ভারতকে লাগাতার পরমাণু হুমকি, ‘শত্রু’ পাকিস্তানকে টাইট দিতে রাশিয়া থেকে আসছে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’?

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: সিন্ধু জল চুক্তিকে কেন্দ্র করে ভারতে (India) লাগাতার পরমাণু হামলার হুমকি পাকিস্তানের। এই আশঙ্কার মধ্যেই ভারতীয় বিমানবাহিনীতে বড়সড় এক সংকট দেখা দিয়েছে। ভারতীয় বিমানবাহিনীতে যুদ্ধবিমানের ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ভারতকে (India) এই সংকট থেকে উদ্ধার করতে আরও একবার পরিত্রাতা হিসেবে আসরে নেমেছে রাশিয়া। মস্কো এবার দিল্লিকে পঞ্চম প্রজন্মের ‘SU-57’ যুদ্ধবিমান সরবরাহের দাবী জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি হস্তান্তর থেকে শুরু করে যৌথ উৎপাদনের মতো একাধিক সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে রাশিয়ার তরফে। যার ফলে ভারতের কৌশলগত শক্তি আরও বহুগুণে বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

রাশিয়া থেকে ভারতে (India) আসছে বড় অস্ত্র?

চলতি বছরের ১৯শে সেপ্টেম্বরই চন্ডীগড় ঘাঁটিতে অবসর নেবে মিগ-২১। ৬০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নে তৈরি এই লড়াকু বিমানের অবসরের পর ভারতীয় (India) বিমানবাহিনীতে লড়াকু বিমানের সংখ্যা কমে গিয়ে দাঁড়াবে ২৯-এ। কিন্তু ভারতীয় আকাশযোদ্ধাদের মতে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে অন্তত ৪২ টি স্কোয়াড্রন থাকা উচিত। যার ফলে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কপালে কিছুটা চিন্তার ভাঁজ দেখা দিয়েছিল। উল্লেখ্য সাধারণত ২০টি করে লড়াকু জেট নিয়ে তৈরি হয় একটি স্কোয়াড্রন। এই ঘাটতি পূরণে ভারত (India) সরকার বিদেশ থেকে অন্তত ৪০–৬০টি আধুনিক ফাইটার জেট আনার পরিকল্পনা করছে। এই পরিস্থিতিতেই রাশিয়ার এই ব্রহ্মাস্ত্রের প্রস্তাবে বেশ কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ভারতের। ঘাটতি পূরণে ভারত সরকারের বিদেশ থেকে আধুনিক ফাইটার জেট আনার পরিকল্পনার কথা সামনে আসতেই নানা জল্পনা কল্পনা শুরু হয়। প্রথম থেকেই আধুনিক জেটের তালিকায় দুটি নাম ছিল, একটি আমেরিকার ‘এফ-৩৫ লাইটনিং টু’ এবং অপরটি রাশিয়ার ‘SU-57’। তবে সম্প্রতি ট্রাম্পের সঙ্গে ভারতের (India) চলা শুল্কযুদ্ধের জেরে মার্কিন এই যুদ্ধবিমান নিয়ে এই মুহুর্তে নয়াদিল্লি কোনওরকম আগ্রহ দেখাচ্ছে না। পাশপাশি, ‘এফ-৩৫’ নিয়ে মোদী সরকারের আগ্রহ না দেখানোর নেপথ্যে আরও একটি মূল কারণ হল, ট্রাম্পের পাকিস্তান প্রীতি। ট্রাম্পের সঙ্গে ইসলামাবাদের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠতাও বেড়েছে।

Russia reportedly gave big offer to India

 

দেওয়া হয়েছে দারুণ অফার: অন্যদিকে রাশিয়ার তরফ থেকে বেশ কয়েকটি মেগা অফার দেওয়া হয়েছে ভারতকে (India)। যার মধ্যে মূল আকর্ষণ SU-57 যুদ্ধবিমান। ২০২০ সাল থেকে রুশ বিমানবাহিনীর বহরে রয়েছে এই স্টেলথ ক্যাটেগরির লড়াকু বিমান। যা মাঝ আকাশে ডগফাইট থেকে শুরু করে শত্রুর ঘাঁটি ধ্বংস পর্যন্ত সবক্ষেত্রেই অত্যাধুনিক ক্ষমতা রাখে। রাডারে সহজে ধরা না পড়া এই যুদ্ধবিমান ভারতের (India) হাতে আসা মানেই পাকিস্তানের রাতের ঘুম উড়তে চলেছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। পাশপাশি এই যুদ্ধ বিমান শুধু সরবরাহই নয়, রাশিয়া ভারতকে এই যুদ্ধবিমানের সোর্স কোড দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। যার ফলে সংশ্লিষ্ট জেটে ইচ্ছামতো হাতিয়ার ব্যবহার করতে পারবে বায়ুসেনা। অর্থাৎ এই বিমান থেকে দেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র, বিশেষ করে ব্রহ্মস সুপারসনিক মিসাইল, ছোড়া সম্ভব হবে। একইসঙ্গে ভারতের (India) মাটিতে যৌথ উদ্যোগে এই যুদ্ধবিমান তৈরি করারও অফার দিয়েছে মস্কো। এর ফলে প্রতিরক্ষা শিল্পে ভারতের আত্মনির্ভরতাও আরও মজবুত হবে।

আরও পড়ুন : ঘোষণার পরেই শুরু কাজ, পুজোর আগেই বিতরণ হবে ১২ লক্ষ সবুজ সাথী সাইকেল!

কী বিশেষত্ব এই জেটের: রাশিয়ার আরও একটি মেগা অফার হল বিক্রির স্বাধীনতা। অর্থাৎ ভারত চাইলেই ভবিষ্যতে তৈরি হওয়া SU-57 যুদ্ধবিমান অন্য বন্ধুসুলভ দেশগুলিকেও বিক্রি করতে পারবে। যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের (India) অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে। পাশাপাশি শুধু ফাইটার জেট নয়, মস্কো ভারতের সঙ্গে এস-৫০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তৈরিতেও আগ্রহ দেখাচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। বর্তমানে ভারতীয় বিমানবাহিনীতে মজুত এস-৪০০ ‘সুদর্শন চক্র’-এর পরবর্তী প্রজন্মই হল এস-৫০০। যা প্রায় ৫০০ কিমি দূরত্ব থেকে হাইপারসনিক মিসাইল ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ভারতের (India) কাছে এস-৫০০ এলে আকাশ প্রতিরক্ষার মানচিত্র পাল্টে যাবে।

আরও পড়ুন : এনডিএ-র উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী সিপি রাধাকৃষ্ণন, ছাব্বিশের নির্বাচনের আগে ‘মাস্টারস্ট্রোক’ মোদীর

আগামী সেপ্টেম্বরেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভারত সফরের সম্ভাবনা রয়েছে। সম্প্রতি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও রাশিয়া সফর করে এসেছেন। সেখানে এই প্রস্তাবের চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেক্ষেত্রে পুতিন ভারত সফরে এলেই চুক্তি সেরে ফেলার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের ক্রমাগত হুমকি ও যুদ্ধবিমানের ঘাটতির মধ্যে রাশিয়ার এই মেগা অফার ভারতের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। মস্কোর সহযোগিতায় নতুন যুগের প্রতিরক্ষা শক্তি গড়ে তুলে বিশ্ব দরবারে তাক লাগাতে চলেছে নয়াদিল্লি।