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। এই বৈঠকটি দুই দেশের মধ্যে ‘বিশেষ এবং সুবিধাপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারিত্বকে’ নতুন দিকনির্দেশ দেওয়ার ওপর আলোকপাত করবে। এদিকে, রাশিয়া ভারতের ঐতিহাসিক অর্থনৈতিক বৃদ্ধির প্রশংসা করেছে এবং জানিয়েছ যে, ভারতের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পেরে তারা গর্বিত। এমতবস্থায়, অনুমান করা হচ্ছে যে এই সফর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক বিষয়গুলিতে দুই নেতৃত্বের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্যের দিকে পরিচালিত করবে।












