বাংলাহান্ট ডেস্ক: তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটে বাঁচার জন্য একের পর এক পন্থা অবলম্বনের পথে হাঁটছে পাকিস্তান (Pakistan)। রাশিয়ার থেকে সস্তায় অপরিশোধিত তেল কেনার পরিকল্পনা ছিল পাকিস্তানের। কিন্তু বর্তমানে রাশিয়া যা পদক্ষেপ করল তাতে সেই আশায় জল ঢেলে গেল বলেই মনে করছে বিশ্বের কূটনৈতিক মহল। পাকিস্তানকে আপাতত সস্তায় তেল সরবরাহ করছে না রাশিয়া। সম্প্রতি এমনই খবর পাওয়া গিয়েছে। ফলে তাদের দুর্দিন এখনও চলবে।
ভারতের মতো রাশিয়ার থেকে সস্তায় অপরিশোধিত তেল কেনার পরিকল্পনা ছিল পাকিস্তানের। কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে লেনদেনের জন্য কয়েকটি শর্ত দিয়েছিল মস্কো। কিন্তু জানা গিয়েছে, এখনও সেই শর্তগুলি পূরণ করেনি পাকিস্তান। সে জন্য রাশিয়াও পাকিস্তানকে তেল সরবরাহ করছে না। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি খবর মিলেছিল যে পাকিস্তান নাকি ইউক্রেনকে অস্ত্র বিক্রি করছে। এদিকে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ চলছে।
তাই শত্রুপক্ষকে অস্ত্র সরবরাহের দোষে পাকিস্তানের উপর বেজায় চটে গিয়েছে রাশিয়া। এক হাতে রাশিয়ার থেকে তেল নিয়ে অন্য হাতে তাদেরই শত্রুপক্ষকে অস্ত্র বেচার কারবারকে ভালভাবে নেয়নি তারা। কারণ পাকিস্তান থেকে আমদানি করা অস্ত্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে ইউক্রেন। সম্প্রতি পাকিস্তানের এই কাজের একাধিক প্রমাণও পাওয়া গিয়েছিল। ব্রিটেন প আমেরিকার হাত দিয়ে ওই অস্ত্রগুলি ইউক্রেনে পাঠিয়েছিল পাকিস্তান।
পাকিস্তান রাশিয়াকে জানিয়েছিল যে তারা একটি নতুন স্পেশাল পারপাস ভেহিকেল কোম্পানি খুলে অপরিশোধিত তেল আমদানি করবে। পাকিস্তানের বিভিন্ন শোধনাগারে আমদানিকৃত অপরিশোধিত তেল পাঠানোর কথা ছিল। এছাড়াও সরকার পরিচালিত এই কোম্পানির তেল আমদানি ও পরিশোধ সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ও পরিচালনা করার কথা ছিল। কিন্তু সেই প্রকল্পের কোনও কাজই এখনও পর্যন্ত শুরু করেনি পাকিস্তান। এমনকী সংস্থার কোনও রেজিস্ট্রেশনও করেনি। এর জেরে তাদের উপর চটে রয়েছে রাশিয়া।
সূত্রের খবর, আরব দেশ থেকে আমদানিকৃত অপরিশোধিত তেল থেকে বেশি পরিমাণে ডিজেল উৎপাদিত হয়। পাশাপাশি কম পরিমাণ ফার্নেস তেল তৈরি হয় এই তেল থেকে। অন্যদিকে, রাশিয়া থেকে আমদানি করা অপরিশোধিত তেল থেকে বেশি পরিমাণে ফার্নেস তেল এবং কম পরিমাণ ডিজেল উৎপাদিত হয়। কিন্তু পাকিস্তানের প্রয়োজন ডিজেল। রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল থেকে ৫০ শতাংশ ফার্নেস তেল এবং ৩২ শতাংশ হাই স্পিড ডিজেল উৎপাদিত হয়।
এই কারণে রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি করছে না অন্যান্য অনেক দেশই। শুধু তাই নয়, রাশিয়ার থেকে অপরিশোধিত তেল কিনতে আরও ছাড় লাগবে পাকিস্তানের। যেহেতু পাকিস্তানে ডলারের ঘাটতি চলছে, তাই এই মুদ্রায় রাশিয়ান অপরিশোধিত তেলের মূল্য চোকানো কাছে একটি চ্যালেঞ্জ। এর আগে একটি বিদেশী কোম্পানি পাকিস্তানের একটি শোধনাগারে রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল আমদানির প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু পাকিস্তানি ব্যাঙ্কগুলি তা দিতে অস্বীকার করেছিল।