ইচ্ছা শক্তির অনন্য নজির! ৩০ বছর বয়সে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করলেন সখিনা

বাংলাহান্ট ডেস্ক : আজ ছিল এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার (Secondary examination) দ্বিতীয় দিন। শুক্রবার ছিল দ্বিতীয় ভাষার পরীক্ষা। গতকাল মাধ্যমিকের প্রথম ভাষার পরীক্ষার দিন একটি অন্য চিত্র ধরা পরল মুর্শিদাবাদে (Murshidabad)। মুর্শিদাবাদের সখিনা ৩০ বছর বয়সে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে সৃষ্টি করলেন নজির। হরিহরপাড়ার চোঁয়া এলাকায় এক ব্রাহ্মণ পরিবারে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে প্রায় চার বছর ধরে বসবাস করছেন তিনি। জলঙ্গিতে বাপের বাড়ি চোঁয়া গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলার।

জানা গিয়েছে, ছোটবেলা থেকেই সে ছিল মেধাবী ছাত্রী। ভালো ফলাফল করত স্কুলের প্রতিটি পরীক্ষায়। পরিবারের লোকেরা মাত্র তেরো বছর বয়সে তার বিয়ে দিয়ে দেন চোঁয়া এলাকায় এক যুবকের সঙ্গে। বিয়ের পরেও সে চালিয়ে গিয়েছে পড়াশোনা। বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর দেড় বছর পর্যন্ত তিনি পড়াশোনা করেন। এই মহিলা অষ্টম শ্রেণী উত্তীর্ণ হন জলঙ্গি বালিকা বিদ্যালয় থেকে।

এরপর তিনি আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। সংসারের চাপে বাধ্য হয়ে ছেড়ে দেন পড়াশোনা। এরপর পারিবারিক অশান্তির জন্য তার সাথে বিচ্ছেদ হয়ে যায় স্বামীর। স্বামীর সাথে অশান্তির কারণে প্রায় চার বছর আগে তিনি শ্বশুরবাড়ি ছাড়েন। এরপর কাকলি রায়চৌধুরী নামের এক বান্ধবী তাকে আশ্রয় দেন। একটি মুসলিম মেয়েকে বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ায় সামাজিক অশান্তির মধ্যে পড়তে হয় কাকলিকেও।

madhyamik 759

 

মুসলিম মেয়েকে বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ায় গ্রামে সালিশি সভা ডেকে এক ঘরে করে দেওয়া হয় রায়চৌধুরী পরিবার। এতকিছুর পরেও কাকলি হাত ছাড়েননি বান্ধবী। এরপর প্রশাসনের সহায়তায় সখিনার স্থায়ী বসবাসের জায়গা হয়। দু’বছর আগে কাকলির শ্বশুর-শাশুড়ি সখিনাকে ভর্তি করেন চোঁয়া বিবি পাল বিদ্যানিকেতনে। এই বছর সখিনা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন। সখিনা জানিয়েছেন, “খুব খুশি পরীক্ষা দিতে পেরে। মন দিয়ে পড়াশোনা করেছি। ফলাফল কি হয় এখন সেটাই দেখার।”

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর